Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়েছেন যে সব বিদেশি নেতানেত্রী
    আন্তর্জাতিক স্লাইডার

    ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়েছেন যে সব বিদেশি নেতানেত্রী

    Soumo SakibAugust 18, 202411 Mins Read
    Advertisement

    আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নাটকীয় পরিস্থিতিতে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়ে বাংলাদেশের সদ্য-প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের রাজধানী দিল্লিতে অবতরণ করেছেন, তাও দিনদশেকের ওপর হয়ে গেল। ভারত সরকার প্রথমে ইঙ্গিত দিয়েছিল মধ্যপ্রাচ্য বা ইউরোপের তৃতীয় কোনও দেশই তার চূড়ান্ত গন্তব্য হতে যাচ্ছে – কিন্তু সেই সম্ভাবনা বাস্তবায়নের এখনও কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি। খবর বিবিসি বাংলা

    ঠিক কোন ‘ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাসে’ শেখ হাসিনা এই মুহুর্তে ভারতে রয়েছেন, স্পষ্ট করা হয়নি সেটাও।

    তবে ভারতে অনেক পর্যবেক্ষকই বলছেন, পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে শেখ হাসিনার ক্ষেত্রে ভারতকে হয়তো শেষ পর্যন্ত দীর্ঘকালীন ভিত্তিতে ‘রাজনৈতিক আশ্রয়’ দেওয়ার জন্যই প্রস্তুত থাকতে হবে। আর সেটাও হতে পারে বেশ লম্বা সময়ের জন্যই।

    আনুষ্ঠানিকভাবে ভারত সরকার অবশ্য এখনও এই ব্যাপারে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

       

    গত ৬ অগাস্ট ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর দেশের পার্লামেন্টে জানিয়েছিলেন, শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে তার আগের দিন (৫ অগাস্ট) ‘সাময়িকভাবে’ বা তখনকার মতো ভারতে আসার অনুমোদন চাওয়া হয় – যেটা মঞ্জুর করা হয়েছিল।

    এখনও পর্যন্ত ওটাই শেখ হাসিনার এ দেশে থাকার ব্যাপারে ভারত সরকারের শেষ ঘোষিত অবস্থান। শেখ হাসিনার দিল্লিতে থাকার মেয়াদ কত দীর্ঘায়িত হতে পারে, এ ব্যাপারে সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা নিজেরাও অন্ধকারে – স্বভাবতই তারা এটা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাইছেন না।

    শেখ হাসিনার ক্ষেত্রে এখন কী করা হবে তা নিয়ে এখনও অস্পষ্টতা থাকলেও অতীতে কিন্তু বিভিন্ন দেশের একাধিক নেতা, রাজনীতিবিদ বা তাদের পরিবারকে ভারত রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে।

    এমন কী শেখ হাসিনা নিজেও ১৯৭৫-এ পিতা শেখ মুজিবর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর ব্যক্তিগত জীবনে যখন চরম সঙ্কটে – তখন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর কাছ থেকে রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়েছিলেন।

    সেই যাত্রায় স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে প্রায় দীর্ঘ ছ’বছর ভারতে কাটিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। যদিও নিরাপত্তার স্বার্থে দিল্লির পান্ডারা পার্কে তাদের সেই বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছিল ভিন্ন নাম ও পরিচয়ে।

    প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নির্দেশে বাঙালি কংগ্রেস নেতা প্রণব মুখার্জি তখন শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের স্থানীয় অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করতেন, সেই সুবাদে তাদের মধ্যে গড়ে উঠেছিল নিবিড় ব্যক্তিগত হৃদ্যতাও। যে কারণে আজীবন প্রণব মুখার্জিকে ‘কাকাবাবু’ বলেই সম্বোধন করে এসেছেন শেখ হাসিনা।

    তারও কয়েক বছর আগে একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় তাজউদ্দিন আহমেদ-সহ আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতা ভারতে পালিয়ে চলে এলে তাদেরও আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল।

    তাজউদ্দিন আহমেদ, সৈয়দ নজরুল ইসলামদের নেতৃত্বে এরপর গড়ে তোলা হয় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকার, যার কর্মকাণ্ড পরিচালিত হতো মূলত কলকাতা থেকেই।

