জুমবাংলা ডেস্ক : সাবেক স্ত্রী-ছেলেসহ তিনজনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করেন এএসআই সৌমেন। এ ঘটনার পর কুষ্টিয়া শহরজুড়ে শুরু হয় চাঞ্চল্য।
রবিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের কাস্টমস মোড় এলাকায় নাজ ম্যানশন মার্কেটের একটি বিকাশের দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর ঘাতক সৌমেনকে ধরে পুলিশে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধরা।
নিহতরা হলেন- সৌমেনের সাবেক স্ত্রী আসমা, তার সাত বছরের ছেলে রবিন ও ছেলে বন্ধু শাকিল। তাদের সবার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার সাওতা গ্রামে। শাকিল একজন বিকাশকর্মী ছিলেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সৌমেন জানান, আসমা তার দ্বিতীয় স্ত্রী। তার প্রথম স্ত্রী এবং সন্তান অন্যত্র থাকেন। কেন এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন- জবাবে সৌমেন জানান, বিকাশকর্মী শাকিলের সঙ্গে আসমার অনৈতিক সম্পর্কের কারণে তিনি এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। তবে আসমাকে নিজের স্ত্রী দাবি করলেও কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি সৌমেন। গুলিতে নিহত শিশুটি আসমার প্রথম ঘরের সন্তান।
জানা গেছে, আসমার প্রথম স্বামীর সঙ্গে বছর দেড়েক আগে ছাড়াছাড়ি হয়। এরপর ছেলেকে নিয়ে কুষ্টিয়া শহরে মায়ের সঙ্গে থাকতেন তিনি। এ সময় কুষ্টিয়ার হালশা ক্যাম্পে দায়িত্বে ছিলেন সৌমেন। ওই সময় তার বিরুদ্ধে নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ ওঠে।
হালশায় থাকা অবস্থায় আসমার সঙ্গে সৌমেনের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে দুজন দুই ধর্মের হওয়ায় তাদের বিয়ে হয়েছে কিনা তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারেননি। নানা অভিযোগের কারণে সৌমেনকে হালশা থেকে খুলনার ফুলতলায় বদলি করা হয়। এরপর শাকিলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে আসমার।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নাজ ম্যানশন মার্কেটে বিকাশের দোকানে বিকাশকর্মী ছেলে বন্ধু শাকিলের সঙ্গে দেখা করতে আসেন আসমা। এ সময় আসমার সঙ্গে তার ছেলে রবিনও ছিল। হঠাৎ সেখানে হাজির হন আসমার সাবেক স্বামী এএসআই সৌমেন। মার্কেটের ভেতরে প্রথমেই শাকিল ও আসমার মাথায় গুলি চালান তিনি। এ সময় রক্ত দেখে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে রবিন। কিন্তু তাকেও ছাড়েননি সৌমেন। তেড়ে ধরে তার মাথায়ও গুলি চালান।
এসব দৃশ্য দেখে ইট-পাটকেল ছুড়ে সৌমেনকে থামানোর চেষ্টা করেন উপস্থিত লোকজন। খবর পেয়ে পুলিশও ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। একপর্যায়ে ধরা দেন সৌমেন। পরে স্থানীয়রা তিনজনকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে ফুলতলা থানা পুলিশ জানায়, ছুটি না নিয়েই কর্মস্থল ত্যাগ করেছিলেন এএসআই সৌমেন কুমার রায়। শনিবার রাতে এসআই সৌমেন ফুলতলা থানায় উপস্থিত ছিলেন। এরপর থানার কাউকে কিছু না জানিয়ে রবিবার ভোরে কুষ্টিয়ায় চলে যান তিনি। তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের পাশাপাশি বিভাগীয় ব্যবস্থাও নেয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।