নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর:বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) দেশের কৃষি খাতে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ‘স্থানভিত্তিক ধানের জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং বিদ্যমান গবেষণাগার উন্নয়ন (এলএসটিডি)’ শীর্ষক একটি ব্যাপক গবেষণা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। গাজীপুরের ব্রি সদর দপ্তরে শনিবার (২১ জুন) আয়োজিত এক কর্মশালায় প্রকল্পটির চলমান অগ্রগতি তুলে ধরা হয়।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন ব্রি’র মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান। প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা অনুবিভাগ) মো. মাহবুবুল হক পাটওয়ারী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক ড. মো. মোফাজ্জল হোসেন।
প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২৩ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত নির্ধারিত। কর্মশালায় জানানো হয়, ব্রি ইতোমধ্যেই নতুন ৬টি আঞ্চলিক কার্যালয় ও স্যাটেলাইট স্টেশন স্থাপন কার্যক্রম শুরু করেছে। পাশাপাশি গবেষণা ল্যাবরেটরি আধুনিকীকরণ, কৃষক পর্যায়ে উন্নত জাতের বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণে বিভিন্ন উদ্যোগও চালু রয়েছে।
প্রযুক্তি উদ্ভাবন থেকে কৃষক পর্যায়ে দ্রুত পৌঁছে দিতে দেশব্যাপী ১৫টি ‘প্রযুক্তি গ্রাম’ স্থাপন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে সার্ভিস প্রোভাইডার নির্বাচন করে সেখানে ব্রি উদ্ভাবিত ধান জাত ও প্রযুক্তি প্রদর্শনী, প্রশিক্ষণ এবং প্রযুক্তি সেবা কার্যক্রম চলছে।
এছাড়া স্থানীয় কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণে ব্রি উদ্ভাবিত উফশী আমন ধানের মাঠ দিবস ও ফসল কর্তন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে ১৬৫টি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তায় এই কার্যক্রমে কৃষকেরা সরাসরি উপকৃত হচ্ছেন।
প্রকল্পের আওতায় বর্তমানে ১টি নতুন ধানের জাত উদ্ভাবন প্রক্রিয়াধীন এবং ৫টি আধুনিক প্রযুক্তি উদ্ভাবনের কাজ চলছে। প্রকল্পের লক্ষ্য অনুযায়ী ৬টি নতুন জাত এবং ২০টি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হবে, যা কৃষিতে অনগ্রসর দক্ষিণাঞ্চল ও পাহাড়ি এলাকার সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
গবেষণাকে আরও কার্যকর করতে ব্রি’র জনবলকে উচ্চশিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সক্ষম করে তোলা হচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ কর্মীরাও প্রশিক্ষিত হচ্ছেন প্রযুক্তি হস্তান্তরে, যাতে গবেষণা ও মাঠ পর্যায়ের মধ্যে কার্যকর সংযোগ গড়ে ওঠে।
ব্রি’র এলএসটিডি প্রকল্প কেবল ধান উৎপাদনের নতুন সম্ভাবনাই সৃষ্টি করছে না, বরং গবেষণাভিত্তিক কৃষি ব্যবস্থার একটি টেকসই রূপান্তরও সূচিত করছে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে এই প্রকল্পের অবদান আগামীতে আরও দৃশ্যমান হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।