    ১৯৭৫-এ শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের কিছুদিন পর বাংলাদেশে জীবন বিপন্ন হলে মুক্তিযোদ্ধা কাদের সিদ্দিকীও ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় পান।

    এরপর পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান শহরের একটি সরকারি ‘সেফ হাউসে’ বহু বছর কাটিয়েছিলেন ‘বাঘা সিদ্দিকী’ নামে পরিচিত ওই নেতা।

    কিন্তু শুধু শেখ হাসিনা বা বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতানেত্রীরাই নন – এদেশে বিভিন্ন সরকারের আমলে আরও বহু দেশের অনেক নেতা বা তাদের পরিবারও কিন্তু ভারতে আশ্রয় পেয়েছেন।

    তাদের মধ্যে কেউ বছর কয়েক পরে নিজ দেশে বা অন্যত্র ফিরে গেছেন, কাউকে আবার পাকাপাকিভাবে ভারতেই থেকে যেতে হয়েছে।

    ইতিহাসের পাতা উল্টে এই প্রতিবেদনে ফিরে তাকানো হয়েছে এরকমই কয়েকটি দৃষ্টান্তের দিকে।

    দালাই লামা (১৯৫৯)
    ঐতিহাসিক রামচন্দ্র গুহ তার আকরগ্রন্থ ‘ইন্ডিয়া আফটার গান্ধী’তে লিখেছেন :

    “১৯৫৯ সালের মার্চ মাসের শেষ দিনটিতে দালাই লামা ম্যাকমোহন লাইন অতিক্রম করে ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের ভূখণ্ডের প্রবেশ করেন। তার আগে বেশ কয়েক বছর ধরে তিব্বতের এই ‘ঈশ্বর-রাজা’ লাসা-য় তার পোটালা প্যালেসের সিংহাসনে দিন কাটাচ্ছিলেন চরম অস্বস্তির মধ্যে, কারণ তিব্বতের ওপর চীনের কব্জা ক্রমশ এঁটে বসছিল। একটি সূত্র জানাচ্ছে, তখনই অন্তত পাঁচ লক্ষ চীনা সৈন্য তিব্বতে মোতায়েন ছিল, পাশাপাশি আরও ছিল তার অন্তত দশগুণ হুন বসতি স্থাপনকারী।”

    ১০ মার্চ ১৯৫৯ তিব্বতে মোতায়েন চীনের একজন জেনারেল একটি নাচের অনুষ্ঠানে দালাই লামাকে আসার আমন্ত্রণ জানান – কিন্তু এটাও বলে দেওয়া হয় যে তার দেহরক্ষীরা সেখানে ঢুকতে পারবে না। অনুষ্ঠানের দিন হাজার হাজার তিব্বতি দালাই লামার প্রাসাদের সামনে জড়ো হয়ে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন।

    তিব্বতিরা বহুদিন ধরেই সন্দেহ করছিলেন যে তাদের ধর্মগুরুকে চীনারা অপহরণ করার ষড়যন্ত্র আঁটছে, এই ঘটনায় তাদের সেই ধারণা আরও বদ্ধমূল হয়।

    এর ঠিক আগের বছরই (১৯৫৮) পূর্ব তিব্বতের খাম্পা জনজাতি এই চীনা ‘দখলদার’দের বিরুদ্ধে সশস্ত্র অভ্যুত্থান করেছিল। খাম্পারা শুরুতে কিছুটা সাফল্য পেলেও চীনা বাহিনী খুব শক্ত হাতে সেই বিদ্রোহ দমন করে এবং এরপর দালাই লামাকে পর্যন্ত নিশানা করার ইঙ্গিত দিতে থাকে।

    ইতিমধ্যে লাসায় নিযুক্ত ভারতীয় কনসালের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিলেন তিব্বতি নেতৃত্ব। ২৩ বছর বয়সী দালাই লামাকে ভারত রাজনৈতিক আশ্রয় দিতে প্রস্তুত, এই আশ্বাস মেলার পর গোপনে রাতের অন্ধকারে কয়েকজন বাছাই-করা বিশ্বস্ত সঙ্গীকে নিয়ে তিনি ছদ্মবেশে লাসা ত্যাগ করেন।

