বাংলাদেশে ভূমি মালিকদের জন্য আসছে সুখবর। সরকার জমির মালিকদের জন্য এক যুগান্তকারী পরিবর্তন আনছে। দীর্ঘদিন ধরে চলা এনালগ পদ্ধতির সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে এবার দলিল রেজিস্ট্রেশন ও সংরক্ষণ হবে পুরোপুরি ডিজিটাল। সরকার ১৯০৮ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে সংরক্ষিত সব দলিল ধাপে ধাপে স্ক্যান করে অনলাইনে আনার উদ্যোগ নিয়েছে।

এই ডিজিটাল কার্যক্রমের ফলে মাত্র কয়েক ক্লিকেই অনলাইনে দলিল খুঁজে পাওয়া, যাচাই করা এবং সংগ্রহ করা সম্ভব হবে। ভূমি আইনজীবী জাহাঙ্গীর এ বিষয়ে বলেন, ভূমি মালিকদের জন্য এটি একটি দারুণ সুখবর। এখন যে কেউ পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে নিজের দলিল ডাউনলোড করতে পারবেন।
১১৭ বছরের দলিল ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে
সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১৯০৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত রেজিস্ট্রার হওয়া সব দলিল একটি কেন্দ্রীয় অনলাইন সিস্টেমে যুক্ত করা হবে। ইতোমধ্যে পাইলট প্রকল্প হিসেবে অনেক জেলায় কাজ শুরু হয়েছে। তবে যুদ্ধকালীন সময় যেমন— ১৯৪৭ ও ১৯৭১ সালের বহু দলিল হারিয়ে যাওয়ায় সেগুলো অনলাইনে আনা সম্ভব হবে না। এই ধরনের দলিল যাদের কাছে কপি আছে, তাদেরকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রেজিস্ট্রি অফিসে জমা দিয়ে অনলাইনকরণের জন্য আবেদন করতে হবে।
দুর্নীতি ও প্রতারণা রোধ
ভূমিসংক্রান্ত জালিয়াতি ও দুর্নীতি রোধ করাই এই ডিজিটাল প্রকল্পের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। অনুপস্থিত মালিকদের জমি জাল দলিলের মাধ্যমে বিক্রি হওয়ার প্রবণতা বন্ধ করতে অনলাইন দলিল সিস্টেম সহায়ক হবে।
আইনজীবী জাহাঙ্গীর জানান, আগে রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল খোঁজার জন্য ঘুষ দিতে হতো ১০০০ থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত। অথচ সরকারি নির্ধারিত ফি মাত্র ২০ টাকা। এখন এই হয়রানি আর থাকবে না।
ভূমি মালিকদের করণীয়
প্রকল্প বাস্তবায়নের পর সরকার একটি নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট চালু করবে, যেখানে দলিল খোঁজা, যাচাই এবং নির্ধারিত ফি প্রদান করে কপি ডাউনলোড করা যাবে। এমনকি মূল দলিল হারিয়ে গেলেও অনলাইন কপি প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে।
ভূমি মালিকদের কিছু বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন—
সরকারের পক্ষ থেকে সিস্টেম চালু না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
যেসব দলিল অনলাইনে পাওয়া যাবে না, সেগুলোর কপি নিজে থেকে জমা দিন।
জাল দলিল অনলাইনে গ্রহণযোগ্য নয়।
সরকার চায়, নাগরিকরা দলিল হারানো বা প্রতারণার শিকার হয়ে নিজের সম্পত্তি যাতে না হারান। তাই ১১৭ বছরের দলিল ডিজিটালভাবে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
দীর্ঘমেয়াদি সুফল
দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা জমি সংক্রান্ত বিরোধ কমবে।
প্রতারণা ও হয়রানি বন্ধ হবে।
প্রবাসীদের জন্য দলিল সংগ্রহ সহজ হবে।
নাগরিকদের সেবা প্রাপ্তি দ্রুত ও সহজতর হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



