জুমবাংলা ডেস্ক : রাজশাহীর বাগমারায় নিম্নমানের ওষুধ ব্যবহারের ফলে একজন মৎস্য চাষির প্রায় দেড় কোটি টাকার মাছ মারা গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ইউসুফ আলী নামের ওই ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, ফিসটেক লিমিটেড নামের একটি কোম্পানীর প্রতিনিধির পরামর্শে তাদের তৈরি নিম্নমানের ওষুধ ব্যবহার করায় এই ক্ষতি হয়েছে। এর ফলে তিনি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
তবে পরামর্শদাতা কোম্পানীর প্রতিনিধি আমিনুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
উপজেলার কাচারী কোয়ালীপাড়া ইউনিয়নের মোহনপুর গ্রামের ইউসুফ আলী নামের একজন মৎস্যচাষি একই এলাকার ১০০ বিঘার একটি দিঘি ইজারা নিয়ে রুই, কাতল, মৃগেলসহ কার্প জাতীয় মাছ চাষ করে আসছেন। কিছু দিন আগে তার দিঘির কিছু মাছের শরীরে ক্ষুদ্র আকৃতির পোকার আক্রমণ দেখা দেয়। এই বিষয়ে তিনি স্থানীয় মাছের খাদ্য বিক্রেতা হাফিজুর রহমানের কাছে পরামর্শের জন্য গেলে তিনি ফিসটেক নামের একটি মাছের খাবার এবং ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধি আমিনুল ইসলামের সঙ্গে পরিচয় করে দেন। হাফিজুর রহমান ওই কোম্পানীর স্থানীয় বিক্রেতাও।
আমিনুল ইসলামের কাছ থেকে ব্যবস্থাপত্র নিয়ে গত বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ৪৫ হাজার টাকায় গ্যাসোনেক্স ও আকুয়া ম্যাজিক প্লাস নামের দুটি ওষুধ কিনে দিঘিতে প্রয়োগ করেন ইউসুফ আলী। রাত দেড়টার দিক থেকে দিঘির মাছ লাফালাফি করতে থাকে ও মরতে শুরু করে। পাহারাদার বিষয়টি ইউসুফ আলীকে মুঠোফোনে জানান।
শুক্রবার সকাল পর্যন্ত দিঘিতে থাকা প্রায় এক কোটি ৬৫ লাখ টাকার মরে যায়। এর মধ্যে তিনি শ্রমিক দিয়ে মাছ ধরে স্থানীয় কয়েকটি আড়তে কম দামে বিক্রি করেন।
ইউসুফ আলী অভিযোগ করেন, ফিসটেক কোম্পানীর প্রতিনিধি আমিনুল ইসলামের পরামর্শে ও ব্যবস্থাপত্র অনুসারে ওষুধ ব্যবহার করে তার দিঘির সব মাছ মরে গেছে। ওষুধগুলো নিম্নমানের ও কীটনাশক মেশানো হতে পারে বলে তিনি সন্দেহ করছেন। এতে প্রায় এক কোটি ৬৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান।
তিনি বলেন, দিঘির সব মাছ মরে যাওয়াতে তিনি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
দিঘির আশপাশের সাধারণ লোকজন ও ইজারাদার ইউসুফ আলীর লোকজনদের ভেসে ওঠা মাছ ধরতে দেখা যায়। তারা জানান, ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রাত থেকে মাছ মরতে শুরু করেছে। অনেক মাছ মরে পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
রাজু আহম্মেদ নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, দিঘির মাছ মরে যাওয়াতে ইজারাদার ইউসুফ আলী নিঃস্ব হয়ে গেলেন। বিপুল পরিমান অর্থ তিনি এই মৎস্য চাষে ব্যয় করেছেন। রাত থেকে তিনিসহ এলাকার লোকজন মাছ মরতে দেখেছেন বলে জানিয়েছেন।
এই বিষয়ে ফিসটেক কোম্পানীর স্থানীয় প্রতিনিধি ও পরামর্শদাতা আমিনুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি লিখিতভাবে পরামর্শ দেওয়া এবং ওষুধ বিক্রির বিষয় স্বীকার করেছেন।
তবে তিনি দাবি করেন, ইউসুফ আলী তাঁর পরামর্শ মোতাবেক ওষুধ ব্যবহার না করে এর সঙ্গে আরও কিছু ওষুধ পুকুরে ব্যবহার করেছেন। এই কারণে মাছ মরে গেছে বলে দাবি করেন তিনি।