আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে সাম্প্রতিক প্রাণঘাতী হামলা বিশ্বের অন্যতম সামরিকভাবে সুরক্ষিত অঞ্চলে একটি গুরুতর নিরাপত্তা ব্যর্থতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। ভারত পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে, এই হামলা দুটি পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশীর সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলেছে।
নিরাপত্তা ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুসারে, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পর্যটকদের লক্ষ্য করে ঘটে যাওয়া এই হামলা বিরোধী রাজনীতিক এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মনে এক বড় প্রশ্ন তুলেছে—দুপুরবেলায় এত সুরক্ষিত অঞ্চলে কীভাবে এমন একটি নৃশংস ঘটনা ঘটল?
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজনীতিকদের সঙ্গে এক বৈঠকে স্বীকার করেছেন যে, এটি একটি স্পষ্ট নিরাপত্তা ঘাটতির ফল। কংগ্রেসের মতে, সন্ত্রাসীদের মধ্যে হামলার স্থান ঘিরে যোগাযোগ ছিল, কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনী তা প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
গোয়েন্দা ব্যর্থতা ও সেনা অনুপস্থিতি
অমিত শাহ কিংবা ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর গোয়েন্দা ব্যর্থতার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
সাবেক সেনা কর্নেল ও ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক সুশান্ত সিং বলেন, “এজেন্সিগুলোর উচিত ছিল অন্তত কিছু তথ্য থাকা যে কোনো গোষ্ঠী এমন হামলার পরিকল্পনা করছে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “তারা হয় তথ্য সংগ্রহে ব্যর্থ হয়েছে, অথবা বিশ্লেষণে ভুল করেছে—উভয়ই গুরুতর ব্যর্থতা।”
ভারত পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক উত্তেজনার মাঝে, এসব গোয়েন্দা ব্যর্থতা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
হামলার স্থানে নিরাপত্তাহীনতা
ভারতীয় কর্মকর্তাদের মতে, হামলার স্থানে কোনো সেনা উপস্থিত ছিল না এবং নিকটতম সেনা ইউনিট ছিল প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে। কংগ্রেস নেতা সিদ্দারামাইয়া প্রশ্ন তুলেছেন, “এটা কি নিরাপত্তা ব্যর্থতা নয়?”
সন্ত্রাসীদের সক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ
কর্ণেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস-এর সিনিয়র ফেলো অ্যাশলি টেলিস বলেন, “এই হামলা প্রমাণ করে যে, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সন্ত্রাসীদের সক্ষমতা বেড়েছে।”
তিনি বলেন, সরকার আগে প্রযুক্তিগত ও মানব গোয়েন্দা দিয়ে নজরদারি করত। কিন্তু এখন সন্ত্রাসীরা নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থায় আরও দক্ষ হয়ে উঠেছে, যা ভারত পাকিস্তানের মধ্যকার নিরাপত্তা দৃষ্টিকোণ থেকে এক উদ্বেগজনক দিক।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পদেও আইএসআই প্রধান মালিক
পহেলগাঁও হামলাটি ভারত পাকিস্তানের মধ্যে বর্তমান উত্তেজনা আরও ঘনীভূত করছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থার ফাঁকফোকর এবং গোয়েন্দা ব্যর্থতা এ ধরনের হামলার ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তুলছে, যা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে বিপজ্জনক পথে নিয়ে যেতে পারে।
Get the latest News first— Follow us on Zoombangla Google News, Zoombangla X(Twitter) , Zoombangla Facebook, Zoombangla Telegram and subscribe to our Zoombangla Youtube Channel.