বিজ্ঞান ও প্রযক্তি ডেস্ক : ১৯৭৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে উৎক্ষেপিত ভয়েজার-১ এখন আমাদের গ্রহ থেকে ২৫ বিলিয়ন কিলোমিটার দূরে, আন্তঃনাক্ষত্রিক অঞ্চলে অবস্থান করছে। সাম্প্রতিক খবর হলো, নাসার প্রকৌশলীরা দীর্ঘ ২০ বছরের ব্যবধানে আবারও চালু করেছেন ভয়েজার-১-এর মূল থ্রাস্টারগুলো। এটি বিজ্ঞানীদের জন্য যেন এক অলৌকিক মুহূর্তের মতো, কারণ তারা মনে করেছিলেন, থ্রাস্টারগুলো চিরতরে বন্ধ হয়ে গেছে।
ভয়েজার-১-এর এ অনন্য ঘটনা প্রমাণ করে প্রযুক্তির অগ্রগতি এবং মানুষের যুদ্ধে কখনও হতাশা না মানার মানসিকতার সাফল্য। নাসার স্যাটেলাইটগুলো পৃথিবীর বাইরে নতুন নতুন তথ্য আনতে যা ভূমিকা রাখে, তা অস্মরণীয়। ভয়েজার-১-এর মূল থ্রাস্টার পুনরায় সচল করার ফলে বিজ্ঞানীরা ভবিষ্যতে ভয়েজার মিশনের সাথে যোগাযোগ পুনঃস্থাপনে আরো সহযোগিতা এবং সুবিধা লাভের আশা করছেন।
Table of Contents
ভয়েজার-১-এর থ্রাস্টার পুনরুদ্ধার: প্রযুক্তির অলৌকিকতা
গত মার্চের ২০ তারিখে নাসার দল ভয়েজার-১-এর থ্রাস্টারগুলো চালু করার নির্দেশ পাঠায়। পৃথিবী থেকে সংকেত পৌঁছাতে এবং সাড়া পেতে প্রায় ২৩ ঘণ্টা সময় লাগে। সবকিছু পরিকল্পনা ঠিক মত হলে, একদিন পর বিজ্ঞানীরা যে ডেটা পেয়েছিলেন সেটি তাদের প্রত্যাশার চেয়েও বেশি উজ্জ্বল করে তোলে। থ্রাস্টারের হিটারের তাপমাত্রা নাটকীয়ভাবে বাড়ানোর পর তারা নিশ্চিত হন যে, তাদের প্রচেষ্টা সফল হয়েছে।
গত দুই দশক ধরে চালু থাকা ব্যাকআপ থ্রাস্টারগুলোর কার্যক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণে প্রকৌশলীদের উদ্বেগ ছিল। তারা জানতেন, অত্যধিক সময় ধরে অপ্রচলিত জ্বালানি অবশিষ্টাংশ থ্রাস্টারের কার্যক্রমে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু কখনও কল্পনা করেননি যে মূল থ্রাস্টারগুলো আবার কাজ করবে।
“আমরা ভাবতাম মূল থ্রাস্টারগুলো কখনোই ফিরে আসবে না,” বলেন নাসার জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরির মিশন ব্যবস্থাপক করিম বাদারউদ্দিন। “কিন্তু ভয়েজার আমাদের বারবার বিস্মিত করেছে।”
নাসার প্রযুক্তির সাফল্য: বিজ্ঞানীদের চিন্তাধারা
নাসার প্রকৌশলীরা তৈরি করেছেন বিভিন্ন নতুন প্রযুক্তি, যা ভয়েজার-১ মিশনের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। বিশাল দৈনন্দিন বিভ্রান্তির মধ্যেও তারা সফলতার গল্প তৈরি করেছেন। টড বারবার, জেপিএলের প্রপালশন লিড, জানান, “এটি ছিল এক গৌরবময় মুহূর্ত। আমাদের মনোবল ছিল আকাশচুম্বী। একজন প্রকৌশলীর দূরদর্শিতা এবং চিন্তাশক্তির কারণে এই অলৌকিক ঘটনা সম্ভব হয়েছে।”
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ভয়েজার-১-এর অর্থ
