কি দুর্দান্ত শুরুই না পেয়েছিল ভারত। জাসপ্রিত বুমরাহ টেস্ট ইতিহাসের একমাত্র বোলার হিসেবে ২০ রানের কম গড়ে ২০০তম উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। তার সঙ্গে মিলে মোহাম্মদ সিরাজ মাত্র ৯১ রানেই ৬ উইকেট তুলে নেন অস্ট্রেলিয়ার। সেই দলটাই কি না ৯ উইকেটে ২২৮ রান স্কোরবোর্ডে নিয়ে চতুর্থ দিন শেষ করেছে। যার পুরো কৃতিত্ব টেল-এন্ডার ব্যাটারদের। ফলে অজিদেরও লিড দাঁড়াল ৩৩৩ রানে।
মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) আজ চতুর্থ দিনটা হতে পারত ভারতের। তাদের হতাশায় ডুবিয়েছে মূলত অস্ট্রেলিয়ার দুই লেজের জুটি (অষ্টম উইকেটে ৫৭ ও দশম উইকেট জুটিতে ৫৫ রান)। অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের কথা হয়তো বিশেষভাবে আসবে, দলের বিপর্যয়ে হাল ধরতে সিদ্ধহস্ত এই তারকা দুই ইনিংসে যথাক্রমে ৪৯ ও ৪১ রান করেছেন। ক্রিজে এখনও অপরাজিত আছেন নাথান লায়ন। তার ৪১ কিংবা স্কট বোল্যান্ডের ৬৫ বলে ১০ রানের ইনিংসও স্বাগতিকদের বড় প্রেরণা!
এদিকে, এমসিজির টেস্ট ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৩৩৩ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড রয়েছে। যা ছিল ৯৬ বছর আগে, ১৯২৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর ইংল্যান্ডের ওই রান তাড়ায় সফল হয়েছিল স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। এরপর আধুনিক ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ২৩১ রান চেজ করেছিল ইংল্যান্ড। ২০১৩ সালে অজিদের দেওয়া সেই রান তাড়ায় ইংলিশরা জয় পেয়েছিল। অর্থাৎ, ভারতকেও চলমান টেস্টে জিততে ইতিহাস গড়তে হবে অজিদের বিপক্ষে। এখনও স্বাগতিকদের এক উইকেট বাকি।
বক্সিং ডে টেস্টের চতুর্থ দিনে দলীয় খাতায় ১১ রান যোগ করতেই ৩৬৯ রানে অলআউট হয় ভারত। অবশ্য নিতীশ কুমার রেড্ডির দুর্দান্ত প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি না পেলে সফরকারীরা এতদূর আসতে পারত না। এই পেস অলরাউন্ডারের ইনিংস থেমেছে ১১৪ রানে। ১৮৯ বলে ১১টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন রেড্ডি। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ৩ করে উইকেট নিয়েছেন প্যাট কামিন্স, স্কট বোল্যান্ড ও নাথান লায়ন।
১০৫ রানের লিড নিয়ে টার্গেট দিতে নামা অস্ট্রেলিয়া দলীয় ২০ রানেই অভিষিক্ত ওপেনার স্যাম কনস্টাসকে হারায়। আগের ইনিংসে বুমরাহ’র চোখে চোখ রেখে ৬০ রানের ইনিংস খেলা এই ব্যাটার এবার ফিরলেন ভারতীয় প্রধান পেসারের বলেই। দারুণ এক ইনসুইং ডেলিভারিতে বুমরাহ ৮ রানে ফিরিয়েছেন ১৯ বছর বয়সী এই ব্যাটারকে। এরপর ব্যক্তিগত ২১ রানে উসমান খাজাকে বোল্ড এবং স্টিভেন স্মিথকে ১৩ রানে ক্যাচ আউট করেন মোহাম্মদ সিরাজ।
দলীয় ৮০–৯১, ১১ রানের ভেতর ৪ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। যার তিনটাই গেছে বুমরাহ’র পকেটে। ট্রাভিস হেডকে মাত্র ১ রানেই আউট করে টেস্টে ২০০তম উইকেটের মাইলফলক পূর্ণ করেন এই পেসার। এরপর মিচেল মার্শ (০) এবং অ্যালেক্স ক্যারিকে (২) ফিরিয়ে টেস্টে ব্যক্তিগত উইকেট সংখ্যাকে ২০২–এ পরিণত করেছেন বুমরাহ। ৯১ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। এরপর দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার ভারটা নেন কামিন্স। মার্নাস ল্যাবুশেনকে সঙ্গে নিয়ে গড়েন ৫৬ রানের জুটি। সিরাজের বলে এলবিডব্লু হওয়ার আগে ল্যাবুশেন ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৭০ রান করেন। ১৩৯ বলে ৩টি চার মারেন এই ডানহাতি ব্যাটার।
এরপর কামিন্স (৯০ বলে ৪টি চারে ৪১) ও স্টার্কের (৫) বিদায়ে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ নিয়ে শঙ্কায় পড়ে স্বাগতিকরা। কিন্তু শেষ উইকেট জুটিতে বাজিমাত করেছেন লায়ন-বোল্যান্ড। পরপর দুই ইনিংসেই এই দুজন ৫০ এর বেশি বল খেলে রেকর্ডও গড়েছেন। এর আগে টেস্ট ইতিহাসে এমন নজির আছে কেবল একটি। ১৯৬১ সালে পাকিস্তানের আফাক হোসেন ও হাসিব এহসান ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পরপর দুই ইনিংসেই ৫০ এর বেশি বল ক্রিজে ছিলেন।
দ্বিতীয় ইনিংসে এখন পর্যন্ত ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট শিকার করেছেন বুমরাহ। এ ছাড়া সিরাজ ৩ ও রবীন্দ্র জাদেজা ১ উইকেট নিয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।