জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি লাকী আক্তারকে গ্রেফতার এবং শাহবাগের জুডিসিয়াল কিলিং ও দায়িত্ব পালনকালে পুলিশের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিচার দাবি করে বিক্ষোভ করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) রাত ২টার দিকে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে এসব বিশ্ববিদ্যালয়।
শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের স্লোগান কন্যা খ্যাত লাকী আক্তার ও জুডিসিয়াল কিলিংয়ের বিচার দাবিতে মধ্যরাতে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা৷
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দিবাগত রাত ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। পরে তা ছাত্রদের নতুন হল, ট্রান্সপোর্ট, ছাত্রী হল ও শেখ মুজিবুর রহমান হলের সড়ক প্রদক্ষিণ করে ফের বটতলায় এসে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিল শেষে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের ৪৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী সুয়াইব হোসেন বলেন, ২০১৩ সালের শাহবাগ ২০২৫-এ এসে আরেকবার প্রতিষ্ঠিত হতে দিবো না। বাংলাদেশের বুকে আর একটা জুডিসিয়াল কিলিং হতে দেবো না। আরেকটা শাহবাগ করতে হলে আমাদের মরদেহের ওপর দিয়ে করতে হবে। কারা জুডিসিয়াল কিলিংয়ের রাস্তা তৈরি করেছিল, আমরা ভুলি নাই। এই সরকারকে বলতে চাই দ্রুত এদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
৪৯ ব্যাচের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আঞ্জুম শাহরিয়ার বলেন, শাহবাগে জুডিসিয়াল কিলিং কায়েম করা হয়েছিল। এই দেশের ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর পুনরায় কেউ যদি মব জাস্টিস ও জুডিসিয়াল কিলিং করতে চায়, ছাত্রজনতা তা কঠোর হস্তে দমন করবে।
এদিকে লাকি আক্তারকে ফ্যাসিবাদী আখ্যা দিয়ে তাকে গ্রেফতারের দাবিতে মধ্যরাতে উত্তাল হয়ে ওঠে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)। স্লোগানে স্লোগানে শিক্ষার্থীরা লাকি আক্তারসহ শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের কারিগরদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।
মঙ্গলবার রাত ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী হল থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি বিভিন্ন হল প্রদক্ষিণ করে জিরো পয়েন্টে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর, শাহবাগ নো মোর’, ‘তেরো না চব্বিশ, চব্বিশ চব্বিশ’, ‘শাহবাগ না জাস্টিস, জাস্টিস জাস্টিস’, ‘ল তে লাকি, তুই হাসিনা তুই হাসিনা’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, যতদিন জুলাই যোদ্ধারা জেগে থাকবে ততদিন ১৩ এর শাহবাগ ফেরত আসতে পারবে না। যতবার লাকিরা ফেরত আসার চেষ্টা করবে ততবার জুলাই ফিরে আসবে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, তোমরা বোনদের ধর্ষণকে কেন্দ্র করে যে নোংরা রাজনীতি করার চেষ্টা করছো তা বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ রুখে দেবে।
ছাত্রশিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি মোহাম্মদ আলি বলেন, শাহবাগ কায়েম করে দেশের প্রচলিত আইন লঙ্ঘন করে নিরপরাধ রাজনৈতিক নেতাদের ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল। রায় ঘোষণার পর মবের মাধ্যমে রায়কে চেঞ্জ করেছিল শাহবাগ। শাহবাগের মাধ্যমে শেখ হাসিনা তার ফ্যাসিবাদকে পাকাপোক্ত করেছিল। এই শাহবাগকে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হতে দেবো না। চব্বিশে যেভাবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছি, সেভাবে ভবিষ্যতেও ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করে শাহবাগের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে।
এছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারকে হুমকি, দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ ও দায়িত্ব পালনকালে পুলিশের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণঅভ্যুত্থান মঞ্চ।
মিছিল থেকে শিক্ষার্থীরা স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আমলে ২০১৩ সালে শাহবাগে গড়ে ওঠা প্ল্যাটফর্ম ‘গণজাগরণ মঞ্চের’ আলোচিত মুখ লাকি আক্তারকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবি জানান। এছাড়াও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সূচনাকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানান তারা।
মঙ্গলবার রাত দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রধান সড়ক ও আবাসিক হল প্রদক্ষিণ শেষে একই জায়গায় এসে মিলিত হোন।
এসময় গণঅভ্যুত্থান মঞ্চের সদস্য সচিব ইকরামুল হক মামুন বলেন, আমরা এই শাহবাগীদের বাংলাদেশের মাটিতে থাকতে দেবো না। আমাদের রক্তের বিনিময়ে হলেও তাদের থেকে দেশ মুক্ত করবো। আমরা তাদের বাংলার জমিনে উত্থান ঘটতে দেবো না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।