স্পোর্টস ডেস্ক : দশ বছরের শুভজিৎ বিশ্বাসের শয়নে, স্বপনে শুধুই বিশ্বনন্দিত জার্মান গোলকিপার অলিভার কান। ১০ বছরের খুদে প্রতিভা ইউটিউবে কানের খেলা দেখে। ২০০২ বিশ্বকাপের সোনার বল-জয়ী গোলকিপারকে মনে মনে গুরুর আসনে বসিয়েছে সে। কস্মিনকালেও শুভজিৎ ভাবেনি সুদূর জার্মানি থেকে কান তার জন্য একবুক ভালবাসার সঙ্গে সঙ্গে এক জোড়া গ্লাভস পাঠিয়ে দেবেন। অখ্যাত, অনামী এক ফুটবল শিক্ষার্থী যে মনে মনে তাঁকেই করে ফেলেছেন ‘জীবনের ধ্রুবতারা’, তা আর অজানা নয় কিংবদন্তি সব ফরোয়ার্ডের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে লড়াই করা নায়কের। দেশে-বিদেশে অলিভার কানের ভক্ত সংখ্যা নেহাত কম নয়। কলকাতায় খেলে যাওয়া নন্দিত জার্মান-তারকা কীভাবে জানলেন এই বঙ্গেরই এক কোনায় তাঁকে সামনে রেখে ভবিষ্যতের গোলকিপার হওয়ার সাধনায় মেতে উঠেছে ক্ষুধে এক প্রতিভা?
ফুটবল নেক্সট ফাউন্ডেশনের কর্ণধার কৌশিক মল্লিক রহস্য ফাঁস করে সংবাদমা্ধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘কলকাতা পুলিশের একাডেমির জন্য প্রতিভা অন্বেষণে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছি। শ্যামনগরে ট্রায়ালে নজর কাড়ে শুভজিৎ। পছন্দের ফুটবলারের নাম জিজ্ঞাসা করলে সপ্রতিভ জবাবে বলেছিল অলিভার কানের নাম। সময় নষ্ট না করে কানকে জানিয়েছিলাম শুভজিতের কথা। কয়েকদিনের মধ্যেই কান পাঠিয়ে দিলেন গ্লাভস জোড়া।’ দুর্দান্ত গোলকিপার হওয়ার পাশাপাশি কানের যে রয়েছে সংবেদনশীল একটা মন, এতেই তা প্রমাণিত।
অলিভার কানের দেওয়া সেই গ্লাভস হাতে পেয়ে দারুণ খুশি উঠতি গোলকিপার। ছোট্ট হাতের মাপ মতো হয়নি সেই গ্লাভস জোড়া। কৌশিক মল্লিক বলছিলেন, ‘ওকে বলেছি গ্লাভসটা যত্ন করে রেখে দিও।’
এতো সারা জীবনের সম্পদ। শুভজিতের বাবা বিষ্ণু বিশ্বাসও যেন স্বপ্নের ঘোরে। সাক্ষাৎকারে বলছিলেন, ‘ছেলেটা মোবাইলে সবসময় অলিভার কানের খেলা দেখত। উনি যে গ্লাভস পাঠিয়ে দেবেন তা ভাবতেই পারিনি।’
একমাত্র ছেলের ঠিকানা এখন কলকাতা পুলিশের নব্য একাডেমি। ছোট্ট ছেলে বাড়ির বাইরে। পেশায় ভ্যানচালক বাবা বিষ্ণু বিশ্বাসের মনে ঝড়। নিজেকে সামলে নিয়ে তিনি বলছিলেন, ‘মনটা খারাপ। কিন্তু এখানে থাকলে তো ওর ভবিষ্যৎ ভাল হবে। ভাল করে ফুটবল শিখতে পারবে। পড়াশোনারও সুযোগ পাবে। এরকম সুযোগ তো সবসময়ে পাওয়া যায় না।’
জীবন এক সুদীর্ঘ যাত্রাপথ। এই পথের শুরুতেই যে মিউনিখ থেকে উড়ে এসেছে উপহার। এই উপহারই ছোট্ট গোলকিপারের মনের প্রশান্তি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।