আপনার হাতে মশা বসেছে। কামড়াচ্ছে। টেরও পাচ্ছেন। কিন্তু যে-ই না হাত দিয়ে মারতে গেলেন, মশা চম্পট! চাপড় দিয়ে মশা মারা যে কত কঠিন তা আমরা প্রায় সবাই জানি। মশার কামড়ে ম্যালেরিয়ার ভয় তো আছেই, আছে ডেঙ্গুরও ভয়। এখন এসেছে জিকা ভাইরাসের ভয়। গত আগস্টে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে যে রিও সামার অলিম্পিক গেমস অনুষ্ঠিত হলো, সেটাও প্রায় অনিশ্চিত হয়ে উঠেছিল এই ভাইরাসের কারণে।
অবশ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সেই আশঙ্কা দূর করেছে। অলিম্পিক ভালোভাবেই হয়ে গেছে। এডিস ইজিপটি (Aedes aegypti) এবং এইডিস আলবোপিকটাস (Aedes albopictus) প্রজাতির মশার মাধ্যমে জিকা ভাইরাস ছড়ায়। সংক্রমিত ব্যক্তির সঙ্গে কারও শারীরিক সম্পর্কের কারণেও অন্য ব্যক্তির দেহে জিকা ভাইরাস যায়। কোনো সন্তানসম্ভবা নারীর দেহে এই ভাইরাস থাকলে অস্বাভাবিক ছোট মাথা নিয়ে তার শিশু জন্ম নিতে পারে। বাংলাদেশে অবশ্য এখনো জিকা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়নি। কিন্তু সাবধান থাকতে হবে।
সাবধান তো হব, ওষুধ স্প্রে করে মশা নির্মূলের কর্মসূচি সিটি করপোরেশন চালাচ্ছে। তারপরও তো কিছু মশা থেকে যায় এবং ওরা নির্দয়ভাবে আপনার শরীরে হুল ফোটায়। আর তখন মারতে গেলে চট করে পালিয়ে যায়। ব্যাপার কী? মশা কামড়ালে আমরা সহজে মারতে পারি না কেন? পারি না, কারণ সে প্রথমেই ত্বকের নির্দিষ্ট অংশ সাময়িক ক্ষণের জন্য সামান্য অবশ করে দেয়। রক্ত চুষে নিয়ে উড়ে যাওয়ার পর আমরা ব্যথা অনুভব করে থাপ্পড় মারি, কিন্তু ততক্ষণে মশা চম্পট দিয়েছে!
রক্ত চোষার সময় মশা তার শুঁড়ের সাহায্যে লালা ছড়িয়ে দেয়, যেন রক্ত জমাট না বাঁধে। তাদের লালায় যে প্রোটিন থাকে, তা আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থা শনাক্ত করে বহিরাগত শত্রু হিসেবে তাকে আক্রমণ করে। এ কারণে আমরা মশার কামড়ে চুলকানি অনুভব করি।
এডিস মশা সহজেই দৃষ্টি এড়িয়ে যায়। কারণ, ওরা পেছন দিক থেকে এসে হাতের কনুই বা পায়ের গোড়ালিতে হুল ফোটায়। এসব মশা সাধারণত খুব ভোরে বা সন্ধ্যায় কামড়ায়। জোরে ফ্যান চালিয়ে ঘুমালে বা ফ্যানের বাতাসে বসে কাজ করলে মশারা সহজে কাছে আসতে পারে না। বাতাসের তোড়ে দূরে সরে যেতে বাধ্য হয়। আর তা ছাড়া, ফ্যানের বাতাসে আমাদের প্রশ্বাসের সঙ্গে বেরিয়ে আসা কার্বন-ডাই-অক্সাইডও দূরে চলে যায়।
মশা মূলত কার্বন-ডাই-অক্সাইডের গন্ধে ও শরীরের উষ্ণতায় আকৃষ্ট হয়ে কামড়াতে আসে। তাই ফ্যানের বাতাস মশার হাত থেকে বাঁচতে কিছুটা সাহায্য করে। অবশ্য মশারিতেও কাজ হয়। সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা গেছে আরেক মজার তথ্য। এসব গবেষণায় দেখা গেছে, চামড়ায় ব্যাকটেরিয়া নির্গত রাসায়নিক পদার্থের ধরনের ওপরও মশা আকৃষ্ট হয়। আবার কিছু রাসায়নিকের প্রতি মশারা মোটেও আকর্ষণ বোধ করে না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।