    রামচন্দ্র গুহ আরও লিখছেন. “ভারতের মাটিতে দালাই লামা তার প্রথম রাতটি কাটান তাওয়াং-এর একটি বৌদ্ধ মনাস্টারিতে। তারপর তিনি ক্রমশ পাহাড় থেকে নেমে আসেন সমতলে, পৌঁছান আসামের শহর তেজপুরে। সেখানে ভারতের কর্মকর্তারা লম্বা সময় ধরে তাকে ‘ডিব্রিফ’ করেন। ঠিক তিন সপ্তাহ পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়ার জন্য তাকে নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লিতে।”

    ৩রা এপ্রিলই প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু পার্লামেন্টে ঘোষণা করেছিলেন, তিব্বতি ধর্মগুরু দালাই লামা – যাকে তার অনুগামীরা ভগবান বুদ্ধের জীবন্ত অবতার বলে মনে করেন – তিনি ভারতে চলে এসেছেন এবং ভারত সরকার তাকে ‘রাজনৈতিক আশ্রয়’ দিয়েছে।

    পন্ডিত নেহরু সে দিন সভায় আরও জানান, দালাই লামা শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন এবং ভারত এই অতিথিকে তার যথাযোগ্য সম্মান ও মর্যাদা দেবে।

    পরদিন দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় লেখা হয়েছিল, একমাত্র কমিউনিস্ট বা বামপন্থীরা ছাড়া ভারতের সব দল ও মতের মানুষজন এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছিল।

    তারা আরও জানায়, “দিল্লিতে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত প্যান সে-লিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে পার্লামেন্টে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতির একটি প্রতিলিপিও ধরিয়ে দেওয়া হয়।”

    সেই থেকে আজ ৬৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে দালাই লামা ভারতের রাজনৈতিক আশ্রয়েই রয়েছেন।

    হিমাচল প্রদেশের জোড়া শৈলশহর ধরমশালা ও ম্যাকলিয়ডগঞ্জে হাজার হাজার তিব্বতি সেই তখন থেকে আজও বসবাস করেন, তিব্বতের ‘প্রবাসী সরকার’ও (গভর্নমেন্ট ইন এক্সাইল) সেখান থেকেই পরিচালিত হয়।

    তিব্বত গবেষক টিম লি-র কথায়, “ভারতে দালাই লামার উপস্থিতি বিগত বহু দশক ধরে ভারত ও চীনের সম্পর্ককে প্রভাবিত করে এসেছে, কিন্তু ভারতের কোনও সরকারই তিব্বতিদের রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া নিয়ে কখনও দ্বিতীয়বার ভাবেনি।”

    বস্তুত তিব্বতের সঙ্গে ভারতের আবহমান কাল থেকেই সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক বন্ধন ছিল খুবই শক্তিশালী। ভারত চিরকালই তিব্বতকে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবেই গণ্য করত, সীমান্তও ছিল শান্তিপূর্ণ।

    টিম লি জানাচ্ছেন, “এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটে ১৯৫৪ সালে, যখন ভারত চীনের সঙ্গে ‘পঞ্চশীল চুক্তি’তে স্বাক্ষর করে এবং তিব্বতকে ‘চীনের একটি অঞ্চল’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।”

    কিন্তু এরপর যখন থেকে হাজার হাজার তিব্বতি চীনের নিপীড়ণে ভারতে পালিয়ে আসতে শুরু করেন এবং চীনও জানিয়ে দেয় দু’দেশের আন্তর্জাতিক সীমানা বলে স্বীকৃত ‘ম্যাকমোহন লাইন’কে তারা মানে না – তিব্বত নিয়ে ভারত তাদের নীতি পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হয়।

    এরই পরিণতিতে জওহরলাল নেহরুর সরকার দালাই লামাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় – যেটা ছিল স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে কোনও বিদেশি ধর্মীয় নেতাকে এভাবে আতিথেয়তা দেওয়ার প্রথম ঘটনা।

    মোহাম্মদ নাজিবুল্লাহ্ (১৯৯২)
    মোহাম্মদ নাজিবুল্লাহ আহমদজাই, যিনি শুধু ‘নাজিবুল্লাহ’ নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন – তিনি ১৯৮৬ সালে সোভিয়েতের সমর্থনে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট পদে আসীন হন।