ভয়েজার-১ শুধুমাত্র একটি মহাকাশযান নয়; এটি মানব সভ্যতার প্রযুক্তিগত সাফল্যের একটি প্রতীক। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর বাতাবরণ থেকে দূরে অবস্থানরত একটি মহাকাশযানের আচরণ এবং শক্তির উৎস আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন। এটি আন্তর্জাতিক মহাকাশ অভিযান এবং মানব ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। নাসার এই প্রতিষ্ঠানটি গবেষণার মাধ্যমে পৃথিবী থেকে দূরে থাকা বিভিন্ন গ্রহের তথ্য সংগ্রহে সক্ষম হয়েছে এবং তার মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীদেরকে নতুন দিশা দেখিয়েছে।
মূল থ্রাস্টারগুলো সচল হওয়ার ফলে ভয়েজার-১ এখন যেকোনো সময়ে নিজের ভারসাম্য বজায় রাখতে সক্ষম হবে। এটি আগামীতে যোগাযোগ পুনঃস্থাপন এবং নতুন তথ্য আহরণের জন্য আরও সুবিধা এনে দেবে। ভবিষ্যদ্বাণী করা হচ্ছে, এই প্রযুক্তির আরও নতুন বিস্ময় আমাদের অপেক্ষায় আছে।
মূল থ্রাস্টার সচলে ভবিষ্যৎ অভিযানের পথপ্রদর্শন
ভয়েজার-১-এর প্রধান থ্রাস্টারগুলো সচল হওয়ায় লম্বা পথ পাড়ি দিয়ে পৃথিবীর সাথে ভবিষ্যৎ যোগাযোগ পুনরায় চালু করার পথ আরও মসৃণ হবে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এটি জাতিসংঘের মহাকাশ সংক্রান্ত গবেষণার উন্নয়ন এবং ভবিষ্যতের মহাকাশ অভিযানের জন্য একটি নতুন দিশা হবে।
নাসার বিজ্ঞানীদের এই উদ্যোগ শুধু প্রযুক্তির উন্নয়নই নয়, বরং মানবতার ভবিষ্যৎ অন্বেষণের জন্য একটি স্বীকৃতির প্রতীক।
সাম্প্রতিক সময়ে ভয়েজার-১-এর থ্রাস্টার সচল হওয়ার ফলে আমাদের মহাকাশ গবেষণায় একটি নতুন অনুপ্রেরণার সঞ্চার ঘটেছে। এবার আমাদের অপেক্ষা করতে হবে, এই উন্নয়ন কি নতুন রেকর্ড স্থাপন করবে।
Realme Narzo 60 Pro: Price in Bangladesh & India with Full Specifications
প্রশ্ন ও উত্তর (FAQs)
১. ভয়েজার-১ কোথায় অবস্থিত?
ভয়েজার-১ বর্তমানে প্রায় ২৫ বিলিয়ন কিলোমিটার দূরে, আন্তঃনাক্ষত্রিক অঞ্চলে অবস্থান করছে।
২. নাসার প্রকৌশলীরা কীভাবে ভয়েজার-১-এর থ্রাস্টার পুনরায় সচল করলেন?
নাসার প্রকৌশলীরা গত দুই দশক ধরে বন্ধ থাকা থ্রাস্টারগুলো নিয়ে একটি ঝুঁকিপূর্ণ পরীক্ষা চালানোর সিদ্ধান্ত নেন এবং সফলভাবে থ্রাস্টারগুলো চালু করতে সক্ষম হন।
৩. ভয়েজার-১-এর থ্রাস্টার সচল হওয়া কেন গুরুত্বপূর্ণ?
এটি নতুন তথ্য আহরণের সুযোগ তৈরি করে এবং ভয়েজার মিশনের সাথে যোগাযোগ পুনরায় স্থাপনের প্রক্রিয়া উন্নত করবে।
৪. ভয়েজার-১ আমাদের জন্য কী মানে?
ভয়েজার-১ প্রযুক্তির অগ্রগতি এবং মানব ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, যা আমাদের মহাকাশের জানার উদ্দীপনা বাড়ায়।
৫. নাসার পরবর্তী মহাকাশ অভিযানের কি পরিকল্পনা রয়েছে?
ভয়েজার-১-এর সফলতার বিষয়ে এই সংস্থা নতুন গবেষণা প্রকল্প এবং অভিযানের পরিকল্পনা করছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।