জুমবাংলা ডেস্ক: ভোলা জেলার উপজেলা সদরে লাউ চষে ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন মো: ফারুক হোসেন। উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের কোরার হাট এলাকার মেঘনা পাড়ে ৪৮ শতাংশ জমিতে খামার পদ্ধতিতে লাউ চাষে এখন ফারুক স্বাবলম্বী। বছরের আশ্বিন মাস থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত লাভ জনক ফসল লাউ চাষ করেন তিনি। অন্য সময়ে জমিতে ধানের চাষ করেন। লাউ ও এর পাতার ব্যাপক চাহিদা থাকায় অনেকেই এ সবজি চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
সরেজমিনে জানা যায়, ধনিয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের কৃষক ফারুক গত ৫ বছর আগে ১৮ শতাংশ জমিতে প্রথম লাউ চাষ শুরু করেন। প্রথম বছরই সফলতার দেখা পান তিনি। পরের বছর তিনি বড় পরিসরে লাউ চাষ আরম্ভ করেন। বর্তমানে তিনি ৪৮ শতাংশ জমিতে লাভ জনক ফসল লাউ চাষ করছেন। এতে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয় তার। প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৭০/৮০ টাকা। বছরের ছয় মাস লাউ বিক্রি হচ্ছে দেড় থেকে ২ লাখ টাকার। এছাড়া লাউ’র পাতারও ভালো দাম পান তিনি।
লাউ চাষি ফারুক জানান, এক সময়ে ১২মাসই তিনি ধানের চাষ করতেন। কিন্তু এতে অনেক সময় লেকসান গুণতে হতো। তাই এ সময়টাতে লাউ চাষ আরম্ভ করেন এবং সফলতার মুখ দেখেন। এ পর্যন্ত তিনি বেশ কয়েকবার খামারের লাউ ও পাতা বিক্রি করেছেন। তিনি নিজে ভ্যানে করে বিভিন্ন স্থানে লাউ বিক্রি করে থাকেন। তাই দাম ভালো পান। চৈত্র মাস পর্যন্ত লাউ বিক্রি করতে পারবেন। লাউ বিক্রির টাকা দিয়ে বেশ কিছু জমিও কিনেছেন তিনি।
তিনি আরো জানান, লাউ চাষে তেমন রোগ-বালাই ও পরিশ্রম করতে হয়না। প্রথমদিকে জমি প্রস্তুত, বীজ রোপণ ও মাঁচা তৈরির সময় একটু পরিশ্রম হয়। এছাড়া গাছ বড় হওয়ার পর তেমন শ্রম দিতে হয়না। শুধু নিয়মিত তদারকি করলেই হয়। এছাড়া কৃষি বিভাগ থেকে নিয়মিত পরামর্শসেবা পেয়ে থাকেন বলে জানান তিনি।
কৃষক ফারুকের ছোট ছেলে আলম জানান, তিনি এ বছর দশম শ্রেণীতে পড়া-শুনা করছেন। পড়া-শুনার পাশাপাশি তার বাবার লাউ ক্ষেতে পরিচর্যাসহ নানান কাজে সহায়তা করছেন। যার কারণে তাদের ক্ষেতে কোন শ্রমিকের প্রয়োজন হয়না। এতে তাদের অনেক অর্থের সাশ্রয় হয়।
স্থানীয় লাউ চাষি মো: সেলিম (৪৫) জানান, তিনি ফারুকের দেখা-দেখি এবছর ১৮ হাজার টাকা খরচ করে ৩৫ শতাংশ জমিতে লাউ চাষ করেছেন। কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে সঠিকভাকে ক্ষেতে সার-ওষুধ দিয়েছেন। ফলন হয়েছে ভালো। এ পর্যন্ত ৭০ হাজার টাকা লাউ বিক্রি করেছেন। সামনের দিনগুলোতে আরো বিক্রি হবে বলে জানান তিনি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ দেবনাথ জানান, সবজি চাষে সফল হওয়ার জন্য চাই আত্বপ্রত্যয়, কঠিন পরিশ্রম ও সঠিক পরামর্শ। আমরা ফারুককে সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে আসছি। এছাড়া ফারুকের খামার নদী তীরবর্তী হওয়ায় জমিও বেশ উর্বর। ফলে অন্য স্থানের চেয়ে এখানে ফলন বেশি হয়। আগামীতে ফারুকের মত প্রান্তিক কৃষকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আরো দক্ষ করে তোলার পরকিল্পনা রয়েছে। সূত্র: বাসস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।