    প্রায় ছ’বছর প্রেসিডেন্ট পদে থাকার পর ইসলামি মুজাহিদিনরা যখন ১৯৯২ সালের এপ্রিলে কাবুল দখল করে, তখন প্রেসিডেন্ট পদে ইস্তফা দিয়ে নাজিবুল্লাহ ভারতের কাছে আশ্রয় চান, তা মঞ্জুরও হয় সঙ্গে সঙ্গেই।

    ভারতের সঙ্গে আফগান রাজনীতিক নাজিবুল্লাহ্-র ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল কিশোর বয়স থেকেই, ভারত-শাসিত কাশ্মীরের বারামুলার একটি সেকেন্ডারি স্কুলে তিনি নিজে পড়াশুনোও করেছেন।

    তবে ১৯৯২তে ভারতে আসার চেষ্টায় এয়ারপোর্টে আসার পথেই আফগান নিরাপত্তারক্ষীরা নাজিবুল্লাহ্-কে আটকে দেন, তার আর দিল্লির বিমানে চাপা সম্ভব হয়নি।

    নিজের জীবন বাঁচাতে নাজিবুল্লাহ্ এরপর গিয়ে আশ্রয় নেন কাবুলে জাতিসংঘের কার্যালয়ে, যেখানে মুজাহদিনরা চট করে ঢুকতে পারবে না বলে তিনি ধারণা করেছিলেন।

    এই ঘটনার কয়েক মাস আগেই বিপদ আঁচ করে প্রেসিডেন্ট নাজিবুল্লাহ্ তার স্ত্রী ও তিন কন্যা সন্তানকে গোপনে ভারতে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু সেই তথ্য তখন প্রকাশ করা হয়নি।

    অনেক পরে ভারত সরকার জানিয়েছিল, নাজিবুল্লাহ্-র পরিবারকে মধ্য দিল্লির ল্যুটিয়েন্স জোনে একটি বাড়িতে সরকারি আতিথেয়তায় রাখা হয়েছে। তাদের খরচ নির্বাহের জন্য ভারত সরকার মাসে এক লক্ষ রুপির ভাতা দিচ্ছে, ব্যবস্থা করা হয়েছে নিরাপত্তারও।

    ১৯৯৬ সালে ভারতের তদানীন্তন যুক্তফ্রন্ট সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইন্দ্রকুমার গুজরাল দেশের পার্লামেন্টে জানান, “প্রেসিডেন্ট নাজিবুল্লাহ্-র পরিবার ১৯৯২ থেকেই ভারতে রয়েছেন।

    তিনি আরও বলেন, “আমি মিসেস নাজিবুল্লাহ্-কে বলেছি, ভবিষ্যতে আপনি বা আপনার পরিবারের সদস্যরা কী করবেন সেই সিদ্ধান্ত অবশ্যই আপনাদের – কিন্তু আপনারা যতদিন খুশি ভারতের সম্মানিত অতিথি হিসেবে আমাদের মাঝে থাকতে পারেন এবং আপনাদের পরিবারের দেখাশুনোর জন্য যা করতে হয় তা আমরা সব সময় করতে প্রস্তুত থাকব।”

    নাজিবুল্লাহ্-র স্ত্রী ও সাবেক আফগান ফার্স্ট লেডি ফাতানা নাজিব ও তার তিন কিশোরী কন্যা – হিলা, মোসকা ও ওনাই – এরপর বহু বছর দিল্লিতেই পড়াশুনো করেছেন, কাটিয়েছেন ভারতের রাজধানীতেই।

    মোসকা নাজিব এখন একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন লেখক ও আলোকচিত্রী, দিল্লিতে থাকাকালীন বেশ কিছুদিন তিনি বিবিসির দিল্লি ব্যুরোতেও কাজ করেছেন। তার অন্য বোনরাও সবাই অবশ্য এখন বিদেশে থাকনে – কেউ সুইটজারল্যান্ডে, কেউ সিঙ্গাপুরে।

    তবে ১৯৯২তে কাবুল ছেড়ে দিল্লি চলে আসার পর ফাতানা নাজিব বা তার মেয়েদের সাথে নাজিবুল্লাহ্-র আর জীবনে কখনও দেখা হয়নি।

    ১৯৯৬ তে নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের হাত থেকে তালেবান যখন কাবুল দখল করে নেয়, অ্যালায়েন্সের নেতা আহমেদ শাহ মাসুদ নাজিবুল্লাহ্-কেও শহর থেকে পালানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন।

