আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইসলামের প্রথম কিবলা মসজিদুল আকসা এবং তার পাশেই নির্মিত ইসলামী স্থাপত্যের সর্বপ্রাচীন নমুনা মসজিদে কুব্বাতুস সাখরা নিয়ে মানুষের কৌতূহলের অন্ত নেই। অনেকেরই প্রশ্ন আল আকসা আসলে কোনটি?
মিডিয়ায় সোনালী গম্বুজ বিশিষ্ট কুব্বাতুস সাখরা (ডোম অব দ্য রক) দেখিয়ে অধিকাংশ সময় আল আকসার পরিচয় দেয়া হয়।
আবার লোকমুখে একথাও শোনা যায় যে, সোনালী গম্বুজের ওই মসজিদটি আসলে আল আকসা নয়; বরং মুসলমানদের প্রথম কিবলা থেকে মানুষের ভক্তি ও ভালোবাসা উঠিয়ে নিতে বিধর্মী বা হলুদ মিডিয়া সেটিকে মসজিদ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে।
তবে আমরা যদি আল আকসা নির্মাণের ইতিহাস জানি, তাহলে আমাদের অন্তরে সন্দেহের আর কোনো অবকাশ থাকবে না যে, আল আকসা আসলে কোনটি?
সর্ববৃহৎ আরবি ইসলামী ওয়েবসাইট ‘আল মাউজু ও উইকিপিডিয়া’-এর তথ্যানুযায়ী আমরা এর সমাধান বের করার চেষ্টা করব।
প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ আল্লামা ইবনে তাহমিয়া রহ.-এর মতে, আসলে আল্লাহর নবী হজরত সুলায়মান (আ.) এর তৈরি সম্পূর্ণ ইবাদত স্থলটির নামই হল মসজিদুল আকসা। আর মুহাদ্দিসরাও (হাদিস বিষয়ে পণ্ডিত) এই বিষয়ে একমত যে, সম্পূর্ণ ইবাদত স্থলটিই ইসলামের নবী হজরত সুলাইমান (আ.) তৈরি করেছিলেন। পরবর্তীকালে এটি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।
মুসলমানরা বিশ্বাস করে, নির্মাণের পর থেকে এটি ঈসা (আ.) সহ অনেক নবীর দ্বারা এক আল্লাহকে উপাসনার স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে এসেছে। এই স্থান মুসলিমদের প্রথম কিবলা (প্রার্থনার দিক)।
হিজরতের পর কোরআনে কারীমের আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার কারণে পবিত্র কাবা শরিফ নতুন কিবলা হয়। আর ‘আল-আকসা’ মসজিদ বলতে বোঝায় কিবলি মসজিদ, মারওয়ানি মসজিদ (কুব্বাতুস সাখরা) ও বুরাক মসজিদ (৩টির) সমন্বয় যা জেরুসালেমের ‘হারাম আল শরীফ’-এর চার দেয়ালের মধ্যেই অবস্থিত।
তবে মূল আল আকসা বা কিবলি মসজিদ হল,ধূসর সীসার প্লেট দ্বারা আচ্ছাদিত গম্বুজওয়ালা স্থাপনাটি।
আর আল আকসা নামে অধিক প্রসিদ্ধ সোনালী গম্বুজ বিশিষ্ট স্থাপনার নাম মসজিদে কুব্বাতুস সাখরা। তবে এটিকে আল আকসা বললেও সমস্যা নেই; কারণ,মসজিদটি ‘হারাম আল শরীফ’-এর চৌহদ্দিতেই অবস্থিত।
আল আকসা স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করায় একাধিকবার দখলদার বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতার হওয়া জেরুসালেমে বসবাসরত যুবক আমরো রাজি বলেন, আসলে আল আকসা প্রাঙ্গণটা অনেক বিস্তৃত,যা একীভূত করেছে পবিত্র তিন মসজিদকে।
সোনালী গম্বুজের কুব্বাতুস সাখরায় সাধারণত নারীরা নামাজ আদায় করেন। আর আল আকসা বলতে সম্পূর্ণ চৌহদ্দিকেই আমরা জানি-যার ইসলামী পারিভাষিক নাম ‘পবিত্র হারাম’। তবে এখানের মূল মসজিদ হচ্ছে, ধূসর রঙে রঙিন গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটি।
কুব্বাতুস সাখরার ইতিহাস:
এই মসজিদটি ডোম অব দ্য রক বলেও পরিচিত। এটি জেরুজালেমের পুরনো শহরের টেম্পল মাউন্টের ওপর অবস্থিত একটি গম্বুজ।
উমাইয়া খলিফা আবদুল মালিক ইবনে মারওয়ানের আদেশে ৬৯১ সালে এর নির্মাণ সমাপ্ত হয়। এ জন্য এটিকে মারওয়ানি মসজিদও বলা হয়।বর্তমানে এটি ইসলামী স্থাপত্যের সর্বপ্রাচীন নমুনা।
এটিকে ফিলিস্তিনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য স্থান বলে উল্লেখ করা হয়। মহানবী হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মেরাজের রাতে এখান থেকে মহাকাশ গমন করেন। এ জন্য ধর্মীয় দিক দিয়ে স্থানটির আলাদা মর্যাদা রয়েছে।
লেখক: আলেম ও প্রাবন্ধিক
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।