বিশ্বজুড়ে গেমারদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ভিডিও গেমের মাধ্যমে ম্যালওয়্যার ছড়ানো। একাধিক জনপ্রিয় গেমে পাওয়া গেছে ক্ষতিকর সফটওয়্যার। এটি গেমারদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ সিস্টেম নষ্ট পর্যন্ত করতে সক্ষম।
বিভিন্ন অ্যান্টিভাইরাস কোম্পানি ও সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা এই ম্যালওয়্যার শনাক্ত করেছেন। তারা গেমারদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। সরকারি সাইবার সুরক্ষা সংস্থাগুলোও বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে।
গিল্ড ওয়ার্স ২-এ স্পাইওয়্যার
এরিনানেট কোম্পানি তাদের গিল্ড ওয়ার্স ২ গেমে স্পাইওয়্যার যুক্ত করেছিল। এই সফটওয়্যার গেমারদের কম্পিউটার স্ক্যান করছিল। এটি চিটিং সফটওয়্যার খুঁজে বের করার দাবি করেছিল।
প্রায় ১,৬০০ গেমারকে এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়েছিল। অনেক গেমার এটিকে তাদের গোপনীয়তার উপর হস্তক্ষেপ বলে মনে করেছিলেন। ঘটনাটি ২০১৮ সালের মার্চ মাসে ঘটে।
মাইক্রোসফট ফ্লাইট সিমুলেটরের বিপদ
ফ্লাইট সিম ল্যাবস তাদের এ৩২০ এয়ারলাইনার অ্যাড-অনে ম্যালওয়্যার যুক্ত করে। এই ম্যালওয়্যার গুগল ক্রোম থেকে ব্যবহারকারীর নাম ও পাসওয়ার্ড চুরি করত। ডেভেলপাররা দাবি করেছিল এটি পাইরেসি রোধ করার জন্য।
কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা লেফটেরিস কালামারাস এই কর্মকাণ্ড স্বীকার করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন এটি শুধু পাইরেটেড কপি ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করে তৈরি। তবে অনেক গেমার নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন।
মাইনক্রাফট স্কিনে ম্যালওয়্যার
২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে মাইনক্রাফট গেমের স্কিন ফাইলে পাওয়া গিয়েছিল শক্তিশালী ম্যালওয়্যার। প্রায় ৫০,০০০ গেমারের কম্পিউটার এই ম্যালওয়্যারে আক্রান্ত হয়েছিল। এটি হার্ড ড্রাইভ ফরম্যাট করে দিতে সক্ষম ছিল।
ম্যালওয়্যারটি ছিল একটি PowerShell স্ক্রিপ্ট। এটি PNG ফাইলের মধ্যে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। মজাং স্টুডিওস দ্রুত সমস্যাটির সমাধান করে।
গেমারদের জন্য সতর্কতা
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা গেমারদের নিয়মিত অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহারের পরামর্শ দেন। অফিসিয়াল স্টোর থেকে গেম ডাউনলোড করা সবচেয়ে নিরাপদ। সন্দেহজনক কোনো অ্যাড-অন বা মড ডাউনলোড করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
গেম আপডেট করার আগে ভ্যারিফাই করতে হবে সেটি অফিসিয়াল কিনা। কোনো গেম ক্রয় করার আগে ব্যবহারকারীর রিভিউ পড়ে নেওয়া উচিত। সন্দেহজনক কোনো কাজকর্ম দেখা গেলে immediately রিপোর্ট করতে হবে।
ম্যালওয়্যার থেকে সুরক্ষার উপায়
গেমারদের উচিত তাদের অপারেটিং সিস্টেম নিয়মিত আপডেট রাখা। শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে এবং টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন এনাবল রাখতে হবে। ব্যাকআপ ডেটা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, **ভিডিও গেম ম্যালওয়্যার** এর হাত থেকে রক্ষা পেতে সচেতনতাই সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। গেমিং কমিউনিটিকে একসাথে কাজ করতে হবে এই সমস্যা মোকাবেলায়। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য প্রয়োজন কঠোর নিয়মকানুন।
জেনে রাখুন-
Q1: ভিডিও গেমে ম্যালওয়্যার কীভাবে প্রবেশ করে?
গেমের অ্যাড-অন, মড, বা ক্র্যাক্ড ভার্সনের মাধ্যমে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করে। কিছু ক্ষেত্রে ডেভেলপাররা ইচ্ছাকৃতভাবেও যুক্ত করে।
Q2: কোন গেমগুলোতে ম্যালওয়্যার পাওয়া গেছে?
গিল্ড ওয়ার্স ২, মাইক্রোসফট ফ্লাইট সিমুলেটর, মাইনক্রাফটসহ একাধিক গেমে ম্যালওয়্যার শনাক্ত হয়েছে।
Q3: ম্যালওয়্যার থেকে কীভাবে নিজেকে রক্ষা করব?
শুধুমাত্র অফিসিয়াল সোর্স থেকে গেম ডাউনলোড করুন। শক্তিশালী অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করুন এবং সন্দেহজনক লিঙ্ক এড়িয়ে চলুন।
Q4: ম্যালওয়্যার আক্রান্ত হলে কী করণীয়?
ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করুন। অ্যান্টিভাইরাস দিয়ে স্ক্যান করুন এবং প্রয়োজনে পেশাদার সাহায্য নিন।
Q5: গেমিং ডিভাইসে ম্যালওয়্যার এর প্রভাব কী?
ব্যক্তিগত তথ্য চুরি, সিস্টেমের ক্ষতি, ফাইন্যান্সিয়াল লস এবং গেম অ্যাকাউন্ট হ্যাক হতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।