    কিন্তু নাজিবুল্লাহ্-র ধারণা ছিল, তিনি নিজে যেহেতু একজন পাশতুন এবং তালেবানের মধ্যে পাশতুনদেরই প্রাধান্য বেশি, তাই তাকে অন্তত তালেবান কিছু করবে না।

    সেই ধারণা অচিরেই ভুল প্রমাণিত হয়। ১৯৯৬ সালের ২৭শে সেপ্টেম্বর তালেবান যোদ্ধারা কাবুলে জাতিসংঘের কম্পাউন্ডে ঢুকে সাবেক প্রেসিডেন্ট নাজিবুল্লাহ্-কে হিড়হিড় করে টেনে বের করে আনে।

    এরপর প্রকাশ্যে তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়, গুলি করে মারা হয় এবং কাবুলে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের ঠিক বাইরে একটি ল্যাম্পপোস্টের পোল থেকে তার দেহটি ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।

    কাবুলের রাজপথে নাজিবুল্লাহ্-র সেই ঝুলন্ত দেহের ছবি তালেবানের নির্মমতার নিদর্শন হিসেবে পরে বহু জায়গায় প্রদর্শিত হয়েছে।

    নাজিবুল্লাহ্ ছিলেন এমন একজন আফগান নেতা, ভারতের কাছ থেকে রাজনৈতিক আশ্রয়ের নিশ্চয়তা পেয়েও যিনি শেষ পর্যন্ত ভারতে এসে পৌঁছতেই পারেননি এবং নিজের জীবনও রক্ষা করতে পারেননি।

    তার পরিবারের বাকি সদস্যরা অবশ্য ভারতের আশ্রয়েই নতুন করে নিজেদের জীবন গড়ে তুলতে পেরেছিলেন।

    মোহামেদ নাশিদ (২০১৩)
    মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট তথা রাজনৈতিক অ্যাক্টিভিস্ট মোহামেদ নাশিদকে ভারত রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছিল এক বিচিত্র পরিস্থিতিতে।

    মোহামেদ নাশিদ এর আগে ২০০৮ সালে মালদ্বীপে প্রেসিডেন্ট মামুন আবদুল গায়ুমের একটানা তিরিশ বছরের শাসনের অবসান ঘটিয়ে দেশের ক্ষমতায় এসেছিলেন।

    ২০১২ সালে সে দেশে এক রাজনৈতিক সংকটের জেরে অবশ্য তাকে পদত্যাগ করতে হয়।

    অপসারিত প্রেসিডেন্ট মোহামেদ নাশিদের বিরুদ্ধে ২০১৩র ১৩ই ফেব্রুয়ারি সে দেশের আদালত একটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।

    সেই ওয়ারেন্টের ভিত্তিতে পুলিশ তাকে গ্রেফতা্র করার আগেই মি নাশিদ সটান চলে যান রাজধানী মালে-র ভারতীয় হাই কমিশন ভবনে।

    ভারতের সঙ্গে তার অবশ্য আগে থেকেই সুসম্পর্ক ছিল, কিন্তু তিনি যে সোজা ভারতীয় দূতাবাসে গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইতে পারেন এটা ভারতের কর্মকর্তারাও অনেকে ভাবতে পারেননি।

    দিল্লির সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ে দ্রুত আলোচনা করেন তদানীন্তন ভারতীয় হাই কমিশনার, এরপর সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহামেদ নাশিদকে রাজনৈতিক আশ্রয় মঞ্জুর করে মনমোহন সিং সরকার।

    তবে এই পরিস্থিতি বেশিদিন স্থায়ী হয়নি, কয়েক দিন পরেই অভ্যন্তরীণ সমঝোতার ভিত্তিতে মি নাশিদ গ্রেফতারি থেকে অব্যাহতি পান – এমন কী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন সে বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও। ভারতও মুক্তি পায় একটি অস্বস্তিকর পরিস্থিতি থেকে।

    পরে অবশ্য ভিন্ন পরিস্থিতিতে মোহামেদ নাশিদকে ২০১৬ তে যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক আশ্রয়ও নিতে হয়েছিল, আবার তিন বছর পর তিনি ফিরে এসেছিলেন মালদ্বীপের রাজনীতিতেও। হয়েছিলেন দেশের পার্লামেন্টের স্পিকারও।

    তবে মোহামেদ নাশিদ ভারতের কাছ থেকে বিপদের সময় যে সাহায্য পেয়েছিলেন, মালদ্বীপের সাবেক ভাইস-প্রেসিডেন্ট আহমেদ আদিব আবদুল গফুরের কিন্তু সেই সৌভাগ্য হয়নি!

