বাংলাদেশের শ্রমবাজারে আবারও এক উজ্জ্বল আশার আলো। ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরকালে ঘোষিত একটি নতুন উদ্যোগ বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য খুলে দিচ্ছে বৈধভাবে ইউরোপের দরজা। ভিসা সংক্রান্ত এই সুখবর এখন দেশের হাজার হাজার কর্মপ্রত্যাশীর মুখে হাসি ফোটাচ্ছে।
ইতালির ভিসা নীতিতে পরিবর্তন: বাংলাদেশিদের জন্য সুসংবাদ
২০২৫ সালের ৫ মে, বাংলাদেশে সফররত ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোসি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠকে জানান, ইতালি বৈধভাবে আরও বাংলাদেশি জনশক্তি নিতে চায়। এটি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের জন্য একটি যুগান্তকারী সুযোগ। বৈঠকে বলা হয়েছে, যারা ইতালিতে কাজ করতে ইচ্ছুক, তারা যেন সঠিক ভিসা প্রক্রিয়া মেনে সেখানে যান।
Table of Contents
আলোচনায় উঠে এসেছে, অনেকেই অন্য দেশের ভিসা ব্যবহার করে ইতালিতে প্রবেশ করে থাকেন, যা এক ধরনের অবৈধ অভিবাসন হিসেবে গণ্য হয়। এই প্রবণতা রোধে এবং প্রোপার চ্যানেল ব্যবহারের উপর জোর দিয়েছেন ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, ইতালিতে বর্তমানে প্রায় এক লাখ বাংলাদেশি শ্রমিক কাজ করছেন বলে ধারণা করা হয়। ইতালি সরকার নতুন করে শ্রমিক নেওয়ার পরিকল্পনায় আছে তবে তা হতে হবে নিয়ম মেনে এবং সঠিকভাবে ভিসা নিয়ে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ইতালির পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশি শ্রমিকরা অত্যন্ত পরিশ্রমী ও দক্ষ। তারা ইতালির অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে এবং এই কারণে আরও শ্রমিক নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ইতালি।
এছাড়াও, দুই দেশের মধ্যে আগে থেকেই একটি সমঝোতা চুক্তি রয়েছে, যা ভবিষ্যতে আরও জোরদার করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ইতালিকে অনুরোধ জানানো হয়েছে, যারা আগে অবৈধভাবে গেছেন তাদেরও যেন কিছুটা ছাড় দিয়ে বৈধতার সুযোগ দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, ইতালি বাংলাদেশকে পুলিশ, কোস্টগার্ড ও বর্ডার গার্ড বাহিনীসহ নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
ভবিষ্যতের কর্মসংস্থানের দিগন্ত
এই নতুন উদ্যোগ বাংলাদেশের হাজার হাজার বেকার যুবকের জন্য আশার আলো হতে পারে। দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিকদের জন্য এটি একটি বিশাল সম্ভাবনা। তবে এজন্য প্রয়োজন সচেতনতা ও সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে আবেদন করা।
যারা ইতালিতে কাজ করতে আগ্রহী, তাদের অবশ্যই সরকার অনুমোদিত এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করতে হবে এবং কোনওভাবেই ভুয়া বা অবৈধ পথে পা রাখা যাবে না।
সরকার ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছে যাতে করে ভবিষ্যতের ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া আরও সহজ এবং দ্রুত হয়। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
বাংলাদেশ থেকে বৈধভাবে কর্মী পাঠানোর এ সুযোগকে কাজে লাগাতে হলে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সঠিক দিকনির্দেশনা মেনে চলতে হবে।
যেহেতু ইতালি সরকার বাংলাদেশের শ্রমশক্তির প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেছে, তাই প্রয়োজন এখন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ। সরকার, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়, দূতাবাস এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর উচিত এই সুযোগকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বাস্তবায়ন করা।
জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমেও প্রচারণা চালানো যেতে পারে, যাতে করে মানুষ সঠিক পথে ভিসার জন্য আবেদন করে এবং দালাল চক্রের খপ্পরে না পড়ে।
গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়
- প্রোপার চ্যানেলের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।
- সরকার অনুমোদিত এজেন্সির সহায়তা নিতে হবে।
- অবৈধ প্রবেশের চেষ্টায় নিজেকে ঝুঁকিতে না ফেলা ভালো।
- বিদেশে কর্মরত আত্মীয়স্বজনদের সহায়তা ও পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।
- ভবিষ্যতে ভিসা সুবিধা বজায় রাখতে সরকারের নির্দেশনা মেনে চলা আবশ্যক।
ভিসা নিয়ে এই সুখবর নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের জন্য একটি বড় দিগন্ত খুলে দিয়েছে। এটি কেবল কর্মসংস্থান নয়, দেশের অর্থনীতিতেও ব্যাপক অবদান রাখবে।
ভিসা সম্পর্কিত ঘনঘন জিজ্ঞাসা (FAQs)
ইতালি কি এখনও বাংলাদেশি শ্রমিক নিচ্ছে?
হ্যাঁ, ইতালির সরকার বৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে আরও শ্রমিক নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
কোন প্রক্রিয়ায় ইতালি যেতে হবে?
সরকার অনুমোদিত এজেন্সি ও প্রোপার ভিসা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।
অবৈধভাবে গেলে কী হয়?
অবৈধ অভিবাসন আইনত দণ্ডনীয় এবং আপনি আইনি সুরক্ষা পাবেন না।
ভবিষ্যতে আরও সুযোগ থাকবে কি?
বর্তমানে আলোচনা চলছে এবং ইতালির সরকার আগ্রহ প্রকাশ করেছে, তাই ভবিষ্যতেও সুযোগ বাড়তে পারে।
সঠিক তথ্য কোথা থেকে পাওয়া যাবে?
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, দূতাবাস ও সরকারি ওয়েবসাইটে নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যাবে।
ইতালির অর্থনীতিতে বাংলাদেশিদের ভূমিকা কেমন?
বাংলাদেশিরা ইতালির বিভিন্ন খাতে কঠোর পরিশ্রম করে ইতিবাচক অবদান রাখছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।