আরিফ খান, রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী): পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার গহিনখালী ও পূর্ব বাহেরচর এলাকার মাঝ দিয়ে বয়ে চলা গহিনখালী খালের ওপর নির্মিত আয়রন ব্রিজ ভেঙে পড়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা এই ব্রিজটি বুধবার (২৩ আগস্ট) সকালে ভেঙে খালে পড়ে যায়। ফলে মানুষ ও যানবাহন পারাপার বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি এই খাল দিয়ে মাছ ধরার ট্রলার ও নৌযান চলাচলও বন্ধ হয়ে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে ছোটবাইশদিয়া ও রাঙ্গাবালী ইউনিয়নের পূর্ব অংশের কয়েক গ্রামের মানুষ। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হবে স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের।
বুধবার দুপুরে সরজমিনে দেখা গেছে, ব্রিজের মাঝ বরাবর অংশটি ভেঙে খালে পড়ে গেছে। তাই মাছ ধরার ট্রলারগুলো ওই ব্রিজের নিচ দিয়ে চলাচল করতে পারছে না।
নৌযান চালকরা জানান, ভাঙা অংশ অপসারণ না করলে এই খালে তাদের নৌযান চলাচল করা সম্ভব নয়। তাই ভাঙা অংশ দ্রুত অপসারণ করার দাবিও জানান তারা।
গহিনখালী ব্রিজ সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা পলাশ হাওলাদার বলেন, ‘এই ব্রিজ দিয়ে রাঙ্গাবালী ও ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের পূর্ব অংশের অনেক লোকজন চলাচল করতো। কিন্তু ব্রিজটি এখন ভেঙে যাওয়ায় প্রায় ৭-৮ কিলোমিটার ঘুরে উপজেলা সদর, গহিনখালী লঞ্চঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় যেতে হবে। এতে মালামাল পরিবহণে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হবে।’
গহিনখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল বারেক বলেন, ‘ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ায় কয়েকজন শিশু গতকাল খাল সাঁতরও স্কুলে এসেছে। পরে আমরা নৌকা দিয়ে শিশুদের পারাপারের ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু এটির একটি স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। এখানে কোমলমতি শিশুদের পাশাপাশি লোকজন পারাপারের জন্য ব্রিজ নির্মাণ একান্ত প্রয়োজন।’
ছোটবাইশদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান এবিএম আব্দুল মান্নান বলেন, ‘দুই পাড়ের মানুষের সহজ যোগাযোগের জন্য আমরা ব্রিজটি নির্মাণ করেছিলাম। এখন ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ায় দু’পাড়ের মানুষেরই ভোগান্তি বাড়বে। তাই যত দ্রুত সম্ভব ব্রিজটি নতুন করে নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’
জানা গেছে, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জানা যায়, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) থেকে ৩ লক্ষ টাকা এবং একই ইউনিয়নের মোল্লার বাজার এলাকার একটি ভাঙা ব্রিজের মালামাল ব্যবহার করে গহিনখালী খালের ওপর ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই একটি ট্রলারের ধাক্কায় ব্রিজটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। এরপরেও দীর্ঘদিন ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকলেও লোকজন পারাপার হতো।
এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ব্রিজটি অনেক আগ থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। এখন ভেঙে যাওয়ার কথা শুনেছি। ব্রিজটি দ্রুত নির্মাণ করার চেষ্টা করবো।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।