আন্তর্জাতিক ডেস্ক : হিন্দুদের সংখ্যালঘু ঘোষণা করা আদালতের কাজ নয়। সোমবার এমনই পর্যবেক্ষণ জানাল সুপ্রিম কোর্ট। আদালত জানায়, সংখ্যালঘু মর্যাদা নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন অভিজ্ঞতামূলক কারণ এবং পরিসংখ্যান নির্ভর করে। ফলে এই বিষয়টি বিচার বিভাগের বাইরে।ভারতের কোনো কোনো রাজ্যে হিন্দুরা সংখ্যালঘু মর্মে জুন মাসে জনস্বার্থে করা মামলাটির রায়ে এই রায় দিয়েছে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত।
বিচারপতি উদয় ইউ ললিত এবং এস রবীন্দ্র ভাটের বেঞ্চের মতে, শীর্ষ আদালত সঠিক ডাটা, প্রমাণ ছাড়া আলাদা আলাদা রাজ্যে হিন্দুদের সংখ্যালঘু ঘোষণার মতো সাধারণ নির্দেশ জারি করতে পারে না।
‘সংখ্যালঘু ঘোষণা করা আদালতের কাজ নয়… এটা কেস-বাই-কেস ভিত্তিতে করতে হবে। হিন্দুদের সংখ্যালঘু হিসেবে ঘোষণা করাটা, কোনো সাধারণ ঘোষণা হতে পারে না, যতক্ষণ না আপনি বঞ্চনার বিষয়ে আমাদের কিছু নির্দিষ্ট (তথ্য) করে না দেখান,’ আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায়কে বলে বেঞ্চ। পিটিশনকারী দেবকিনন্দন ঠাকুরজির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন তিনি।
জুন মাসে জনস্বার্থ মামলাটি দায়ের করা হয়। তাতে সংখ্যালঘুদের জন্য জাতীয় কমিশন (এনসিএম) আইন, ১৯৯২ এবং এনসিএম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (এনসিএমইআই) আইন, ২০০৪-এর বিধানকে চ্যালেঞ্জ করা হয়। এতে সংখ্যালঘুদের কিছু সুবিধা এবং অধিকারকে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে, যার মধ্যে ‘প্রতিষ্ঠার অধিকার’ও রয়েছে। ছয়টি নোটিফায়েড সম্প্রদায়ের, এই জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলি পরিচালনা করার অধিকার রয়েছে, তারা হলো- খ্রিস্টান, মুসলিম, শিখ, বৌদ্ধ, পার্সি এবং জৈন।
সোমবার, বেঞ্চ পিটিশনকারীর আইনজীবীকে জানায় যে ১৯৫৭ সাল (কেরল শিক্ষা বিল মামলা) থেকে শীর্ষ আদালতের এই রায়ই দিয়েছে যে, ধর্মীয় এবং ভাষাগত সংখ্যালঘুদের ‘সংখ্যালঘু’ মর্যাদা রাষ্ট্র দ্বারাই নিশ্চিত করতে হবে।
আদালত আরো স্পষ্ট করে, ‘আপনি যদি আমাদের উদাহরণ দেন, যেখানে হিন্দুরা সংখ্যালঘু এবং কিছু নির্দেশিকা প্রয়োজন, সেক্ষেত্রে সম্ভবত আমরা এ বিষয়ে ভাবতে পারি। কিন্তু আপনি কোনো কোনো রাজ্যে হিন্দুদের সংখ্যালঘু হিসেবে ঘোষণা করার জন্য একটি সাধারণ ঘোষণা হোক চাইছেন। কেন আমরা এটা করতে যাব? আমরা কোনো সম্প্রদায়কে সংখ্যালঘু হিসেবে ঘোষণা করতে পারি না। কারণ আমাদের কাছে বিভিন্ন রাজ্যের পরিসংখ্যান বা অন্যান্য তথ্য নেই।’
দেবকিনন্দন ঠাকুরজির দায়ের করা মামলাটি বর্তমানে বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কাউলের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে বিচারাধীন। আবেদনে এনসিএমইআই আইনের ২ (চ) ধারার বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে যে লাদাখে হিন্দুদের সংখ্যা মাত্র ১%, মিজোরামে ২.৭৫%, লাক্ষাদ্বীপে ২.৭৭%, জম্মু ও কাশ্মিরে ৪%, নাগাল্যান্ডে ৮.৭৪%, মেঘালয়ে ১১.৫২%, অরুণাচল প্রদেশে ২৯%, পাঞ্জাবে ৩৮.৪৯% এবং মণিপুরে ৪১.২৯%। আবেদনে এনএমসি (জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন) এবং সংখ্যালঘু শিক্ষা কমিশন গঠনের বিষয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এই যুক্তি দেয়া হয়েছে যে কেন্দ্র এই প্রতিষ্ঠানগুলিকে ‘বিভাজন করে শাসন’ করার জন্য তৈরি করেছে।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।