
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা এখন আর কেবল সম্ভাবনার গল্প নয়—তা রূপ নিচ্ছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিতে। বিশ্বখ্যাত গবেষণা সাময়িকী নেচার-এর সর্বশেষ নেচার ইনডেক্স ২০২৪-২৫ এ বাংলাদেশের অবস্থান প্রমাণ করছে, বৈশ্বিক গবেষণা মানচিত্রে দেশটি ক্রমেই দৃশ্যমান হয়ে উঠছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক গবেষণায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লক্ষ করা যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের গবেষণাপত্র বিশ্বসেরা বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশিত হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় নেচার সাময়িকীর সর্বশেষ নেচার ইনডেক্স ২০২৪-২৫ অনুযায়ী গবেষণায় বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে ৬১তম অবস্থানে রয়েছে।
নেচার ইনডেক্স ২০২৫-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ১ অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রকাশিত ১৪৫টি ন্যাচারাল সায়েন্স ও হেলথ সায়েন্স জার্নালের গবেষণাপত্র বিশ্লেষণ করে এই সূচক তৈরি করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশকে বিশ্বে ৬১তম এবং এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ১৩তম দেশ হিসেবে স্থান দেওয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই অর্জন বাংলাদেশের গবেষণা অবকাঠামো, তরুণ বিজ্ঞানীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রতিফলন। নেচার ইনডেক্সে বাংলাদেশের অবস্থান ভবিষ্যতে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় আরও বিনিয়োগ ও নীতিগত সহায়তার প্রয়োজনীয়তার দিকেও ইঙ্গিত দিচ্ছে।
নেচারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বায়োলজিক্যাল সায়েন্সে বাংলাদেশের গবেষকদের অবস্থান বিশ্বে ১৭৯টি দেশের মধ্যে ৭১তম এবং এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ৩১টি দেশের মধ্যে ১৪তম। রসায়নে বাংলাদেশ বিশ্বে ৬৩তম এবং এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ১৩তম অবস্থানে রয়েছে।
পরিবেশ ও ভূবিজ্ঞানে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে ৭০তম এবং এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ১৫তম। হেলথ সায়েন্সে বাংলাদেশ বিশ্বে ৪৬তম এবং এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ১১তম অবস্থানে রয়েছে। ফিজিক্যাল সায়েন্সে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে ৭২তম এবং এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ১৫তম।
তালিকা থেকে আরও জানা যায়, বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন। এর মধ্যে ৪৫ দশমিক ৩ শতাংশ গবেষণা যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীদের সঙ্গে এবং ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ গবেষণা যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীদের সঙ্গে যৌথভাবে করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, আইসিডিডিআরবি সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীদের মাধ্যমে ৩২টি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের মাধ্যমে ৬টি এবং সিএইচআরএফে যুক্ত বিজ্ঞানীদের মাধ্যমে ২টি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে।
সব মিলিয়ে ১৯১টি দেশের তালিকায় শীর্ষ তিন অবস্থানে রয়েছে চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি। এ তালিকায় ভারতের অবস্থান ৮ম, পাকিস্তানের অবস্থান ৪৪তম এবং বাংলাদেশের অবস্থান ৬১তম।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



