জুমবাংলা ডেস্ক: ‘বয়াম’ বা ‘বৈয়ম’-এ দুটি শব্দের অর্থ কম-বেশি অনেকেরই জানা। এর অর্থ কাচ বা চিনামাটির তৈরি ঢাকনাওয়ালা চওড়ামুখ পাত্রবিশেষ (বর্তমানে যা প্লাস্টিক দ্বারাও তৈরি হয়)। চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও কুমিল্লা অঞ্চলে ঢাকনাওয়ালা পাত্রকে এখনো ‘বৈয়ম’ বলা হয়। কিন্তু ‘বৈয়ম পাখি’ কি?
‘তৈ তৈ তৈ তৈ তৈ
আমার বৈয়ম ফাখি খৈ?’
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল এই গানের কলি। এটি মূলত ওয়েব সিরিজ ‘মাই সেলফ অ্যালেন স্বপন’-এর একটি গান। ফেইসবুক, টিকটক কিংবা ইউটিউব- সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমজুড়ে এই গানের মাতম দেখে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। কিন্তু সত্যিই কি ‘বৈয়ম পাখি’ নামে কিছু আছে?
হ্যাঁ, আছে। এটি যুগ যুগ ধরে প্রচলিত পাখি পালন বা পাখিকে আকৃষ্ট করার বেশ কার্যকর পদ্ধতি। ইংরেজি নাম Bottle Birds. ‘বোতল’ বা ‘বোটল’ শব্দের সরল বাংলা ‘বয়াম’ বা ‘বৈয়ম’। ‘বয়াম পাখি’ কথার শাব্দিক অর্থ বয়ামের পাখি। কিন্তু ‘বয়াম পাখি’র প্রায়োগিক অর্থ: পাখিবিশেষ, ছিদ্রযুক্ত কাচ/ প্লাস্টিকের বোতল/ বয়ামে পালিত ছোটো পাখি, বয়ামের মাধ্যমে পরিবেশিত খাদ্য খাওয়া পাখি, মনপাখি, প্রিয়জন।
বিখ্যাত ঐতিহাসিক পি অ্যালেন স্মিথ বলেছেন, পাখির বোতল নামক মৃৎশিল্পের একটি অদ্ভুত টুকরা ইতিহাসের সঙ্গে বেশ ঐতিহাসিকভাবে সম্পর্কিত। তার মতে, প্রত্নতাত্ত্বিকরা ১৮ শতকের বিভিন্ন শহর খননের সময় আমেরিকার কয়েকটি শহরে বয়াম পাখির ঘর আবিষ্কার করেন।
পর্তুগীজরা এ দেশে আসার পর ‘বয়াম পাখি’ কথাটি চালু হয়, ভার্চুয়াল মাধ্যম ঘেঁটে এমনটাই জানা গেছে। তাদের অনেকে এ দেশে আসার সময় ছিদ্রবিশিষ্ট বয়ামে ভরে লালন-পালন বা বিক্রির উদ্দেশ্যে ছোট পাখি নিয়ে আসতেন। অনেকে আবার বিশেষ কৌশলে বয়ামে খাবার রেখে পাখিদের খাওয়াতেন। এই পাখিকে বলা হতো বয়াম পাখি।
‘বয়াম পাখি’ কথাটি আলঙ্কারিক হিসেবে কাব্যে ব্যবহৃত হয়। তখন ‘বয়াম’ শব্দের অর্থ হলো অন্তর বা হৃদয় আর ‘পাখি’ অর্থ ভালোবাসার মানুষ। সে অর্থে পুরো বিষয়টি দাঁড়ায়— মনের মানুষ, প্রেমিকা, প্রিয়জন, প্রিয়সখা ইত্যাদি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।