    ২০১৯ সালে মালদ্বীপের এই রাজনীতিবিদ একটি কার্গো ভেসেল বা মালবাহী জাহাজে চেপে ভারতের তামিলনাডু উপকূলে এসে ভেড়েন।

    ওই জাহাজে তিনি ছাড়াও আরও ন’জন ক্রু সদস্য ছিলেন, তারা সবাই ভারতের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেন।

    কিন্তু মি গফুরকে জাহাজ থেকে নামতে দেওয়া হয়নি, ভারতের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা জাহাজে উঠে সাবেক ভাইস-প্রেসিডেন্টকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং শেষ পর্যন্ত তার আবেদন নাকচ করে দেওয়া হয়।

    পরে জাহাজটিকে ফিরিয়ে দেওয়া হলে মালদ্বীপের পুলিশ তাদের সমুদ্রসীমায় আদিব আবদুল গফুরকে গ্রেফতার করে।

    রাজা ত্রিভুবন শাহ (১৯৫০), রাজা জ্ঞানেন্দ্রকে প্রস্তাব (২০০৮)
    ১৯৫০ সালের নভেম্বরে নেপালের তখনকার মহারাজা ত্রিভুবন বীর বিক্রম শাহ তার ছেলে মহেন্দ্র, সব চেয়ে বড় নাতি বীরেন্দ্র ও পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে কাঠমান্ডুর ভারতীয় দূতাবাসে আশ্রয় নেন।

    নেপালের রাজবংশের সঙ্গে রানাদের (যাদের হাতে ছিল দেশের শাসনক্ষমতা) বহুদিন ধরে চলা সংঘাতের জেরেই একটা পর্যায়ে রাজা ত্রিভুবন ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

    রাজা ত্রিভুবন শাহ ভারতের কাছে আশ্রয় চাওয়ায় চটে লাল হয়ে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোহন শামসের জং বাহাদুর রানা।

    প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই সিংহ দরবারে জরুরি ক্যাবিনেট বৈঠক ডেকে প্রধানমন্ত্রী রানা সিদ্ধান্ত নেন, ত্রিভুবন শাহ্-র চার বছর বয়সী বাচ্চা নাতি জ্ঞানেন্দ্র – যিনি পিতামহর সঙ্গে ভারতীয় দূতাবাসে যেতে পারেননি – তাকেই নেপালের নতুন রাজা ঘোষণা করা হবে।

    এর তিনদিন পর (১০ নভেম্বর ১৯৫০) নেপালের কাঠমান্ডুতে গোওচর বিমানবন্দরে দুটি ভারতীয় এয়ারক্র্যাফট এসে নামে, যাতে করে ত্রিভুবন শাহ ও পরিবারের অন্যরা (শিশু রাজা জ্ঞানেন্দ্রকে ফেলেই) দিল্লিতে রওনা হয়ে যান। ঘটনাচক্রে ওই এয়ারপোর্টের এখন নামকরণ করা হয়েছে রাজা ত্রিভুবন শাহ-র নামেই।

    দিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ও অন্য সরকারি কর্মকর্তারা তাদের স্বাগত জানান। রাজা ত্রিভুবন শাহ ও পরিবারের বাকি সবাইকে ভারত রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়।

    তবে রাজা ত্রিভুবন শাহ্-কে মাস তিনেকের বেশি ভারতে থাকতে হয়নি। রাজার দেশত্যাগে নেপাল জুড়ে রানাদের বিরুদ্ধে যে তীব্র বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল, তাতে সরকার ত্রিভুবন শাহর সঙ্গে সমঝোতা করতে বাধ্য হয় – যে আলোচনায় ভারতও মধ্যস্থতা করেছিল।

    ১৯৫১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি নেপালের ‘মনার্ক’ বা মহারাজা হিসেবে ত্রিভুবন বীর বিক্রম শাহ দেশে প্রত্যাবর্তন করেন।

    ঘটনাচক্রে সেই ঘটনার প্রায় সাতান্ন বছর পর নেপাল থেকে যখন রাজতন্ত্রের বিলোপ ঘটছে, সে সময়কার ‘শিশু রাজা’ জ্ঞানেন্দ্র শাহ তখন দেশের সিংহাসনে!

