আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের আহমেদাবাদের বিমান দুর্ঘটনায় উদ্ধার কাজ শেষ হয়েছে। এখন স্বজনদের মরদেহ বুঝে নিতে হাসপাতালে অপেক্ষা করছেন পরিবারের সদস্যরা। ভারতের বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। সূত্র: বিবিসি বাংলা।
এদিকে, উদ্ধারকাজে সমাপ্তি ঘাষোণার পর এয়ার ইন্ডিয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ওই বিমানে থাকা ২৪১ জন মারা গেছেন। একমাত্র জীবিত ব্যক্তিকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
তবে ব্রিটিশ নাগরিক ওই জীবিত ব্যক্তির ভাই, যিনি পাশের আসনেই বসেছিলেন, তিনি মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করতে পেরেছেন বিবিসির সংবাদদাতারা। এর বাইরে, মেডিকেল শিক্ষার্থীদের যে হোস্টেলের ওপরে বিমানটি ভেঙ্গে পড়েছিল, সেখানে অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়েছে বলে গত রাতে বিবিসিকে জানিয়েছিলেন ওই মেডিকেল কলেজের ডিন।
তবে, বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় মোট কতজনের মৃত্যু হয়েছে, তা এখনই সরকারিভাবে জানানো হয়নি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিহতদের ডিএনএ পরীক্ষার পরেই আনুষ্ঠানিকভাবে মৃতের সংখ্যা জানানো হবে।
ডিএনএ পরীক্ষার জন্য রাতভর অপেক্ষা করছেন স্বজন হারানো বহু মানুষ। সেই ভিড়ে যেমন বিমানটির যাত্রীদের পরিজনেরা আছেন, তেমনই আছেন দুই কেবিন ক্রু ইরফানের বাবা ও সিঙসনের চাচাতো ভাইও।
ময়নাতদন্তের ঘরের সামনে ভিড়: আহমেদাবাদের সিভিল হাসপাতালটিই বিমানবন্দরের সবথেকে কাছের হাসপাতাল। বিমানটি ভেঙ্গে পড়ার পর তাই সেখানেই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল উদ্ধার করা মরদেহ আর আহতদের। রাত প্রায় দেড়টা নাগাদ ওই হাসপাতালের ময়নাতদন্তের ঘরের সামনে বিবিসির সাংবাদিকদের সঙ্গে দেখা হয় টি থাঙলিঙো হাওকিপের সঙ্গে। তার চাচাতো বোন সিঙসন ছিলেন এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট ১৭১ এর বিমানবালা।
হাওকিপ বলেন, সিঙসনের খবরাখবর নিতে বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে চেষ্টা করছেন তিনি, তবে কোনো খবরই পাননি। ওর মা খুবই চিন্তায় আছে। ওর বাবা নেই, ভাইয়ের ক্যান্সার হয়েছে। পরিবারে একমাত্র রোজগার করত ও-ই। পুরো পরিবার ওর ওপরেই নির্ভর করত।
সিঙসনের সঙ্গেই ক্রু হিসেবে ওই বিমানে ছিলেন ইরফান। তার বাবা সামির শেখ জানান, খবর পেয়ে মহারাষ্ট্রের পুনে শহর থেকে তখনই বিমানে করে আহমেদাবাদ রওনা হয়ে গিয়েছিলেন ছেলের মরদেহ নিতে। এয়ার ইন্ডিয়ার কর্মকর্তারা তার ছেলের দেহ শনাক্ত করতে সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু পুলিশ তো ছেলেকে ফিরিয়ে নিতে দিচ্ছে না। বলছে, সব দেহগুলির ডিএনএ পরীক্ষা হলে তবেই তিনদিন পরে দেহ দেওয়া হবে।
তার স্ত্রী তখন রাস্তার এক ধারে বসে সমানে কেঁদে চলেছেন, আর তিনি নিজে হাসপাতাল চত্বরে একে তাকে ধরছেন, যদি কেউ সাহায্য করতে পারে। তার দিকে দেখিয়ে সামির শেখ বললেন, আমরা কী করব এখন! আমরা তো নিশ্চিত ওটা আমার ছেলেরই দেহ, তবুও তিনদিন অপেক্ষা করতে হবে আমাদের?
আহমেদাবাদে নরেন্দ্র মোদী, দেখা করেছেন একমাত্র জীবিত ব্যক্তির সাথে
বিবিসি সংবাদদাতা সামিরা হুসেইন জানাচ্ছেন, হাসপাতাল চত্বরে রাতভর আত্মীয় পরিজনেরা ডিএনএ পরীক্ষার জন্য রক্ত দিতে অপেক্ষা করেছেন। তবে, কর্মকর্তারা বলছেন, দেহ শনাক্ত করতে কিছুটা সময় লাগবে, কারণ বিমানটি ভেঙ্গে পড়ার অভিঘাতটা এতই বড় ছিল যে অনেক শরীরই আর শনাক্ত করার মতো অবস্থায় নেই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।