জুমবাংলা ডেস্ক: রাজধানীর করোনার বিভিন্ন হাসপাতালগুলোতে ঢাকার বাইরের রোগীর চাপ বাড়ছেই। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই তীব্র শ্বাসকষ্টসহ ও নানা উপসর্গ রয়েছে। অধিকাংশ রোগীর অবস্থা জটিল হওয়ায় প্রয়োজন হচ্ছে আইসিইউ, যে কারণে বেড়েছে আইসিইউর চাহিদা।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ঢাকার বাইরে থেকে আসা রোগীদের ৪০ শতাংশ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই মারা যাচ্ছেন।
ঈদুল আজহার পর চাপ বেড়েছে করোনা নমুনা পরীক্ষার। অনেকের নমুনা পরীক্ষার পর ফল পেতে ৭ থেকে ৮ দিন সময় লাগছে।
রাজধানীর বেশ কয়েকটি হাসপাতাল দেখা গেছে এমন চিত্র। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঈদের পর করোনা রোগীর চাপ বেড়েছে। ঢাকার বাইরে অধিকাংশ রোগী জটিল অবস্থায় ঢাকায় আসছেন। এদের চিকিৎসা দিয়েও বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে না।
বেসরকারি চাকরিজীবী সারওয়ার তার ভাই রাসেলের শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়ায় শমরিতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে রাখেন। তবে বেসরকারি হাসপাতালে আইসিইউর খরচ বহন করতে না পেরে ডিএনসিসি ডেডিকেটেড হাসপাতালের আইসিইউতে নিয়ে আসেন।
তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, দিনে এক লাখ টাকার বেশি খরচ হচ্ছিল। চার দিনে সাড়ে চার লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে। এমন খরচ আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের দীর্ঘদিন বহন করা সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়ে সরকারি হাসপাতালে যোগাযোগ করে এখানে নিয়ে আসছি।
ডিএনসিসি ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতাল থেকে জানা গেছে, হাসপাতালে বর্তমানে ৫৩১ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে গতকাল ভর্তি হন ১৩৮ জন। তাদের মধ্যে ৬০ জন রোগীকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। এমন পরিস্থিতি রাজধানীর বেশিরভাগ সরকারি-বেসরকারি হাসপতালগুলোতে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও ঢাকার বাইরে থেকে আসা রোগীর চাপ দেখা গেছে। বাবার তীব্র শ্বাসকষ্টের উপসর্গ থাকায় তাকে নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছেন কলেজ শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান।
তিনি জানিয়েছেন, বাবার শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়ার পর স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করাই। তবে গত চার দিনে অবস্থার উন্নতি না হওয়ার কারণে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসি। চিকিৎসক পরামর্শ দিয়েছেন আইসিইউতে নিতে হবে। তবে এখানে আইসিইউ খালি নেই।
ঢাকা মেডিকেল সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালে করোনা সেবার জন্য ৭০৬ শয্যার মধ্যে বর্তমানে ৮টি শয্যা খালি রয়েছে। এই হাসপাতালে ২৪টি আইসিইউ আছে। বর্তমানে এর একটিও খালি নেই।
ঈদের পরে ঢাকার বাইরের রোগীর চাপ বেড়েছে জানিয়ে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ঢাকার বাইরে থেকে যেসব রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছেন এর ৪০ শতাংশ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মারা যাচ্ছেন।
নাসির উদ্দিন আরও বলেন, গ্রামের হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেনের সাপোর্টটা দিতে পারলে রোগী মৃত্যুর হার কিছুটা হলেও কমে আসবে। ঢাকার বাইরে থেকে রোগী আসলেও এত জটিল অবস্থায় আসতে হবে না। এই সময়টা আমাদের একটু অপেক্ষা করতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, রাজধানীর করোনা সেবার জন্য ১৬টি হাসপাতালে ডেডিকেটেড করেছে সরকার। এর মধ্যে তিন হাসপাতালে কোনো ধরনের আইসিইউ সুবিধা নেই। অর্থাৎ, ১৩টি হাসপাতালে বর্তমানে ৩৯৩টি আইসিইউ রয়েছে। এর মধ্যে ৪৮টি আইসিইউ খালি রয়েছে। এ ছাড়া দেশে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ১ হাজার ৩২৩টি। বর্তমানে ২৩৮টি খালি রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।