মশার জ্বালায় সবাই অস্থির। সিটি করপোরেশন তো রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ির ভেতরে পর্যন্ত ওষুধ স্প্রে করেও কূলকিনারা পাচ্ছে না। বাসায় মশার কয়েল জ্বালাই। কত ধরনের স্প্রে করি। তাতে মশার উপদ্রব কমে বটে, কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই ফিরে আসে। তাই মশার হাত থেকে বাঁচার একটি সাধারণ ব্যবস্থা হিসেবে আমরা নিজের গালে, হাতে, মুখে চাপড় মারি।
কিন্তু মশা তার আগেই চম্পট দেয়। তবে আমরা যদি সব সময় হাত দিয়ে মশা তাড়াই, তাহলে মশারাও কিন্তু হাল ছেড়ে দেয়। যে ব্যক্তি বেশি হাত নেড়ে মশা মারার চেষ্টা করেন, মশারা টের পেয়ে যায় যে তিনি সাংঘাতিক লোক। তাই তাঁকে এড়িয়ে চলে। আমরা যেমন বিপদ এড়িয়ে চলি, মশারাও তেমনি বুঝতে পারে কার গায়ে হুল ফোটানো নিরাপদ।
মশার আচরণ নিয়ে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা হাত দিয়ে অনবরত মশা মারার চেষ্টা করেন, তাঁদের গায়ের গন্ধ ও অন্যান্য খুঁটিনাটি বিষয় মশারা মাত্র ১৫ মিনিটেই বুঝে যায়। তখন আর তাঁকে ঘাঁটায় না। মানে তাঁদের গায়ে হুল ফোটানোর চেষ্টা করে না। বেশি বেশি কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ মশাকে আকৃষ্ট করে। অন্তঃসত্ত্বা নারীরা বেশি কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ ঘটান। তাই মশারা তাঁদের কামড়াতে বেশি আগ্রহী।
মশার কামড়ে ম্যালেরিয়া থেকে চিকুনগুনিয়া, জিকা ভাইরাস—কত বিপজ্জনক অসুখ-বিসুখই না হয়। তাই মশা গায়ে বসলেই চাপড় লাগান। তখন মশারা ওই মানুষটার গায়ের গন্ধ, শরীরের তাপমাত্রা, ঘামের গন্ধ প্রভৃতি চিনে রাখবে। সহজে আর ওদিকে যাবে না। আপনি মশার উপদ্রব থেকে বাঁচবেন। কিন্তু মানুষের শরীরের গন্ধে প্রায় ২০০ ধরনের রাসায়নিক পদার্থের উপাদান রয়েছে।
এত বিশাল উপাদানের সংমিশ্রণ মশারা মনে রাখে কীভাবে? এ বিষয়ে পরিষ্কার কিছু জানা যায়নি। তবে গবেষকেরা মনে করেন, এখানে ডোপামিন একটি বড় ভূমিকা পালন করে। এই রাসায়নিক উপাদানটি মানুষ, মৌমাছি ও অন্যান্য পোকামাকড়কে নতুন কিছু শিখতে মস্তিষ্ককে উজ্জীবিত করে। তাই হাত দিয়ে নির্বিচারে মশা মারুন বা মারার চেষ্টা করুন, কয়েক মিনিটেই মশা আপনাকে ছেড়ে অন্য কাউকে হুল ফোটানোর জন্য চলে যাবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।