জুমবাংলা ডেস্ক : চট্টগ্রামে দলবদ্ধভাবে ‘গান গেয়ে গেয়ে, উল্লাস করে’ এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করে লাশ ফেলে দেওয়া হয়েছে।
নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন দুই নম্বর গেট আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের নিচে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে ‘মধু হই হই আঁরে বিষ খাওয়াইলা, কোন কারণে ভালোবাসার দাম ন দিলা’ গানটি গেয়ে যুবককে পেটানো হয়।
গত ১৩ আগস্ট রাতে এই ঘটনা ঘটলেও গতকাল (শনিবার) ওই যুবককে পিটিয়ে হত্যার ভিডিওটি ভাইরাল হলে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে তোলপাড় শুরু হয়। হতভাগ্য ওই যুবকের নাম শাহাদাত হোসেন। তিনি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী থানার পাঁচবাড়িয়া ইউনিয়নের নদনা গ্রামের মিয়া জান ভুঁইয়া বাড়ির মৃত মোহাম্মদ হারুনের ছেলে। থাকতেন নগরের কোতোয়ালি থানাধীন বিআরটিসি এলাকার বয়লার কলোনিতে। চাকরি করতেন স্টেশন রোডে অবস্থিত ফলমন্ডির একটি দোকানে।
ঘটনার পর দিন ১৪ আগস্ট ঘটনাস্থলের কয়েক কিলোমিটার দূরে প্রবর্তক মোড় থেকে লাশ উদ্ধারের পর তাকে শনাক্ত করা হয়। এ ঘটনায় শাহাদাতের চাচা মোহাম্মদ হারুন বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় মামলা দায়ের করেছিলেন।
খুঁটির সঙ্গে বেঁধে গান গেয়ে গেয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার ২০ সেকেন্ডের যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে সেটি দেখে স্ত্রী শারমিন আক্তার বলেন, এটি তার স্বামীকে মারারই দৃশ্য।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ১৩ আগস্ট দুপুর দুইটার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে কর্মস্থলের উদ্দেশে যান শাহাদাত। সন্ধ্যা সাতটার দিকে তার স্ত্রীর শারমিনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হয় শাহাদাতের। তখন কিছুক্ষণের মধ্যে বাসায় ফিরে আসবেন বলে স্ত্রীকে জানান। কিন্তু মধ্যরাত পর্যন্ত বাসায় ফেরেননি। এতে তার স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তখন তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। ১৪ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফেসবুকের মাধ্যমে নিহতের চাচা হারুন জানতে পারেন প্রবর্তক মোড়ের অদূরে বদনা শাহ মিয়া (রহ.) মাজারের বিপরীতে সড়কের পাশে তার ভাতিজা শাহাদাত হোসেনের লাশ পড়ে আছে। ওই রাতেই পুলিশের সাহায্যে তিনি লাশটি উদ্ধার করেন। পরে লাশটি মর্গে পাঠানো হয়।ময়নাতদন্ত শেষে লাশ দাফন করা হয়।
এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হলেও আসামি করা হয় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের। তবে কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে সে বিষয়েও এজাহারে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
এদিন রাতেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে শাহাদাতের লাশ শনাক্ত করেন তার স্ত্রী শারমিন আক্তার।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, লোহার সঙ্গে দুই হাত বেঁধে মারধর করার ভিডিও ফেসবুকে দেখে হামলার শিকার যুবককে পরিচিত মনে হয়। হামলার শিকার যুবকের সঙ্গে ১৪ আগস্ট লাশের পরনে থাকা শার্টের মিল পাওয়া যায়। পরে নিহতের স্ত্রীকে থানা পুলিশ ডেকে পাঠায়। থানায় এসে শনাক্ত করেন যাকে পেটানো হচ্ছে সেই আর কেউ নয়, তারই স্বামী শাহাদাত হোসেন।
ভিডিওতে দেখা যায়, ‘মধু হই হই আঁরে বিষ খাওয়াইলা, কোন কারণে ভালোবাসার দাম ন দিলা’-এই গানটি গেয়ে রীতিমতো উল্লাস ও উৎসব করতে করতে শাহাদাতকে পেটাচ্ছে কয়েকজন যুবক। নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন দুই নম্বর গেট আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের নিচে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।