জুমবাংলা ডেস্ক : মালদ্বীপ। প্রকৃতি তার অপার সৌন্দর্য ঢেলে দিয়েছে ছোট্ট এই দ্বীপ দেশটিতে। আর তাই বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্যগুলোর মধ্যে একটি হয়ে উঠেছে মালদ্বীপ।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি মালদ্বীপ ভ্রমণ বাংলাদেশিদের জন্য তুলনামূলক বেশ সহজ।
বিশ্বের যে ৪২টি দেশ ভ্রমণ করতে বাংলাদেশিদের আগে থেকে ভিসার প্রয়োজন হয় না তার মধ্যে মালদ্বীপ একটি। সেখানে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা অন অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা পান।
মালদ্বীপ বিলাসবহুলভাবে ছুটি কাটানোর জন্য আদর্শ জায়গা। এখানে রয়েছে সুন্দর সুন্দর অসংখ্য দ্বীপ, মনোমুগ্ধকর সাদা বালুর সৈকত, স্বচ্ছ পানি এবং নীল আকাশ। এখানকার পাঁচ তারকা রিসোর্টগুলোও খুবই পর্যটকবান্ধব।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ছাড়াও রোমাঞ্চকর নানা অভিজ্ঞতার ব্যবস্থা আছে মালদ্বীপে। সঙ্গে আছে সুস্বাদু খাবার।
উন্নত নৌ পরিবহন ব্যবস্থা এবং অনেক স্বাধীন গেস্টহাউস তৈরি হওয়ায় মালদ্বীপ ভ্রমণের খরচও ধীরে ধীরে কমছে। সৌন্দর্যের লীলাভূমি দেশটিতে দর্শনীয় স্থানের অভাব নেই। সেগুলোর মধ্যে এই দর্শনীয় স্থানগুলো না দেখলে আপনার ভ্রমণ অপূর্ণ থেকে যেতে পারে।
মালে সিটি
মালদ্বীপ ভ্রমণ শুরু করতে পারেন রাজধানী মালে সিটি দিয়ে। এখানকার ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য আপনার নজর কাড়বে। এছাড়া নীল সমুদ্র এবং তাল গাছের বিশাল সমারোহ মালে সিটিকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
শহরটি একদিকে ঐতিহাসিক স্থাপত্য এবং অন্যদিকে নীল ও সবুজে ঘেরা। মালেতে উপভোগের মতো বহু আকর্ষণীয় জিনিস রয়েছে। শহরে রাস্তার দুই পাশের রঙিন বাজারগুলো ঘুরে দেখতে পারেন। এ ছাড়া জাতীয় জাদুঘরে গেলে দেশটির সমৃদ্ধ ঐতিহ্য সম্পর্কেও জানতে পারবেন।
ভাধু আইল্যান্ড
বিশ্বের চমকপ্রদ সৈকতগুলোর মধ্যে রয়েছে মালদ্বীপের সৈকতগুলো। শ্বাসরুদ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য ভাধু আইল্যান্ডের পরিচিত। দ্বীপের স্বচ্ছ নীল পানিতে ‘তারার মেলা’য় এক ঐশ্বরিক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
সমুদ্রের ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন বায়োলুমিনেসেন্স উৎপাদনের ফলে নীল নিয়ন আলোর মতো সমুদ্রের পানিতে অসংখ্য তারা-সদৃশ বস্তুর উপস্থিতি দেখা যায়। এ দৃশ্য অবশ্য সচরাচর দেখা যায় না। গ্রীষ্মের শেষ থেকে বছরের শেষ সময় পর্যন্ত এটি দেখার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাছাড়া কখন এমন দৃশ্য দেখা যাবে, তা নিশ্চিত করে বলাও যায় না। যেকোনো প্রাকৃতিক ঘটনার মতোই এই চমকপ্রদ দৃশ্যটি পুরোপুরি উপভোগ করার জন্য একটু ভাগ্যেরও প্রয়োজন হয়।
ইথা আন্ডারসি রেস্টুরেন্ট
স্থানীয় ভাষায় ‘ইথা’ মানে ‘মুক্তার মা’। মূলত এখানকার মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্যের বর্ণনা দিতেই এই শব্দটি ব্যবহার করা হয়। হিলটন মালদ্বীপ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পার অংশ এই রেস্টুরেন্টটি। এখানে নিরিবিলি সময় কাটাতে পারবেন।
