জুমবাংলা ডেস্ক: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা সদরের প্রাণকেন্দ্র তিনকোণা মোড়ে (জিরো পয়েন্টে) সব সময় দীর্ঘ যানজটে অতিষ্ঠ পথচারীসহ সাধারণ মানুষ। কোনো ভাবেই যানজট থেকে মুক্তি পাচ্ছেন ফুলবাড়ীবাসী। সিএনজি-অটোবাইকে ওঠা-নামার জন্য নির্দিষ্ট কোনো স্ট্যান্ড না থাকায় তিনকোণা মোড় থেকে বালারহাট-লালমনিরহাট, গংগাহাট-নাগেশ্বরী ও খরিবাড়ী-বড়ভিটা যাওয়ার ব্যস্ততম সড়কেই যত্রতত্র ভাবে গাড়িগুলো রাখা হচ্ছে।
চালকরা যত্রতত্র ভাবে গাড়ী পার্কিং করায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন পথচারীসহ সাধারণ মানুষ। জরুরী প্রয়োজনে উপজেলার ছয় ইউনিয়ন থেকে হাজার হাজার মানুষ ছাড়াও বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন কাজে উপজেলা সদরে এলে শহর জুড়ে যানজটের কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। আবার কখনও কখনও ঘটছে দুর্ঘটনা। ফলে চরম ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছেন সাধারণ পথচারীরা।
উপজেলা শহরের তিনকোণা মোড় (জিরোপয়েন্ট) থেকে কলেজ মোড় হয়ে সোনালী ব্যাংক, অপরদিকে উপজেলা গেট এবং খাদ্য গুদাম পর্যন্ত যাতায়াতের প্রধান সড়কের দুই পাশে রাখা হয়েছে শত শত অটোরিকশা, সিএনজি ,অটোবাইকসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। তাই প্রতিদিনই এই ব্যস্ততম সড়কে সারিবদ্ধ ভাবে অটো-সিএনজি রাখার কারণে ফুলবাড়ীর প্রধান প্রধান শহরে যানজট এখন নিত্যদিনের সঙ্গী।
এই তীব্র যানজট থেকে মুক্ত করতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন সাধারণ পথচারীসহ সচেতন নাগরিকরা।
তিনকোণা মোড় সংলগ্ন জে এম পেপার হাউজের মালিক ও সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শহরের প্রাণকেন্দ্রে সড়কের দুই ধারে সারিবদ্ধ ভাবে অটো-সিএনজি রাখার কারণে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। অনেক সময় চালকরা সড়কে যাত্রী ওঠা-নামা ও সড়কেই ছোট-বড় ট্রাক থেকে ঘন্টার পর ঘন্টা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র উঠা-নামার কারণে তীব্র যানজট লেগেই থাকে। এই যানজটে ফুলবাড়ীবাসীর ভোগান্তি দীর্ঘ হচ্ছে।
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষজন যানজটের কারণে স্বাধীন ভাবে সড়কে যাতায়াত করতে পারছে না। এমনকি জরুরী প্রয়োজনে যখন রোগী বহনকারী এ্যাম্বুলেন্স অথবা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি কোথাও যায়। তখন তিনকোণা মোড়ের তীব্র যানজটের কারণে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়।
তিনি আরও বলেন, কি বলি যারা অটো অথবা সিএনজি চালান তারা তো গরীব মানুষ এবং অটো-সিএনজি চালিয়ে সংসার চালান। তাদের কথা চিন্তা করে এবং ফুলবাড়ী শহরের যানজট মুক্ত করতে হলে অবশ্যই তিনকোণা মোড় থেকে প্রধান তিন সড়কের আশপাশে নিদিষ্ট স্ট্যান্ড করা দরকার।
একই কথা বলেন তিনকোণা মোড়ের ঔষধ ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান ও ব্যবসায়ী রাসেল মিয়া।
মূল সড়কের পাশের ব্যবসায়ী মাসুদ পারভেজ ও এরশাদুল হকসহ অনেকেই বলেন, সড়কের দুই পাশে অটোবাইক ও সিএনজি রাখার কারণে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ক্রেতারা আসতে না পাড়ায় দোকানের বিক্রি কমেছে।
সামনে ঈদ তাই অন্তত ঈদ মার্কেটে ফুলবাড়ী শহর যানজট নিরসনের জন্য প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন তারা।
পথচারী পরিমল চন্দ্র রায়, নুরনবী সরকার ও বিপুল মিয়া বেলাল বলেন, তিনকোণা মোড়ে সব সময় দীর্ঘ যানজট লেগেই থাকে। সাধারণ মানুষের চলাচল করাও বড় ঝুঁকি। তারপরও ঝুঁকি নিয়েই চলতে হয়। আমরা একটা সুন্দর যানজট মুক্ত ফুলবাড়ী শহর চাই।
সড়কে ঘন্টার পর ঘন্টা এভাবে অটোবাইক রাখার ব্যাপারে কয়েকজন অটোচালককে প্রশ্ন করলে তারা উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান।
ফুলবাড়ী প্রেস ক্লাবের সভাপতি এমদাদুল হক মিলন বলেন, দিন দিন যানজট তীব্র হচ্ছে। যানজটের বিষয়ে সকলেই অবগত। তারপরও তীব্র যানজটে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তি নিয়েই চলছে। দ্রুত যানজট নিরসনে আবারও উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের কাছে দাবি জানাই।
ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রাণকৃষ্ণ দেবনাথ বলেন, যানজটের প্রধান সমস্যা হচ্ছে একদিকে অটোবাইক অন্য দিকে মূল সড়কের পাশে দোকানদাররা সড়কেই মালপত্র রাখছেন। ফলে উপজেলা সদরে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজট নিরসন করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয় ভাবে যানজট মুক্ত করতে ইতোমধ্যেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেহেনুমা তারান্নুম বলেন, আমি নতুন এসেছি। তারপরও উপজেলা প্রশাসন গুরুত্ব দিয়ে যানজট নিরসনে ভূমিকা রাখবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।