জুমবাংলা ডেস্ক : পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি মেলায় দীর্ঘ ২ মাস ২০ দিন বন্ধের পর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরসহ দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। এতে করে পণ্যটির সরবরাহ বাড়ায় এক প্রকার বাজার থেকে দেশীয় পেঁয়াজ উধাও হয়ে গেছে। দেশীয় পেঁয়াজের চেয়ে অর্ধেক মূল্যে আমদানিকৃত ভারতীয় পেঁয়াজ পাওয়ায় ক্রেতারাও এসব পেঁয়াজ কিনছেন। তবে স্বাদের কারণে কেউ কেউ বাড়তি দাম দিয়ে দেশীয় পেঁয়াজ কিনছেন। এদিকে চাহিদা কমলেও দেশীয় পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ টাকা করে বেড়েছে।
গতকাল সোমবার (১২ জুন) হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারের অধিকাংশ পেঁয়াজের দোকানেই আমদানিকৃত ভারতীয় পেঁয়াজে সয়লাব হয়ে গেছে। প্রতিটি দোকানেই ভারতীয় ইন্দোর ও নাসিক জাতের পেঁয়াজ শোভা পাচ্ছে। প্রকারভেদে এসব পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা কেজি দরে পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে যা খুচরাতে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে কিছু ছাল উঠা পেঁয়াজ ৩২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
বাজার ঘুরে মাত্র দুটি দোকানে দেশীয় পেঁয়াজ লক্ষ্য করা গেছে। তবে দাম আগের সপ্তাহের তুলনায় ১০ টাকা বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা বেড়ে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে হিলি স্থলবন্দরে আমদানিকৃত ইন্দোর ও নাসিক জাতের পেঁয়াজ পাইকারিতে ট্রাকসেল ৩২ টাকা থেকে ৩৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
হিলি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা ইব্রাহিম হোসেন বলেন, গত ঈদের পর থেকেই পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করে। ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজির পেঁয়াজ বাড়তে বাড়তে ৯০ টাকায় পর্যন্ত হয়েছিল। নিত্যপণ্যের এমন ঊর্ধ্বমুখীর কারণে আমাদের মত সাধারণ মানুষদের পেঁয়াজ কিনতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছিল। এমনকি বাধ্য হয়ে পেঁয়াজ ক্রয়ের পরিমাণ কমিয়ে দিতে হয়েছিল যেখানে এক কেজি কিনছিলাম সেখানে হাফ কেজি কিনে চালাতে হয়েছিল।
সম্প্রতি ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরুর ফলে বাজারে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। বর্তমানে আমরা বাজারে ৪০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ ক্রয় করতে পারছি। এতে করে চাহিদামত যেমন পেঁয়াজ কিনতে পারছি তেমনি টাকাও কম লাগছে। সামনে যেহেতু কুরবানির ঈদ তাই এসময়ে দাম যেন কম থাকে সেই দাবি জানাচ্ছি।
পেঁয়াজ কিনতে আসা আশরাফুল ইসলাম বলেন, বাজারে বর্তমানে এক কেজি দেশীয় পেঁয়াজের দাম ৭০টাকা আর এক কেজি আমদানিকৃত ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ৪০টাকা। এতে করে দেশীয় পেঁয়াজের এককেজির দামে প্রায় দুকেজি আমদানিকৃত ভারতীয় পেঁয়াজ মিলছে। দাম কমের কারনে ও পরিমানে বেশী মেলায় আমরা ভারতীয় পেঁয়াজই কিনছি। একেতো তেল চিনি ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজিনিসের দাম উদ্ধমুখি যার কারনে আমাদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এমন অবস্থায় বাড়তি দাম দিয়ে দেশীয় পেঁয়াজ খাওয়ার সাধ্য আমাদের মত নিন্ম আয়ের মানুষদের নেই। যার কারনে আমাদের মত ক্রেতারা সবাই আমদানিকৃত ভারতীয় পেঁয়াজ কিনছেন।
হিলি বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা শাকিল খান বলেন, ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি বন্ধ থাকায় বেশ কিছুদিন ধরেই দেশীয় পেঁয়াজ দিয়েই ক্রেতাদের চাহিদা মিটছিল। কিন্তু ঈদের পর থেকে সরবরাহ কমতে থাকায় মোকামে দেশীয় পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় আমাদের বাড়তি দাম দিয়ে কিনতে হওয়ায় বেশী দামে বিক্রি করতে হচ্ছিল। এতে করে পেঁয়াজের দাম নিয়ে ক্রেতাদের মাঝে অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল আমাদের বেচাকেনা কমে গিয়েছিল। সম্প্রতি আবরো ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরুর ফলে বাজারে আমদানিকৃত পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়ে গেছে। আমরাও স্থানীয় আমদানিকারকদের কাছ থেকে পেঁয়াজ ক্রয় করে এনে বাজারে বিক্রি করছি। এতে করে বাজারে পেঁয়াজের দাম কমে অর্ধেকে নেমেছে।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি না থাকায় গত ১৬ই মার্চ থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ছিল। আমদানির অনুমতি অনুমতি মেলায় গত ৫ জুন সোমবার থেকে আবারো হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানির পরিমান বাড়ছে। আজকেও বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। সূত্র : চ্যানেল ২৪
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।