স্পোর্টস ডেস্ক: গত মৌসুমে ইউরোপীয়ান ফুটবলে ব্রাজিলিয়ান তরুণ খেলোয়াড়দের পারফরমেন্স নিয়ে দারুণ সন্তুষ্ট জাতীয় দলের কোচ তিতে। আসন্ন কাতার বিশ্বকাপে এই তরুনরাই ব্রাজিলকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আত্মবিশ্বাসী তিতে।
ব্রাজিলের নতুন প্রজন্ম যারা এই মুহূর্তে ইউরোপীয়ান ক্লাব ফুটবলে নিজেদের প্রতিনিয়ত প্রমান করে চলেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন রিয়াল মাদ্রিদের দুই তরুন তুর্কি ভিনিসিয়াস জুনিয়র ও রডরিগো, বার্সেলোনা নতুন চুক্তিভূক্ত রাফিনহা, টটেনহ্যাম হটস্পারের নতুন স্ট্রাইকার রিচারলিসন, নিউক্যাসেল ইউনাইটেডের মধ্যমাঠের অন্যতম নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড় ব্রুনো গুইমারায়েস, আয়াক্সের দুর্দান্ত উইঙ্গার এন্টনি ও এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের দূরন্ত ফরোয়ার্ড ম্যাথেয়াস কুনহা।
এই খেলোয়াড়দের প্রত্যেকেরই বয়স ২৫ কিংবা তার নীচে। ইতোমধ্যেই বিশ্বের এলিট খেলোয়াড়দের তালিকায় তারা অন্তর্ভূক্ত হয়ে গেছেন। আর এ কারনেই তিতে বিশ্বাস করেন বিশ্বকাপে ৩০ বছর বয়সী পিএসজির সুপারস্টার নেইমারের উপর থেকে চাপ অনেকটাই কমে যাবে। পুরো ক্যারিয়ার জুড়ে নেইমার যেভাবে ব্রাজিলকে টেনে নিয়ে যাবার চাপের মধ্যে ছিলেন তার থেকে অনেকটাই রেহাই পেতে পারেন এবারের বিশ্বকাপে।
এক সাক্ষাতকারে এ সম্পর্কে তিতে বলেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি জাতীয় দলে এই তরুনদের আগমন মাঠ ও মাঠের বাইরে নেইমারের জন্য ভালই হবে। একদিন নেইমার আমার দিকে তাকিয়ে হেসে বলেছিল, কোচ এই ছোট ছোট খেলোয়াড়রা জাতীয় দলে আসছে, এরা তো সবাই এখনো বাচ্চাদের মত। মাঠে তাদের নিয়ে সবাইকে বাড়তি টেনশনে থাকতে হবে। আসলে নেইমার অনেকটা স্বস্তির থেকেই এসব কথা বলেছিল। তরুনদের মধ্যে যদি সর্বোচ্চ পর্যায়ের প্রতিভা ও সামর্থ্য থাকে তবে সেটা যেকোন দলেরই কাজে চাপ অনেকটা সহজ করে দেয়। এখন প্রতিপক্ষ দলগুলোকে আমাদের সামলানোর কৌশলে ব্যস্ত থাকতে হবে।’
তিতে জানিয়েছে তিনি আশা করছেন নেইমারকে আরো বেশী কেন্দ্রীয় ভূমিকায় তিনি ব্যবহার করতে পারবেন। এর ফলে ব্রাজিলের তরুনরাও পুরো পরিস্থিতির সাথে সামলে উঠার পথ খুঁজে পাবে।
কাতার বিশ্বকাপে চূড়ান্ত দলে ২৬ জন খেলোয়াড়ের সাথে আরো পাঁচজন বদলী হিসেবে স্কোয়াডে থাকার অনুমতি পাবে। তিতে জানিয়েছেন চূড়ান্ত দলে তিনি নতুনদের দিকেই বেশী প্রাধান্য দিতে চান। কারন তারা প্রতিপক্ষ দলগুলোর জন্য অপরিচিত হবে। এ সম্পর্কে তিতে বলেন, ‘আরো বেশী সৃষ্টিশীল ভূমিকায় নেইমার নিজেকে উন্নত করেছে। স্বাভাবিক ভাবেই বয়সের সাথে তার অভিজ্ঞতাও এখন অনেক বেশী। এখানকার ফুটবল বেশ দ্রুতগতির এবং নিরলস পরিশ্রমের একটি খেলা। এমন অনেক প্রতিদ্বন্দ্বীর মোকাবেলা আমাদের করতে হবে যারা রক্ষনভাগে পাঁচজন নিয়ে মাঠে নামবে। এই মুহূর্তে আমরা যেভাবে পরিকল্পনা সাজিয়েছি তাতে নেইমারের সাথে অন্যদের ভূমিকাও দলে সমান গুরুত্বপূর্ণ।’
২০১৮ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে বেলজিয়ামের কাছে ২-১ গোলে পরাজিত হয়ে বিদায় নিতে হয়েছিল ব্রাজিলকে। ১৯৮২ ও ১৯৮৬ সালে টেলে সান্টানার পর প্রথম কোচ হিসেবে পরপর দুটি বিশ্বকাপে দায়িত্ব পালন করতে যাচ্ছেন তিতে। চার বছর আগে রাশিয়া বিশ্বকাপের তুলনায় এখন নিজেকে আরো বেশী পরিনত হিসেবেই দাবী জানিয়েছেন ৬১ বছর বয়সী তিতে। ব্রাজিলিয়ান বস বলেন, ‘পারফরমেন্সই সব সাফল্যের চাবিকাঠি। এটাই মূল, এর কোন বিকল্প নেই। কিন্তু বিশ্বকাপের সবচেয়ে কঠিন দিক হচ্ছে মানসিক শক্তি। প্রতিটি খেলোয়াড় ও কোচের জন্য বিশ্বকাপের মানসিক চাহিদাটা হচ্ছে অসাধারণ। রাশিয়ায়ও একই ধরনের মানসিক চাপ ছিল। কিন্তু ব্রাজিলিয়ান জার্সি গায়ে এবার যে সমস্ত তরুন মাঠে নামতে যাচ্ছে তারা নিজেদের দায়িত্বটা বেশ ভালই বুঝতে পারছে। প্রতিটি অভিজ্ঞতাই মূল্যবান। ব্রাজিলের উত্তরাধিকার বহন করার সক্ষমতা প্রত্যেকের মধ্যে রয়েছে। এই খেলোয়াড়রা ব্রাজিলের অনুর্ধ্ব-২০ দলের সাথে দীর্ঘদিন কাজ করার সুযোগ পেয়েছে। টোকিওতে তারা অলিম্পিকের স্বর্নপদক জয় করেছে। তাদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক মানসিকতা আছে। বিশ্বকাপের মঞ্চে ব্রাজিলের জার্সি গায়ে নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা উপহার দেবার দায়িত্বের ভারটা তারা ভালই বুঝতে পারছে। এখানে চাপ থাকবে, কিন্তু এ ব্যপারে তারা পুরোপুরি প্রস্তুত।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।