জুমবাংলা ডেস্ক : নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় এক গৃহবধূর গোপনে মোবাইল ফোনে অর্ধনগ্ন ছবি তুলে বিভিন্ন সময় ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায় করছে দুই দেবর। অর্থ না দিলে অর্ধনগ্ন ছবিগুলো ফেইসবুকের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার বারবার হুমকি দিলে পর্নগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে অবশেষে মামলা করা হয়েছে।
অভিযুক্ত এনামুল হোসেন ওরফে মামুন ও ফরহাদ হোসেনের নাম উল্লেখ করে দুই জনের নামে বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টায় মামলা করেন ভুক্তভোগী ঐ গৃহবধূ। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এনামুল হোসেন ওরফে মামুন (৩৮) নামের আসামিকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বিলাশবাড়ি ইউনিয়নের শর্মাপুর গ্রামে।
থানা সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২৭-২৮ বছর আগে ঐ গৃহবধূর বিয়ে হয়। ঐ দম্পতির ঘরে দুটি মেয়ে আছে। গত ১৪-১৫ বছর আগে এনামুল হোসেন ওরফে মামুন গোপনে ওই গৃহবধূর অশ্লীল অর্ধনগ্ন ছবি তোলেন। পরে ছবিটি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ওই গৃহবধূর কাছ থেকে বিভিন্নভাবে টাকা আদায় করে আসছিল। পরে তার ছোট ভাই ফরহাদ হোসেন তার বড় ভাই মামুনের কাছ থেকে ছবিটি পায়। ছবিটি পাওয়ার পর একইভাবে ফরাদ হোসেনও ওই গৃহবধূকে ভয় দেখিয়ে পর্যায়ক্রমে টাকা নিতে থাকে। পরবর্তীতে গৃহবধূ তাদেরকে আর টাকা না দিতে চাইলে তারা দুই ভাই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে গৃহবধূ বিষয়টি তার বড় মেয়েকে খুলে বলেন। তখন তার বড় মেয়ে ১ নং বিবাদী এনামুল হোসেন ওরফে মামুন (চাচা) এর নিকট মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ঘটনাটির বিষয়ে জানতে চাইলে বিবাদী তখন আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং গত ২৭ জুন দুপুর ১২টা ৫৮ মিনিটে মামুন তার ইমো আইডি থেকে ওই গৃহবধূর বড় মেয়ের ইমো আইডিতে তার মায়ের অর্ধনগ্ন ছবি পাঠায়। এরপর ঐ গৃহবধূ ১ জুলাই থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে রাত সড়ে ১০টায় থানায় মামলা দায়ের করেন।
ওই গৃহবধূ বলেন, আমার স্বামী সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন। সেই সুবাদে দীর্ঘদিন আমি বাড়িতে একা থাকতাম। এনামুল হোসেন ওরফে মামুন ও ফরহাদ হোসেন আমার স্বামীর আপন ভাই। ১৪-১৫ বছর আগে আমার দেবর মামুন ও ফরহাদ গোপনে আমার অর্ধনগ্ন ছবি তুলে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন সময় আমার কাছ থেকে টাকা নিচ্ছিল। পরে বিভিন্নভাবে ভয় দেখায়। সেই ভয়ে আমি তাদেরকে টাকা দিয়ে আসছিলাম। আমার স্বামী অবসরে যাওয়ার পর বাড়িতে চলে আসে। তারপরও তারা আমার কাছে বিভিন্ন সময় টাকা দাবি করলে আমি টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় ঐ ছবি আমার বড় মেয়ের ইমোতে পাঠায় মামুন। বিষয়টি আমার স্বামীর সঙ্গে আমি আলাপ করি। বিনা অপরাধে সম্মান হারাচ্ছি আমি। মামলা করার পর এনামুল হোসেন ওরফে মামুনকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ। দ্বিতীয় অভিযুক্ত ফরহাদ হোসেনকেও গ্রেপ্তার করতে তৎপর রয়েছে পুলিশ। আমি জড়িতদের কঠিন শাস্তি চাই।
এ বিষয়ে বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগী ঐ গৃহবধূর লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা রেকর্ড করে অভিযুক্ত ১নং আসামি এনামুল হোসেন ওরফে মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে দ্বিতীয় অভিযুক্ত আসামি ফরহাদ হোসেন পলাতক রয়েছে। তাকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। গ্রেপ্তারকৃত মামুনকে শুক্রবার (২ জুলাই) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।