    রাজার ওপর তখন দেশ ছাড়ার জন্য প্রচণ্ড চাপ, নির্বাচনে জয়ী হয়ে মাওবাদীরাও জ্ঞানেন্দ্রকে প্রাসাদ ছাড়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন।

    সম্প্রতি বিবিসি নেপালি বিভাগের একটি প্রতিবেদনে সে সময়কার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কমল থাপা জানিয়েছেন, রাজা জ্ঞানেন্দ্রকে আশ্রয় দিতে চেয়ে বাইরের অনেকগুলো দেশই তখন প্রস্তাব দিয়েছিল।

    “আমি একাধিক দেশের কথাই তখন শুনেছিলাম, তবে ভারতও যে সেই তালিকায় ছিল সে কথা আমি নিশ্চিতভাবেই বলতে পারি”, বিবিসি নেপালিকে বলেছেন কমল থাপা।

    এদিকে ভারত নেপালের রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহ্-কে রাজনৈতিক আশ্রয় দিচ্ছে কি না, ভারতের তদানীন্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রণব মুখার্জিকেও বারবার সে প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছিল।

    প্রণব মুখার্জি অবশ্য প্রতিবারই সে প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছিলেন। তবে ভারত এই ধরনের প্রস্তাব দেয়নি, এ কথাও তিনি কখনও বলেননি।

    ফলে ভারত রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহ্-কে আশ্রয় দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে রেখেছিল এটা মনে করার যথেষ্ঠ কারণ আছে – যদিও তিনি তা শেষ পর্যন্ত গ্রহণ করেননি।

    নেপালের ইতিহাসে দু’দুবার সিংহাসনে বসা একমাত্র ব্যক্তি ও শাহ্ রাজবংশের শেষ শাসক জ্ঞানেন্দ্র বীর বিক্রম শাহ শেষ পর্যন্ত নেপালেই রয়ে গিয়েছিলেন – এবং ভারতের রাজনৈতিক আশ্রয় দানের তালিকাকে আর দীর্ঘ করেননি!

    মার্কিন প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে রাশিয়া

    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    আন্তর্জাতিক আশ্রয়, নেতানেত্রী পেয়েছেন! বিদেশি ভারতে রাজনৈতিক সব স্লাইডার
    Related Posts
    salauddin

    শিগগির আসনভিত্তিক একক প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবে বিএনপি

    October 3, 2025
    NCP

    ‘শাপলা’ কেন লাগবে, ব্যাখ্যা দিল এনসিপি

    October 3, 2025
    nirvana

    অ্যালবামের কভারে শিশুর উ ‘লঙ্গ ছবি, বড় হয়ে মামলা

    October 3, 2025
    সর্বশেষ খবর
    Optical illusion

    Optical illusion কিভাবে মস্তিষ্কের কার্যকলাপে প্রভাব ফেলে

    salauddin

    শিগগির আসনভিত্তিক একক প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবে বিএনপি

    NCP

    ‘শাপলা’ কেন লাগবে, ব্যাখ্যা দিল এনসিপি

    Bournemouth vs Fulham prediction, time, where to watch

    Bournemouth vs Fulham Prediction, Time, Where and How to Watch

    San Jose Sharks vs Vegas Golden Knights

    San Jose Sharks vs. Vegas Golden Knights: Final Preseason Clash Tonight

    Edmonton Oilers vs Vancouver Canucks

    Edmonton Oilers vs Vancouver Canucks: Time, How to Watch & Pick

    Winnipeg Jets vs. Calgary Flames

    Winnipeg Jets vs. Calgary Flames: Time, TV, Stream & Predictions

    Cardi B Nicki Minaj

    Cardi B–Nicki Minaj feud: sarcastic apologies spark fresh drama

    D4vd Celeste Rivas case update

    D4vd Celeste Rivas case update: Manager breaks silence

    Diddy net worth

    Diddy Net Worth in 2025: Latest Estimate and What Could Change After Sentencing

    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    • Feed
    • Banglanews
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.