বিশ্ববাজারে অস্বাভাবিক দরপতন হওয়ায় দেশের বাজারে কমল সব ধরনের স্বর্ণের দাম। প্রতি ভরি স্বর্ণে সাড়ে ৩ হাজার টাকা কমিয়ে এ ধাতুর নতুন দর নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। নতুন করে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৩ হাজার ৭১৬ টাকা
বুধবার (১২ আগস্ট) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে স্বর্ণের এ নতুন দর কার্যকর হবে।
খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশের বাজারে কোন দামে স্বর্ণ বিক্রি হবে, তা নির্ধারণ করে বাজুস। বিশ্ববাজারে দাম বাড়া-কমার ওপর নির্ভর করে এই দাম নির্ধারণ করা হয়। সাধারণত বিশ্ববাজারের সাতদিনের দামের গড় ভিত্তিতে কী পরিমাণ দাম বাড়বে না কমবে সে হিসেবে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
স্বর্ণের দাম কমানোর বিষয়ে বাজুসের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, স্বর্ণের দামে এমন অস্থিরতা আমি আগে কখনও দেখিনি। স্বর্ণের দাম যে হারে বেড়েছিল, সেটা যেমন অস্বাভাবিক ছিল, এখন যে হারে কমছে তাও অস্বাভাবিক। আমার দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় আগে কখনও একদিন বিশ্ববাজারে ১১২ (প্রায় ১০ হাজার) ডলার স্বর্ণের দাম কমতে দেখিনি। তিনি জানান, বিশ্ববাজারে দাম কমার কারণে বাংলাদেশের বাজারেও স্বর্ণের দাম কমানো হয়েছে।
বাজুসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক স্থবিরতা, ডলার ও তেলের দরপতন, আন্তর্জাতিক স্বর্ণের বাজারে নজিরবিহীন উত্থান-পতন সত্ত্বেও দেশীয় স্বর্ণ বাজারের মন্দাভাব ও ভোক্তা সাধারণের কথা চিন্তা করে প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও বাজুস সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১৩ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের বাজারে স্বর্ণ ও রৌপ্যের নতুন মূল্য নির্ধারণ করেছে।
বৃহস্পতিবার থেকে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম তিন হাজার ৫০০ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৩ হাজার ৭১৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের স্বর্ণ ৭০ হাজার ৫৬৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ ৬১ হাজার ৮১৯ টাকায়। সনাতন পদ্ধতিতে প্রতি ভরি স্বর্ণ ৫১ হাজার ৪৯৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি রূপার দাম পূর্বের নির্ধারিত ৯৩৩ টাকাই বহাল রয়েছে।
এদিকে মহামারি করোনার প্রাদুর্ভাবের মধ্যে দেশের বাজারে চারবার স্বর্ণের দাম বেড়ে ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায় ওঠে। বাজুসের তথ্যমতে, গত জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম অস্থির হয়ে উঠেছিল। এতে ১৯ ফেব্রুয়ারি দেশে প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৬১ হাজার ৫২৮ টাকা। এটি ছিল ওই সময় দেশের বাজারে স্বর্ণের সর্বোচ্চ দাম। এর আগে দেশে স্বর্ণের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছিল ২০১২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর। সে সময় প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম দাঁড়িয়েছিল ৬০ হাজার ৬৫৩ টাকা।
বিশ্ববাজারে অস্বাভাবিক দাম বাড়ার প্রেক্ষিতে এর আগে সবশেষ বাড়ানো গত ৬ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়া দাম অনুযায়ী আজকে পর্যন্ত ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরিতে স্বর্ণ ৭৭ হাজার ২১৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ২১ ক্যারেট ৭৪ হাজার ৬৬ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৬৫ হাজার ৩১৮ ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ ৫৪ হাজার ৯৯৬ টাকায় দেশের বাজারে বিক্রি হয়।
জানা গেছে, বৈশ্বিক এ মহামারির মধ্যে চারবার স্বর্ণের দাম বাড়িয়েছে বাজুস। এর আগে সবশেষ গত সপ্তাহে ৫ আগস্ট দাম বাড়ানো হয়েছে। যা ৬ আগস্ট থেকে কার্যকর হয়। এর আগে ২৩ জুলাই স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করেছিল বাজুস। তারও আগে গত ২৩ জুন এবং ২৮ মে স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করেছিল স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের এ সংগঠনটি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।