রেস্তোরাঁটি সমুদ্র পৃষ্ঠের পাঁচ মিটার নিচে অবস্থিত। একসঙ্গে মাত্র ১৪ জন অতিথির বসার স্থান আছে এখানে। ছাদের ঢালটি টানেলের মতো, যার ফলে দর্শনার্থীরা তাদের চারপাশের প্রবাল প্রাচীরের প্যানোরমিক দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন।
মালে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সি প্লেনে করে এখানে যাওয়ার সুব্যবস্থা আছে। এখানে পশ্চিমা ও এশীয় খাবার পাওয়া যায়। খাবারের দাম স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। ১২০ ডলারের নিচে কোনো খাবার পাওয়া যাবে না রেস্তোরাঁটিতে।
হোয়েল সাবমেরিন
মালদ্বীপ ভ্রমণে সবচেয়ে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতাগুলোর মধ্যে একটি হতে পারে হোয়েল সাবমেরিনে সমুদ্রের তলদেশের সৌন্দর্য উপভোগ। এই সাবমেরিন দেখতে অনেকটা তিমির মতো। এ কারণেই নাম হোয়েল সাবমেরিন।
হোয়েল সাবমেরিনে সমুদ্রের তলদেশে গেলে আপনি মালদ্বীপের বিচিত্র ও রঙিন জলজ প্রাণীদের দেখা পাবেন। হলুদ বক্সফিশ, নীল স্ন্যাপার, লায়নফিশ, কচ্ছপ এবং হাঙরের দেখা মিলবে। অনেক পর্যটক মালদ্বীপে গিয়ে ডাইভ করেন। আপনি যদি ডাইভ করতে না চান, তাহলে হোয়েল সাবমেরিনই সবচেয়ে ভালো বিকল্প।
গ্র্যান্ড ফ্রাইডে মসজিদ
গ্র্যান্ড ফ্রাইডে মসজিদ অবস্থিত রাজধানী মালেতে। এটি বিশ্বের অন্যতম বড় মসজিদ। এখানে প্রায় ৫ হাজার মানুষ একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন।
মসজিদটির বাইরের দিকের সজ্জায় ব্যবহৃত চমৎকার মার্বেল নজর কাড়ার মতো। আর বিশাল সোনালী গম্বুজের জন্যও দেশটিতে আসা পর্যটক এবং তীর্থযাত্রীদের আকর্ষণের কেন্দ্রে থাকে এটি।
মসজিদটি মালের ইসলামী কেন্দ্রের অংশ এবং শহরের প্রধান জেটির কাছে অবস্থিত। তাই পানি থেকেই এটি দেখা যায়। সপ্তাহের যেকোনো দিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত মসজিদটি পরিদর্শন করতে পারবেন।
ব্যানানা রিফ
উপর থেকে দেখতে কলার মতো লাগায় এই প্রবাল প্রাচীরটির নাম দেয়া হয়েছে ব্যানানা রিফ।
মালের উত্তরাংশে অবস্থিত এই প্রবাল প্রাচীর। সারাবিশ্বের মধ্যে এটি অন্যতম সেরা ডাইভিং স্পট হিসেবে পরিচিত। এখানে বিভিন্ন রঙের নান্দনিক প্রবাল ও কোরাল দেখা যায়। সেই সঙ্গে বেশ কয়েকটি পাথরখণ্ড ও গুহা। সমুদ্রের নিচে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা পেতে চাইলে আপনার জন্য ব্যানানা রিফ সেরা জায়গা।
ফুলহাদু আইল্যান্ড
ফুলহাদু আইল্যান্ডের বিশেষত্ব হল স্বচ্ছ হ্রদ আর সাদা বালুর সৈকত। এছাড়া তাল গাছ এবং শান্ত পরিবেশের জন্য মালদ্বীপের অন্যতম জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্যে পরিণত হয়েছে এই দ্বীপ।
বিশ্বের অন্যতম দুর্গম এই দ্বীপে কোনো জনবসতি নেই। এখানে স্নোরকেলিং, স্কুবা ডাইভিং, ডলফিন ও কচ্ছপ দেখে সময় কাটাতে পারেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।