সোমবার রাতে আবারও ৪ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশে কম্পন অনুভূত হয়। বাংলাদেশ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ দল জানিয়েছে, এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি স্থল ছিল মিয়ানমার।

রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা যত বাড়ে, ততই বাড়ে ধ্বংসের মাত্রা। আন্তর্জাতিক ভূকম্পবিজ্ঞানীদের তথ্য বলছে, ২ মাত্রার নিচের ভূমিকম্প মানুষ টেরই পায় না। তবে ৪ মাত্রার কম্পনে ভবনের দরজা-জানালা কেঁপে উঠতে পারে। ৫ মাত্রার ভূমিকম্পে দুর্বল ভবনের দেয়ালে ফাটল দেখা দেয়, আসবাবপত্র নড়াচড়াও করতে পারে।
৬ মাত্রার কম্পনকে ধরা হয় ‘শক্তিশালী’ ভূমিকম্প হিসেবে। এতে একটি শহরজুড়ে ভবন, রাস্তা ও সেতুর উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আর ৭ মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে ধ্বংসযজ্ঞের পরিমাণ আরও বাড়ে; বহু ভবন ধসে পড়ে এবং বড় এলাকায় ভৌত কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
৮ মাত্রা বা তার বেশি ভূমিকম্পকে বিজ্ঞানীরা উল্লেখ করেন ‘ভয়াবহ’ হিসেবে। এতে শত শত কিলোমিটার এলাকার ওপর বিপর্যয় নেমে আসে, সাগর উপকূলে সুনামির আশঙ্কাও তৈরি হয়। ৯ মাত্রা বা তার বেশি ভূমিকম্প ইতিহাসে বিরল, তবে ঘটলে তা সৃষ্টি করে ভয়ঙ্কর বিপর্যয়—সম্পূর্ণ অঞ্চল ধ্বংস, সেতু–রাস্তা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া এবং ব্যাপক প্রাণহানি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি শুধু মাত্রার ওপর নয়, এলাকার ভূগঠন, ভবনের মান ও জনঘনত্বের ওপরও নির্ভর করে। তাই ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে আগাম সতর্কতা ও শক্তিশালী অবকাঠামো নির্মাণই বড় ক্ষতি ঠেকানোর প্রধান উপায়।
বাংলাদেশ কতটা ঝুঁকিতে
ভূমিকম্প এখন শুধুমাত্র ভারত বা মিয়ানমার থেকে আসছে না, বরং বাংলাদেশেই এর উৎপত্তি হচ্ছে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে বাংলাদেশ ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় ৭৬টি ভূমিকম্প ঘটেছে। বিশেষজ্ঞরা ২১ নভেম্বরের নরসিংদীতে ভূমিকম্পকে ইন্ট্রাপ্লেট ইভেন্ট হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে বাংলাদেশ ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় ৭৬টি ভূমিকম্প ঘটেছে। বিশেষজ্ঞরা ২১ নভেম্বরের নরসিংদীতে ভূমিকম্পকে ইন্ট্রাপ্লেট ইভেন্ট হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
এ নিয়ে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক এ কে এম শাকিল নেওয়াজ জানিয়েছিলেন, মেইন শকের মাত্রা রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৮ বা তার বেশি হতে পারে। এরপরই থাকবে আফটার শক। তিনি আরও বলেছিলেন, তখনকার পরিস্থিতি হবে আমাদের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ।
এদিকে জিপিএস পরিমাপ দেখাচ্ছে, দেশের ফল্টগুলো প্রতি বছর কয়েক মিলিমিটার সরতে থাকে, যা ভবিষ্যতে ভূমিকম্পের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করছে। বিশেষত সিলেট, ময়মনসিংহ, সুনামগঞ্জ (দৌকি ফল্ট), ঢাকা ও টাঙ্গাইল (মধুপুর ফল্ট), চট্টগ্রাম ও পার্শ্ববর্তী উপকূলীয় এলাকা (চট্টগ্রাম–মিয়ানমার ফল্ট) ঝুঁকিপূর্ণ।
বিয়ে করলেন জনপ্রিয় নির্মাতা মিজানুর রহমান আরিয়ান, পাত্রী কে?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঠিকমতো পর্যবেক্ষণ এবং জনসচেতনতা তৈরি না হলে, বড় ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষতি হবে। বড় ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে পরিবহন খাত, পানি ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করেন তারা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



