জুমবাংলা ডেস্ক : পাঁচ বছর বয়স থেকে ছিলেন সৌদি আরবে। সেখানে থেকেই হয়েছেন কোরআনে হাফেজ। সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থাতেও দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। কিন্তু হাফেজ হয়েও কাজ নিয়েছিলেন সৌদি আরবের একটি গাড়ির শো-রুমে। এরপরই অসৎসঙ্গে জড়িয়ে পড়েন হাফেজ আজিজ মোহাম্মদ। তার মধ্যে গাড়ি চুরির অপরাধে জেল খেটেছেন তিন বছর। দেশে ফিরে মাদকের ছোবলে আবারও বাঁকা পথে পা বাড়ান। মাদকের টাকা যোগাড় করতেই জড়িয়ে পড়েন চোর চক্রের সাথে। এই চক্রের ৩ সদস্যকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
এর আগে গত ২৩ মার্চ সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার মো. মাসুদ সারওয়ারের অফিস কক্ষে সংবাদ সম্মেলনের সময় তার ২টি মোবাইল ফোন, একটি ওয়ালেটের ভেতর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং নগদ ৪৫ হাজার টাকা খোয়া যায়। পাজামা-পান্জাবি ও টুপি পরা অভিযুক্ত যাকে সেদিনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তিনি আজিজ মোহাম্মদ। আজিজের পরিবার সৌদিতে বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত একটি সম্ভ্রান্ত পরিবার। তার বাবা মক্কার একটি এতিহ্যবাহী মসজিদের ইমাম ও খতিব।
ডিবি জানায়, স্টেশন ম্যানেজারের মোবাইল চোর আজিজ একজন কোরআনে হাফেজ। তিনি দীর্ঘ ৩৩ বছর সৌদি আরবের বিভিন্ন নাম করা মসজিদের ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ইমামতির পাশাপাশি গাড়ি চালাতেন। এরপর সৌদি আরবে গাড়ি চুরি করা শুরু করেন আজিজ। গাড়ি চুরির মামলায় তিন বছর সাজাও হয় তার। সাজা ভোগ করে ২০১৮ সালে বাংলাদেশে এসে কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থান নিয়ে একটি মাদরাসায় শিক্ষকতা শুরু করেন, কিছুদিন পর মাদরাসায় মোবাইল চুরি করে ধরা পড়লে তার চাকরি চলে যায়।
বৃহস্পতিবার (১৯ মে) দুপুরে গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান গণমাধ্যমকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ঢাকা মহানগর এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনাকালে মোবাইল চোর চক্রের সক্রিয় তিন সদস্যকে ১৭টি চোরাই মোবাইলসহ গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারদের তথ্যমতে কমলাপুর রেলস্টেশন, গুলিস্তান গোলাপশাহ মাজারসহ বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১৭টি উন্নতমানের চোরাই মোবাইল উদ্ধার করা হয়। ডিবি গুলশান বিভাগের ডিসি বলেন, গত ২৩ মার্চ সকাল ১০টা ২০ মিনিটের দিকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার মো. মাসুদ সারওয়ারের অফিস কক্ষে ঈদুল ফিতরের অগ্রিম টিকিট বিক্রি সংক্রান্ত প্রেস কনফারেন্সের সময় দুটি মোবাইল ফোন, একটি ওয়ালেটের ভেতর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং নগদ ৪৫ হাজার টাকাসহ টেবিলের ওপর থেকে সুকৌশলে চুরি করে নিয়ে যায় চোর। এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ ঘটনাটির ছায়া তদন্ত করতে থাকে। ঘটনার ২৫ দিন পর তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় গত বুধবার (১৮ মে) চোরাই মোবাইলসহ চোর আজিজ মোহাম্মদকে গ্রেফতার করা হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।