জুমবাংলা ডেস্ক: কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ইতালিফেরত এক প্রবাসীর মৃত্যুর ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ষাট বছর বয়সী ওই ব্যক্তি গত কয়েকদিন ধরে তীব্র জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। খবর বিবিসি বাংলার।
রোববার রাতে পৌর শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি মারা যান।
তার লক্ষণগুলো করোনাভাইরাসের সাথে মিলে যাওয়ায় তিনি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন বলে এলাকাবাসীর মধ্যে সন্দেহ ঘনীভূত হয়েছে।
তিনি আসলেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন কি না তা জানতে সোমবার সকালে ঢাকা থেকে রোগতত্ত্ব ও রোগ নিয়ন্ত্রণ গবেষণা ইন্সটিটিউট- আইইডিসিআর এর প্রতিনিধি দল ভৈরবে গিয়ে মৃতদেহের নমুনা সংগ্রহ করে। সেটার পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে।
বর্তমানে আইইডিসিআর, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে বিশেষ প্রক্রিয়ায় তার লাশ দাফন করা হয়েছে।
স্থানীয় এক সাংবাদিক জানান, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ওই ব্যক্তি ইতালি থেকে দেশে ফিরেন। সম্প্রতি তিনি ঠান্ডা, জ্বর ও বুকে ব্যথায় আক্রান্ত হন।
রবিবার রাতে পরিস্থিতি জটিল রূপ নিয়ে স্বজনরা তাকে পাশের দুটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগেই রাত ১১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় আইইডিসিআর এর রিপোর্ট প্রকাশের সোমবার পর্যন্ত ওই দুটি হাসপাতাল লোকজনের যাতায়াত সীমিত করার নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় জেলা প্রশাসক।
সেইসঙ্গে জগন্নাথপুর এলাকায় ওই ব্যক্তির বাড়িসহ আশপাশের ১০টি বাড়ি লকডাউন করে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ।
তিনি বলেন, “ওই ব্যক্তি যে হাসপাতালে ছিলেন আমরা বলেছি সেখানে যেন চলাচল সীমিত করা হয়। নতুন কোন রোগী ভর্তি করা না হয়। আবার ভেতরের রোগীরা যেন কোয়ারেন্টিন মেইনটেইন করেন। তাদের কোন স্বজন যেন ভেতরে প্রবেশ না করেন।”
“আইইডিসিআর এর রিপোর্ট কালকে আসতে পারে। তার আগ পর্যন্ত ওই ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের বাড়ির ভেতরে আলাদা আলাদা কক্ষে থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়া আশেপাশের বাড়িগুলো লকডাউন করা হয়েছে। রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত ওই বাড়িগুলোর ভেতরেও কেউ যাবে না। বাইরেও কেই আসবেনা।” বলেন মি. আহমেদ।
স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, ইতালি থেকে ফেরার পর ওই ব্যক্তি বাজার করা, মসজিদে জামাতে নামায আদায় থেকে শুরু করে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে ঘুরে বেড়িয়েছেন।
অথচ বিদেশ থেকে কেউ ফিরলে সেটা স্থানীয় কর্মকর্তাকে জানানোর জন্য এলাকায় ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালানো হয়েছিল বলে জানান উপজেলা প্রশাসক লুবনা ফারজানা।
কিন্তু ওই ব্যক্তি দেশে ফিরে এই খবর কাউকে জানাননি বলে তিনি অভিযোগ করেন।
মিসেস ফারজানা বলেন, “আমরা এতো প্রচার করেছি যে বিদেশ থেকে ফিরলে আমাদের যেন তারা জানান। হটলাইনে যোগাযোগ করতে বলেছি। কিন্তু আমাদেরকে তারা কোন তথ্য দেননি। পরে তিনি যখন মারা গেলেন তখন স্থানীয় এক ব্যক্তি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি জানান।”
“সঙ্গে সঙ্গে আমরা খোঁজ নিয়ে যখন জানতে পারি যে তার লক্ষণগুলো করোনাভাইরাসের মতো, আবার তিনি বিদেশ থেকে ফিরেছেন, তখন আমরা আইইডিসিআর-কে ফোন দেই।” বলেন তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।