বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জ বশেমুরবিপ্রবির ভিসি প্রফেসর ড. নাসিরউদ্দিনের পদত্যাগের খবরে ক্যাম্পাসে আনন্দ-উল্লাস প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীর।
আজ সোমবার সন্ধ্যায় উপাচার্যের পদত্যাগের খবর নিশ্চিত হওয়ায় শিক্ষার্থীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে বাঁধ ভাঙা আনন্দে জয় বাংলা চত্বরে সমবেত হন।
পরে সেখানে সবাই মিলে নেচে-গেয়ে ও স্লোগানের মাধ্যমে আনন্দ উল্লাসে ফেটে পড়েন। মেতেছেন রঙ খেলায়। যে যার মতো করে আনন্দ-উল্লাস প্রকাশ করেন।
১৯ সেপ্টেম্বর থেকে টানা ১২ দিন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাসিরউদ্দিনের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করছিলেন শিক্ষার্থীরা। তারা উপাচার্যের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, স্বজনপ্রীতিসহ নানা অভিযোগ এনে লাগাতার কর্মসূচি পালন করেন।
তারা (শিক্ষার্থীরা) পদত্যাগের এক দফা দাবিতে অনশন, অবস্থান ধর্মঘট, ঝাড়ু মিছিল, মশাল মিছিল, মোমবাতি মিছিল, প্রেস ব্রিফিং, উপাচার্যের দুর্নীতি পোস্টার প্রদর্শনী, উপাচার্যের ব্যাঙ্গাত্মক চিত্র প্রদর্শনীসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন।
মার্কেটিং বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী নাভিদ যুন-নু-রাইন বলেন, খুব দ্রুতই শিক্ষার্থীরা মুক্তি পেতে যাচ্ছে একজন দুর্নীতিবাজ ও নারী কেলেঙ্কারির হোতা উপাচার্যের হাত থেকে। আমরা আশাকরি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরেই প্রজ্ঞাপন জারি করে দুর্নীতবাজ উপাচার্য নাসিরউদ্দিনকে বিচারের আওতায় আনবেন এবং আমাদের জন্য যোগ্য নতুন উপাচার্য নিয়োগ দিবেন। আমরা তাই প্রধানমন্ত্রীর দিকে চেয়ে আছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ইমরান হোসাইন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে এতদিন শিক্ষার কোন পরিবেশ ছিল না। উপাচার্য তার নিজের খেয়াল-খুশি মতো বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিচালনা করেছেন। তাকে অপসারণ করে একজন নতুন বিজ্ঞ উপাচার্য নিয়োগ দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসবে। এখানে জ্ঞান-বিজ্ঞানের নানা ক্ষেত্র গড়ে উঠবে। গবেষণা হবে। দেশ-বিদেশ থেকে নানা জ্ঞানী লোকজন আসবেন। সভা-সেমিনার হবে। শিক্ষার্থীরা তাদের লেখাপড়ার পাশাপাশি জ্ঞান-বিজ্ঞানে আরো সমৃদ্ধ হতে পারবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা নিরাসনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ৫ সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করা হয়। অধ্যাপক ড.আলমগীরের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের তদন্ত টিম ২৫ ও ২৬ তারিখ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। তারা শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মচারীদের সাথে কথা বলেন এবং তাদের বক্তব্য লিখিত আকারে গ্রহণ করেন। গত রবিবার তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়। তদন্ত প্রতিবেদনে উপাচার্য ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনকে অপসারণের সুপারিশ করা হয়। এ ঘটনার পর রবিবার রাতেই উপাচার্য পুলিশ পাহারায় তার বাংলো ছেড়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। তখন থেকেই গুঞ্জন ছিল সোমবার যে কোন সময় তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেবেন।
গত ১১ সেপ্টেম্বর আইন বিভাগের ছাত্রী ও ক্যাম্পাস সাংবাদিক ফাতেমা-তুজ জিনিয়াকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। জিনিয়ার বহিষ্কার নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে ১৮ সেপ্টেম্বর প্রশাসন তার বহিষ্কারাদেশ তুলে নিতে বাধ্য হয়। ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষার্থীরা ভিসির বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, স্বজনপ্রীতি ও নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ এনে তার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।