অ্যাপল ২০২৬ সালে আনতে পারে তার প্রথম ভাঁজযোগ্য আইফোন। কিন্তু ওয়াল স্ট্রিটের বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান জেফারিজ এ নিয়ে সতর্ক করেছে। তাদের মতে, বাজারে এখন যে উচ্চ প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে, ভাঁজযোগ্য আইফোন তা পূরণ করতে পারবে না। জেফারিজের পূর্বাভাস, ২০২৬ সালে মাত্র ১.২৫ কোটি ভাঁজযোগ্য আইফোন বিক্রি হবে।
এদিকে, বেস আইফোন ১৭-এর চাহিদা ভালো থাকবে বলে মনে করছে প্রতিষ্ঠানটি। আইফোন ১৬-এর বেস মডেলের (১২৮ জিবি) দামেই এবার পাওয়া যাবে ২৫৬ জিবি স্টোরেজের আইফোন ১৭। এটি একটি অন্তর্নিহিত মূল্যহ্রাস। তবে এই ইতিবাচক প্রভাব ইতিমধ্যেই শেয়ার দরে
হয়ে গেছে বলে মত তাদের।
কেন গুরুত্বপূর্ণ এই বিশ্লেষণ?
অ্যাপলের ভাঁজযোগ্য স্মার্টফোন নিয়ে বিনিয়োগকারী ও ভোক্তাদের আগ্রহ প্রবল। নিকেই এশিয়ার একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়, অ্যাপল ২০২৬ সালে ৯.৫ কোটি ভাঁজযোগ্য আইফোন বিক্রির লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে। জেফারিজের এই প্রতিবেদন সেই উচ্চ প্রত্যাশাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।
জেফারিজের এই পূর্বাভাস বিশ্বস্ত সূত্র যেমন রয়টার্স ও ব্লুমবার্গের রিপোর্টের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। তারা অ্যাপলের সরবরাহ শৃঙ্খল নিয়ে নিয়মিত তথ্য প্রকাশ করে। বিশ্লেষক এডিসন লি অ্যাপলের পণ্য চক্র ও বাজার কৌশল নিয়ে গভীর অভিজ্ঞতা রাখেন।
ভাঁজযোগ্য আইফোনের সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ
জেফারিজের মতে, ভাঁজযোগ্য আইফোনের বিক্রি সীমিত হওয়ার পেছনে মূল্য একটি বড় কারণ। বর্তমান বাজারে ভাঁজযোগ্য ফোনের দাম সাধারণ মডেলের তুলনায় অনেক বেশি। অ্যাপল যদি উচ্চ মূল্য নির্ধারণ করে, তবে তা অনেক ভোক্তার নাগালের বাইরে চলে যাবে।
এছাড়াও, প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা একটি বড় ইস্যু। বর্তমান ভাঁজযোগ্য ডিসপ্লে প্রযুক্তিতে এখনো স্থায়িত্ব ও ব্যবহার-অনুভূতি নিয়ে চিন্তা রয়েছে। অ্যাপল হয়তো এগুলো সমাধান করবে, কিন্তু তাতে খরচ বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি আছে।
আইফোন ১৮ প্রো ও প্রো ম্যাক্সের দাম বাড়তে পারে
জেফারিজ আরও পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২৬ সালে আইফোন ১৮ প্রো ও প্রো ম্যাক্স মডেলের দাম ১০০ ডলার করে বাড়তে পারে। এই মূল্যবৃদ্ধি এই প্রিমিয়াম মডেলগুলোর চাহিদা কিছুটা কমিয়ে দেবে। প্রো মডেলগুলো অ্যাপলের জন্য মুনাফার অন্যতম চালিকাশক্তি।
এই সিদ্ধান্তের ফলে কিছু গ্রাহক ভাঁজযোগ্য মডেল বা স্ট্যান্ডার্ড মডেলের দিকে ঝুঁকতে পারেন। এটি সামগ্রিকভাবে অ্যাপলের মুনাফার ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। তবে প্রতিষ্ঠানটি তাদের প্রিমিয়াম সেগমেন্টে অবস্থান শক্তিশালী রাখতেই এই কৌশল নিতে পারে।
অ্যাপলের সামগ্রিক বিক্রির পূর্বাভাস
জেফারিজ তাদের পূর্বাভাস হালনাগাদ করেছে। তারা ২০২৫ সালের জন্য আইফোন ইউনিট বিক্রির প্রবৃদ্ধি ৭% ধরা হয়েছে। ২০২৬ সালের জন্য এই প্রবৃদ্ধি ১% এবং ২০২৭ সালে ১% সংকোচন হতে পারে বলে তারা মনে করে। ২০২৪ সালে অ্যাপল ২৩.২ কোটি আইফোন বিক্রি করেছিল।
নতুন এই হিসাব অনুযায়ী, ২০২৫ সালে বিক্রি হতে পারে ২৪.৮ কোটি আইফোন। ২০২৬ সালে এই সংখ্যা দাঁড়াবে ২৫ কোটিতে। ২০২৭ সালে তা কিছুটা কমে ২৪.৮ কোটিতে নেমে আসতে পারে। ভাঁজযোগ্য আইফোন এই পরিসংখ্যানে বড় কোনো পরিবর্তন আনতে পারবে না বলে মনে করে জেফারিজ।
জেনে রাখুন-
Q1: ভাঁজযোগ্য আইফোন কবে আসবে?
বর্তমান রিপোর্ট অনুযায়ী, অ্যাপল ২০২৬ সালে তার প্রথম ভাঁজযোগ্য আইফোন বাজারে আনতে পারে।
Q2: ভাঁজযোগ্য আইফোনের দাম কত হতে পারে?
দাম এখনো নিশ্চিত নয়, তবে এটি অ্যাপলের সবচেয়ে দামি আইফোন মডেল হতে পারে বলে ধারণা করা হয়।
Q3: জেফারিজ কেন নেতিবাচক পূর্বাভাস দিল?
জেফারিজ মনে করে, বাজারে ভাঁজযোগ্য আইফোন নিয়ে যে অতিরিক্ত উৎসাহ দেখা যাচ্ছে, বাস্তব চাহিদা তার থেকে কম হবে।
Q4: আইফোন ১৭ কি সস্তা হচ্ছে?
হ্যাঁ, একপ্রকার। একই দামে আগের বছরের চেয়ে দ্বিগুণ স্টোরেজ পাওয়া যাবে, যা একটি অন্তর্নিহিত মূল্যহ্রাস।
Q5: অ্যাপলের শেয়ার দরে কী প্রভাব পড়বে?
জেফারিজের মতে, আইফোন ১৭-এর ভালো চাহিদার খবর ইতিমধ্যেই শেয়ার দরে হয়ে গেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।