জুমবাংলা ডেস্ক : ভুল সিদ্ধান্তের কারণে বারবার নীতি পরিবর্তনে বাধ্য হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ব্যাংক চেয়ারম্যানদের অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে এমন কথা জানিয়েছেন তারা।
তারা বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশেই সুদহার ধরে রাখার নজির নেই। আমাদের দেশেও সেটা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। তাই বাংলাদেশ ব্যাংক আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে। এভাবে ভুল সিদ্ধান্তের কারণেই বারবার নীতি পরিবর্তন করতে হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংককে।
সোমবার (১৩ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের আমন্ত্রণে বৈঠকে আসেন ব্যাংকের চেয়ারম্যানরা। কিন্তু গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার অর্থ মন্ত্রণালয়ে জরুরি বৈঠকে নিতে চলে যাওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্ব নির্ধারিত সভায় সভাপতিত্ব করেন ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার।
জানা গেছে, সভায় ব্যাংক একীভূতকরণ, ডলারের বিনিময় হার, ঋণের সুদহার, সুশাসনসহ দেশের অর্থনীতির নানা বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা থাকলেও কেবল বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে হাসপাতাল নির্মাণ প্রসঙ্গেই আলোচনা হয়েছে।
বৈঠক শেষে বেসরকারি ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকের (বিএবি) চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, ঋণের সুদহার চাহিদা এবং জোগানের ওপর নির্ভর করে। ফলে এটিকে আটকে রাখার কারও কোনো ক্ষমতা নাই। পৃথিবীর কোনো দেশেই সুদহার নির্দিষ্ট করে দেওয়ার নজির নেই। সুদহার আপন গতিতে চলবে। চলতে চলতে এক জায়গায় থেমে যাবে। আবার নামবে, আবার উঠবে। এটাই অর্থনীতির নিয়ম। ফলে সুদহার নির্ধারণ করে দেওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের কাজ নয়। সেটা বাজারের ওপর ছেড়ে দিতে হবে। অবশেষে বাংলাদেশ ব্যাংকও আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে। আমরা এটাকে সাধুবাদ জানাই। তিনি আরও বলেন, ডলারের দাম বাজারভিত্তিক করার বিকল্প নেই। অন্য দেশেও ডলারের দাম অনেক বেশি। আমাদের এখানে এতদিন জোর করে চাপিয়ে রাখা হয়েছিল। যা এখন বাজারের কাছাকাছি চলে এসেছে।
বৈঠকে ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। তবে পদ্মা ব্যাংকের সঙ্গে এক্সিম ব্যাংকের মিলন হচ্ছে- এই বিষয়ে আমি নিশ্চিত করতে পারি। পদ্মা এবং এক্সিম উভয় ব্যাংকই এই বিষয়ে সম্মত আছে।
ডলারের দাম বাড়ানো এবং সুদহার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে পূবালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মনজুরুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের আগের নীতিগুলোগুলো ফেল করেছে। ভুল সিদ্ধান্তের কারণে বারবার নীতি পরিবর্তনে বাধ্য হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এর আগে, ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার ৯ শতাংশে বেঁধে দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। সেইসঙ্গে আমানতের সুদও যেন ৬ শতাংশের নিচে না নামে সেই বিষয়েও ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শে গত বছরের জুলাই মাসে মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় ঋণের সুদহারের এই সীমা তুলে দিয়ে ‘স্মার্ট’ (সিক্স মান্থস মুভিং অ্যাভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল) চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর গত বুধবার স্মার্ট পদ্ধতি থেকেও সরে এসে পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেইসঙ্গে নীতি সুদহারও বাড়িয়ে দিয়েছে। এ ছাড়া, ডলারের দর পুরোপুরি বাজারে না ছাড়লেও অনেকটাই বাজারভিত্তিক করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।