বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক: ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে কমপক্ষে ৫০০ একাউন্ট মুছে দিয়েছে ফেসবুক। এসব একাউন্টের বেশির ভাগই চীনের। সুইজারল্যান্ডের একজন কথিত জীববিজ্ঞানী ‘উইলসন এডওয়ার্ডসের’ একটি ভুয়া দাবিকে এসব একাউন্ট থেকে প্রোমোট করা হচ্ছিল।
বলা হচ্ছিল উইলসন এডওয়ার্ডস দাবি করেছেন, কোভিড-১৯ এর উৎসের সন্ধান প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করছিল যুক্তরাষ্ট্র। এই দৃষ্টিভঙ্গি চীনের বেশির ভাগ রাষ্ট্রীয় মিডিয়া লুফে নেয় এবং তা প্রচার করে। তবে উইলসন এডওয়ার্ড নামে কোনো ব্যক্তির অস্তিত্বের কথা অস্বীকার করেছে সুইজারল্যান্ডের দূতাবাস। মেটা প্লাটফর্মস বলেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই প্রচারণা ব্যাপকভাবে সফল হতে পারেনি। এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেনের ইংরেজিভাষীদের টার্গেট করা হয়েছিল। একই সঙ্গে টার্গেট করা হয়েছিল চীনভাষী তাওয়ান, হংকং এবং তিব্বতের মানুষদের।
জুলাইয়ের শুরুতে উইলসন এডওয়ার্ডস নামে এক সুইস জীববিজ্ঞানীর পরিচয় দিয়ে একটি একাউন্টে বিবৃতি দেয়া হয় ফেসবুক এবং টুইটারে। এতে বলা হয়, করোনা ভাইরাসের উৎসের জন্য চীনকে দায়ী করা হয়। চীনকে দায়ী করতেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিজ্ঞানীদের চাপ দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
চীনের রাষ্ট্রীয় মিডিয়া তথাকথিত ওই জীববিজ্ঞানীর উদ্ধৃতি উল্লেখ করে রিপোর্ট প্রকাশ করে সিজিটিএন, সাংহাই ডেইলি, গ্লোবাল টাইমস প্রভৃতি। অন্যদিকে সুইজারল্যান্ডের দূতাবাস আগস্টে জানায় যে, উইলসন এডওয়ার্ড নামে কোন ব্যক্তির অস্তিত্ব নেই। প্রথম পোস্ট দেয়ার মাত্র দু’সপ্তাহ আগে ওই একাউন্ট খোলা হয়। এই একাউন্টে ফ্রেন্ড ছিল মাত্র তিনজন। এতে আরো বলা হয় উইলসন এডওয়ার্ডস নামে নিবন্ধিত কোনো সুইস নাগরিক নেই। তার নামে কোনো একাডেমিক আর্টিকেলও নেই। সঙ্গে সঙ্গে তারা মিডিয়া থেকে ওই আর্টিকেল সরিয়ে ফেলতে আহ্বান জানায় চীনের মিডিয়া আউটলেটগুলোর প্রতি।
নভেম্বরে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে মেটা প্লাটফর্মস। তাতে বলা হয়, তারা তদন্ত করে দেখেছে যে, ওই একাউন্টের সঙ্গে জড়িত চীনের মূল ভূখন্ডের কিছু মানুষ। এর মধ্যে আছেন সিচুয়ান সাইলেন্স ইনফরমেশন টেকনোলজি কোম্পানি লিমিটেডের কিছু কর্মী এবং চীনের রাষ্ট্রীয় অবকাঠামো বিষয়ক কোম্পানিগুলোর কিছু মানুষ। তারা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছেন। সিচুয়ান সাইলেন্স ইনফরমেশনের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, কোম্পানিটি নিরাপত্তা ও নিরাপত্তা তথ্য বিষয়ক একটি নেটওয়ার্ক। তারা চীনের জননিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সিএনসিইআরটি’কে প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে থাকে। সিএনইআরটি হলো চীনের জরুরি সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক সমন্বিত একটি উদ্যোগ।
ফেসবুক বলেছে, তারা মোট ৫২৪টি একাউন্ট, ২০টি পেইজ, চারটি গ্রুপ, ইনস্টাগ্রামের ৮৬টি একাউন্ট সরিয়ে ফেলেছে। এসব স্থানে ভুয়া ওই সুইস জীববিজ্ঞানীর দাবিকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা হয়েছিল। এসব পোস্ট বিভিন্ন ব্যবহারকারীর কাছে শেয়ার করা হয়েছিল। এর মধ্যে কমপক্ষে ৪০টি দেশে চীনের রাষ্ট্রীয় অবকাঠামো বিষয়ক কোম্পানির কর্মকর্তারাই বেশি। এতে আরো বলা হয়, ভার্চুয়াল পারসোনাল নেটওয়ার্ক (ভিপিএন) অবকাঠামো ব্যহার করা হয়েছিল। এর মধ্য দিয়ে উইলসন এডওয়ার্ডসকে একজন উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তি হিসেবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল। তার যে প্রোফাইল ছবি ব্যবহার করা হয়েছে, তা কম্পিউটার ব্যবহার করে সৃষ্টি করা। সূত্র: বিবিসি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।