ব্রাজিলের পণ্যের ওপর ১ আগস্ট থেকে ৫০ শতাংশ শুল্ক বসানোর হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভাকে পাঠানো এক চিঠিতে তিনি এ কথা বলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করা এ চিঠিতে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ব্রাজিলের ডানপন্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর বিরুদ্ধে যে বিচার চলছে, তা “ডাইনি শিকার” এবং তা “তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ হওয়া উচিত!”
ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ বলসোনারো ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আর সে মামলাতেই তিনি এখন বিচারের মুখোমুখি।
ট্রাম্পের হুমকির জবাবে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা এক্সে বলেন, “ব্রাজিল একটি স্বাধীন দেশ, যার নিজস্ব প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণ আমরা মেনে নেব না।”
তিনি আরও জানান, “যুক্তরাষ্ট্র যদি একতরফাভাবে শুল্ক বাড়ায়, তাহলে ব্রাজিলও ‘অর্থনৈতিক পারস্পরিকতার নীতি’ অনুযায়ী পাল্টা ব্যবস্থা নেবে।”
গত কয়েক মাসে ট্রাম্পের হুমকির জবাবে কোনো দেশ এভাবে পাল্টা জবাব দেয়নি, এটাই প্রথম।
এই সপ্তাহে ট্রাম্প ২১টি দেশকে এ ধরনের চিঠি পাঠালেও, ব্রাজিলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য পরিস্থিতি একটু ভিন্ন। গত বছর যুক্তরাষ্ট্র ব্রাজিলে ৬.৮ বিলিয়ন ডলার বেশি রপ্তানি করেছে, আমদানির তুলনায়। অর্থাৎ, ব্রাজিল যদি আমেরিকান পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক বসায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান, জ্বালানি, যন্ত্রপাতি ও ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
এর আগে এপ্রিলে ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন, বেশিরভাগ দেশের ওপর অন্তত ১০ শতাংশ শুল্ক বসানো হবে, যেটি এখন পর্যন্ত কার্যকর আছে। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, ৯০ দিনের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে—এখন তা বাড়িয়ে ১ আগস্ট পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে।
এর আগেও ট্রাম্প অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ নীতির ওপর প্রভাব ফেলতে শুল্কের হুমকি দিয়েছেন।
চলতি বছর তিনি কলম্বিয়ার ওপরও এমন চাপ সৃষ্টি করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ফেরত পাঠানো অভিবাসীদের গ্রহণ না করলে কলম্বিয়ার রপ্তানিতে ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসানো হবে। পরে কলম্বিয়া ওই অভিবাসীদের গ্রহণ করায় শুল্কের মুখে পড়েনি।
মেক্সিকো, কানাডা ও চীনের পণ্যের ওপরও ট্রাম্প অতীতে শুল্ক বসিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, এসব দেশ যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসন ও ফেন্টানিল প্রবাহ বাড়াতে সাহায্য করছে।
তবে এবারও ট্রাম্প তার চিঠিতে লিখেছেন, “যদি ব্রাজিল বা সেখানকার কোম্পানিগুলো যুক্তরাষ্ট্রে এসে পণ্য তৈরি করে, তাহলে কোনো শুল্ক বসবে না।”
এই একই প্রস্তাব তিনি অন্যান্য দেশের সরকারপ্রধানদেরও দিয়েছেন।
এদিকে, ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো, যিনি ‘ট্রপিক্যাল ট্রাম্প’ নামে পরিচিত, বর্তমানে ২০২২ সালের নির্বাচন উল্টে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে বিচারাধীন। অভিযোগ উঠেছে, তিনি ও তার ঘনিষ্ঠরা নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট লুলাকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন। তবে বোলসোনারো এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।