এশিয়া পেরিয়ে জেন-জি বিক্ষোভে এবার উত্তাল উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কো। কয়েকদিন ধরে চলা তরুণ প্রজন্মের (জেন জি) সরকারবিরোধী বিক্ষোভ এখন সহিংস রূপ নিয়েছে। বুধবার (১ অক্টোবর) দেশটির উপকূলীয় শহর আগাদিরের লাকলিয়া এলাকায় পুলিশ স্টেশনে হামলার সময় আইনশৃঙ্খলারক্ষী বাহিনীর গুলিতে দুই বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন।
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, একদল বিক্ষোভকারী লাকলিয়ার একটি পুলিশ স্টেশনে হামলা চালায়, যার উদ্দেশ্য ছিল অস্ত্র লুটপাট করা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি ও টিয়ারশেল ছোড়ে, এতে ঘটনাস্থলেই ২ জন নিহত হন। বিক্ষোভকারীরা থানা এবং পুলিশের যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করেছে বলেও জানা গেছে। যদিও বিক্ষোভকারীদের অনেকের হাতে ছুরি ছিল, তবে পুলিশের গুলিবর্ষণে তারা তা ব্যবহারের সুযোগ পাননি।
ক্রমবর্ধমান বেকারত্বের অবসান, দুর্নীতি দমন এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবার মান বৃদ্ধির দাবিতে গত ২৮ সেপ্টেম্বর শনিবার থেকে রাজধানী রাবাতে এই বিক্ষোভ শুরু হয়। জেনজি ২১২ নামের একটি কম পরিচিত সংগঠন এই বিক্ষোভের প্রধান সংঘঠক। এই সংগঠনটি টিকটক, ইনস্টাগ্রাম এবং গেমিং অ্যাপের মাধ্যমে তরুণ-তরুণীদের বিক্ষোভে নামার আহ্বান জানিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছে।
সহিংসতা শুধু লাকলিয়াতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। আগাদিরের বিয়ৌগ্রা এলাকায় বিক্ষোভকারীরা একটি ব্যাংক এবং কয়েকটি দোকানও লুটপাট করেছে।
প্রত্যাক্ষদর্শী আবদেস্লাম চেগ্রি রয়টার্সকে জানান, তিনি একটি ক্যাফেতে বসে খেলা দেখার সময় বেশ কয়েকজন তরুণকে পাশের দোকানে পাথর ছুড়তে এবং পরে দোকানের দরজা ভেঙে প্রবেশ করতে দেখেছেন। এছাড়া, পর্যটন শহর মারাকেশেও একটি পুলিশ স্টেশনে আগুন দেওয়ার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি ভবন ও দোকানে ভাঙচুর চালানো হয়েছে।
এদিকে, বিক্ষোভকারীরা সরাসরি মরক্কোর প্রধানমন্ত্রী আজিজ আখান্নৌচের পদত্যাগ দাবি করেছেন।
উল্লেখ্য, মরক্কোয় বর্তমানে বেকারত্বের হার ১২ দশমিক ৮ শতাংশ, যা ক্রমশ বাড়ছে। তরুণদের মধ্যে ৩৫ দশমিক ৮ শতাংশ এবং স্নাতক সম্পন্নকারীদের মধ্যে ১৯ শতাংশ বর্তমানে বেকার। বিক্ষোভ শুরুর দিকে শান্তিপূর্ণ থাকলেও সময় গড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা সহিংস হয়ে উঠেছে।
বিক্ষোভ শুরুর গত ৪ দিনে জেন জি ২১২ সংগঠনটির সদস্য সংখ্যা ব্যাপক বৃদ্ধি ঘটেছে—শুরুর দিকের মাত্র ৩ হাজার সদস্য থেকে বর্তমানে তা ১ লাখ ৩০ হাজারে পৌঁছেছে। তবে দেশটির অর্থনৈতিক রাজধানী ক্যাসাব্লাঙ্কা, উত্তরাঞ্চলীয় শহর ওউজদা এবং তাজায় এখনও কোনো সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি।
সূত্র: রয়টার্স
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।