পৃথিবীতে অ্যান্টার্কটিকাই একমাত্র মহাদেশ যা কেবল বিজ্ঞান চর্চার জন্য ব্যবহার করা যায়। উনবিংশ শতকের প্রথম ভাগে এই মহাদেশের খোঁজ পায় মানুষ। এরপর বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে অ্যান্টার্কটিকার কেন্দ্রে অবস্থিত দক্ষিণ মেরু পর্যন্ত পৌছানো সম্ভব হয়। পরবর্তী পঞ্চাশ বছর প্রথম এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ডামাডোলে এই মহাদেশে সব কর্মকাণ্ড থমকে গিয়েছিল। এরপর ১৯৫৬ সালে পুনরায় অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশে গবেষণামূলক কাজ শুরু করে ততকালীন দুই বিশ্ব পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন।
১৯৫৭ সালে এই মহাদেশে নিজেদের প্রথম গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করে দেশ দুটি। মার্কিন গবেষণা কেন্দ্রটির নাম রাখা হয় অ্যামুন্ডসেন – স্কট স্টেশন আর সোভিয়েতরা তাদের কেন্দ্রটির নাম রাখে ভস্টক আইস স্টেশন। গত শতকের শেষ দশকে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাবার পর বর্তমানে এই স্টেশনটি রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হচ্ছে। এই ভস্টক স্টেশনেই এখন পর্যন্ত বিশ্বের সর্বনিম্ন তাপমাত্রাটি রেকর্ড করা হয়েছিল।
এন্টার্টিকায় অভিযান চালানো প্রথম রুশ জাহাজ থেকে এর নাম হয়েছে ভস্টক স্টেশন। এন্টারটিকার প্রত্যন্ত গবেষণা কেন্দ্রের একটি হচ্ছে ভস্টক স্টেশন। এই স্টেশনে মোট পাঁচটি ভবন রয়েছে। গবেষকদের থাকা-খাওয়া ও বিনোদনের আলাদা কক্ষ রয়েছে।
১৯৫৭ সালের ডিসেম্বরে এই স্টেশনটি তৈরি করা হয়। সবথেকে মজার ব্যাপার হচ্ছে রুশ গবেষণা কেন্দ্রে দাবা খেলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই ভস্টক স্টেশনের নিচে বিশাল একটি হ্রদ বিদ্যমান। ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের গবেষণা অনুসারে বরফের নিচে এ হ্রদ এর উপস্থিতি বোঝা যায়।
ওই হ্রদের আয়তন ১৪ হাজার বর্গ কিলোমিটার। বিজ্ঞানীদের গবেষণা অনুযায়ী এ লেকের পানি তিন হাজার বছর আগে সঞ্চিত হয়েছিল। ভস্টক স্টেশনের জলবায়ু হীমশিতল ও শুষ্ক। পৃথিবীতে রেকর্ড অনুযায়ী সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এ ষ্টেশনে পরিমাপ করা হয়েছিল।
১৯৮৩ সালে এ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। ঐ দিন এখানে তাপমাত্রার ছিল -৮৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পাওয়া যায় ১৯৭৪ সালে ও তা ছিল মাইনাস ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হচ্ছে ভস্টক স্টেশন বেস সূর্যের আলো উপভোগ করতে পারে। প্রাগ ঐতিহাসিক আমলে পৃথিবীর জলবায়ু কেমন ছিল তা সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার জন্য ভস্টক স্টেশনের বিজ্ঞানীরা কাজ করে থাকেন। এন্টারটিকার বিভিন্ন স্থানে বিশ্বের ৪২ টি দেশ তাদের গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।