ভেনেজুয়েলার তেলকে বৈশ্বিক বাজার থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন করতে নতুন করে কঠোর অবস্থান নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো সরকারের ওপর সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে ভেনেজুয়েলার সমুদ্রসীমায় ব্যাপক সামরিক উপস্থিতির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতে দক্ষিণ আমেরিকার রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
হোয়াইট হাউজ সূত্র জানায়, ভেনেজুয়েলার বিপুল তেল সম্পদ যেন বিশ্বের অন্যান্য দেশে রপ্তানি হতে না পারে, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মার্কিন সামরিক বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত শুধু আঞ্চলিক নয়, বরং বৈশ্বিক ভূরাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং আন্তর্জাতিক জ্বালানি বাজারে বড় ধরনের অস্থিরতার আশঙ্কা তৈরি করেছে।
বুধবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্কিন প্রশাসনের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরাসরি নির্দেশে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সামরিক প্রস্তুতি জোরদার করা হয়েছে। পেন্টাগন সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ভেনেজুয়েলার উপকূলে একটি বিমানবাহী রণতরি, ১১টি যুদ্ধজাহাজ এবং এক ডজনের বেশি অত্যাধুনিক এফ-৩৫ স্টিলথ যুদ্ধবিমান মোতায়েন রয়েছে। এই অভিযানে অংশ নিচ্ছে ১৫ হাজারেরও বেশি মার্কিন সেনা।
বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে ১৯৬২ সালের কিউবান ক্ষেপণাস্ত্র সংকটের মিল রয়েছে। সে সময় আন্তর্জাতিক আইনি জটিলতা এড়াতে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি ‘ব্লকেড’ শব্দটি ব্যবহার না করে ‘কোয়ারেন্টিন’ শব্দটি বেছে নিয়েছিলেন। ট্রাম্প প্রশাসনও একই ধরনের কৌশল অনুসরণ করছে বলে মনে করছেন তারা। ওয়াশিংটনের লক্ষ্য আগামী দুই মাসের মধ্যে ভেনিজুয়েলার তেল রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ করে দেশটিকে তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে ফেলানো, যাতে মাদুরো সরকার ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়।
এদিকে জাতিসংঘের স্বাধীন বিশেষজ্ঞরা এক যৌথ বিবৃতিতে এই নৌ-অবরোধের কড়া সমালোচনা করেছেন। তাদের মতে, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী কোনো সার্বভৌম দেশের বিরুদ্ধে এ ধরনের শক্তি প্রয়োগ অবৈধ সশস্ত্র আগ্রাসনের শামিল। জাতিসংঘে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভাসিলি নেবেনজিয়া যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি আখ্যা দেন। তিনি বলেন, ওয়াশিংটনের এই ‘কাউবয় সুলভ আচরণ’ ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে, যার দায় যুক্তরাষ্ট্রকেই নিতে হবে।
চীনের প্রতিনিধি সান লেইও একতরফা সিদ্ধান্ত ও শক্তি প্রদর্শনের বিরোধিতা করে বলেন, চীন সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় মর্যাদার প্রশ্নে সব দেশের পাশে থাকবে।
সূত্র: সিএনএন, রয়টার্স
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



