‘মশা আমার জীবনটাকে ওলট–পালট আর বাচ্চাগুলোকে এতিম করে দিলো’

'মশা আমার জীবনটাকে ওলট–পালট আর বাচ্চাগুলোকে এতিম করে দিলো’

জুমবাংলা ডেস্ক : মশার কামড়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে না–ফেরার দেশে চলে গেছেন চিকিৎসক দেওয়ান আলমিনার (মিশু)। আলমিনার দুই মেয়ে। বড়টির বয়স চার, ছোট মেয়ের মাত্র দুই বছর। মাকে দেখতে না পেয়ে বড় মেয়ে মাঝেমধ্যেই জানতে চাচ্ছে, তার মা কোথায়? আলমিনার দুই মেয়ে হয়তো জানেই না,  তাদের মা মারা গেছেন আর আসবেন না।

 'মশা আমার জীবনটাকে ওলট–পালট আর বাচ্চাগুলোকে এতিম করে দিলো’

গত সোমবার দিবাগত রাত সোয়া একটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান চিকিৎসক আলমিনা। ৩৯তম বিসিএসে নিয়োগ পাওয়া এই কর্মকর্তা রাজধানীর মাতুয়াইলে শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ বিভাগে কর্মরত ছিলেন। বিভাগটির আবাসিক শিক্ষার্থী (এমএম কোর্স) ছিলেন তিনি।

আলমিনার স্বামী চক্ষুবিশেষজ্ঞ সোয়েব আহমেদ বলেন, ‘এক মশার কামড়ে আমার পুরো পরিবার তছনছ হয়ে গেল। বাচ্চাগুলো এতিম হলো। ওদের যে বয়স, বড় হতে হতে মায়ের স্মৃতি বলে আর কিছুই থাকবে না। কেউ তো আর ওদের মায়ের অভাব পূরণ করতে পারবে না। আমার জীবনটাও ওলট–পালট হয়ে গেল। মশা না থাকলে তো এটা হতো না।’

সোয়েব আহমেদ জানান, গত ২৪ জুলাই আলমিনার জ্বর আসে। পরীক্ষায় ডেঙ্গু শনাক্ত হওয়ার পর বাসাতেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি। দুদিন পর আলমিনা জানান, তাঁর খারাপ লাগছে। বমিও হচ্ছে। এরপর তাঁকে রাজধানীর বেসরকারি এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে কাঁপুনি দিয়ে চেতনা হারান আলমিনা। পরীক্ষা করে জানা যায়, তিনি ডেঙ্গু এনসেফালাইটিসে আক্রান্ত।

দুই মেয়ে নিয়ে আলমিনার পরিবার। ছবি: সংগৃহীত

এরপর স্ত্রীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান জানিয়ে সোয়েব আহমেদ বললেন, মশা থেকেই তো ডেঙ্গু এনসেফালাইটিস হয়েছে। সিটি করপোরেশন যদি মশা নিয়ন্ত্রণ করতে পারত, তাহলে হয়তো তাঁর এ পরিস্থিতি হতো না। মাত্র ৩২ বছর বয়সে স্ত্রীকে এভাবে মরতে হলো। সূত্র : প্রথম আলো