আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আপত্তিতে স্থল-বন্দর খুলতে না পেরে বাংলাদেশে পণ্য পরিবহনের জন্য রেলপথকেই বেছে নিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে ইতোমধ্যেই দুই হাজার টন পেঁয়াজের চালান নিয়ে একটি মালবাহী ট্রেন বাংলাদেশের পথে রওনা দিযেছে। এ চালান রোজার মাসে দেশে পেঁয়াজের দাম কমাতে সাহায্য করবে বলে আশা করছে ভারত।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি আছে, এই যুক্তিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার বেনাপোল এবং হিলিসহ অন্যান্য স্থলবন্দর বন্ধ রেখেছে। ফলে বাধ্য হয়ে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারকে আপাতত রেলের ওপরই ভরসা করতে হচ্ছে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। গত মাসের শেষ দিনে সীমিত আকারে চালু হওয়ার তিনদিন পরেই স্থানীয়দের বাধায় পেট্রাপোল-বেনাপোল স্থল বন্দরে আমদানি-রফতানি বন্ধ হয়ে যায়।
বাংলাদেশে মালপত্র পাঠানোর ক্ষেত্রে ‘ভারতের একটা আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতা আছে’ এই মর্মে কড়া চিঠি দিয়েও পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে টলাতে পারেনি দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। পশ্চিমবঙ্গের স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় গত সপ্তাহেই বুঝিয়ে দেন, তারা আপাতত স্থলবন্দর খুলে দিতে রাজি নন।
তিনি বলেন, ‘পেট্রাপোলের ক্ষেত্রে কিছু পাবলিক ইস্যু আছে। ওখানে সীমান্তের মানুষ কিছুটা ইমোটিভ কমোশনে বা আবেগতাড়িত অস্থিরতার মধ্যে আছেন। ফলে আমাদের সেটা মাথায় রেখেই পুরো বিষয়টি পরিচালনা করতে হচ্ছে।’
‘আসলে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অনেকগুলো ইস্যুই জড়িত। সেগুলো বিবেচনার পরই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে’ জানিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের স্বরাষ্ট্রসচিব।
এরপরই সড়কপথের বিকল্প হিসেবে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার রেলপথের কথা ভাবতে শুরু করে যে পরিষেবা পুরোটাই ভারত সরকারের অধীন। সে অনুযায়ী মহারাষ্ট্রের নাসিকের কাছে লাসলগাঁও স্টেশন থেকে সোমবার পেঁয়াজ-বোঝাই একটি মালবাহী ট্রেন রওনা দেয় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে। ৫৬ ঘণ্টার যাত্রা শেষে ট্রেনটি গতকাল বুধবার সীমান্তের গেদে-দর্শনা চেকপোস্টে পৌঁছনোর কথা রয়েছে।
দিল্লির থিঙ্কট্যাঙ্ক বিবেকানন্দ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ফেলো শ্রীরাধা দত্ত বলেন, রোজার মাসে বাংলাদেশে পেঁয়াজ পৌঁছে দেয়ার মরিয়া চেষ্টাতেই ভারত এই পদক্ষেপ নিয়েছে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশ বেশকিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের জন্য ভারতের ওপর নির্ভর করে, যার একটি হলো পেঁয়াজ। এই পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়েই রেল কার্গোর কথা ভাবতে হয়েছে। রেলটা পুরোপুরি কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে ও নিয়ন্ত্রণে তারা জানেন এই সার্ভিসটা কীভাবে চালু রাখা যায়।
‘আর বাংলাদেশে এখন যে জিনিসটার চাহিদা তুঙ্গে, সেটা যদি ভারত দ্রুত সেখানে পৌঁছে দিতে না পারে তাহলে পরে তো সেটার আর সেই মূল্য থাকে না’ বলছেন ড. দত্ত।
সূত্র : বিবিসি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।