মহাকাশযাত্রা আর মহাকাশে বসতি স্থাপনসংক্রান্ত গবেষণার ক্ষেত্রে ইলন মাস্কের স্পেস এক্স অনেকটাই এগিয়ে আছে। একের পর এক স্টারশিপ লঞ্চ করে নানা মাইলফলক গড়ে চলেছেন এই টেক জিনিয়াস৷ তবে এবার পঞ্চম টেস্ট রকেটটি সত্যিই তেলেসমাতি করে দেখাল।
আমরা জানি, রকেটের নিচের সুপার হেভি বুস্টার অংশটি রকেট লঞ্চ করার পরে ভূপৃষ্ঠ থেকে একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব পর্যন্ত পৌছে মূল রকেট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় আর হিসেব করে একে সাগরের পানিতেই ফেলা হয়। রকেটের প্রাথমিক প্রয়োজনীয় ত্বরণ অর্জনে কাজে লাগার পর এই বুস্টারের জ্বালানি ফুরিয়ে যায়। পৃথিবীর অ্যাটমোসফিয়ার পার হয়ে এই অংশটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় রকেট থেকে। আর ফিরে আসার পরে আসলে এই বুস্টার আর ব্যবহারযোগ্য থাকে না সাধারণত। বেশিরভাগ সময়ই ধ্বংস হয়ে যায়।
কিন্তু ইলন মাস্কের স্পেস এক্স বহুদিন ধরেই গবেষণা করছে এই লঞ্চ সিস্টেম কীভাবে রিইউজ বা পুনর্ব্যবহার করা যায়, তা নিয়ে। আর সেদিক দিয়ে যুগান্তকারী অর্জন বলা চলে এই বুস্টার প্রায় অক্ষতভাবে ফিরে আসার বিষয়টি। এতে রকেটের অপারেশন খরচ কমে আসবে অনেক। মহাকাশযাত্রার বিষয়গুলো চলে আসবে আয়ত্তের মধ্যে। এরকমই পরিকল্পনা ইলন মাস্কের।
বুস্টার অংশটি লঞ্চপ্যাডে ফিরে আসার পরে যেভাবে বিশাল যান্ত্রিক হাত দিয়ে সেটিকে ক্যাচ করা হয়েছে, তাও এক দারুণ ব্যাপার হয়েছে। আর বুস্টার ল্যান্ড করার পর স্পেস এক্সের প্রকৌশলীরা বলছেন, আজকের দিনটি ইতিহাসের বইয়ে লিখে রাখার মতো।
যদিও পঞ্চমবারের মতো রকেট উৎক্ষেপণ করলেন তাঁরা, সুপার হেভি বুস্টার ফিরিয়ে আনার বিষয়টি এবারই প্রথম। আঠারো মাস আগে প্রথম রকেট লঞ্চ করেছিল স্পেস এক্স। আর তা বিস্ফোরিত হয়েছিল উৎক্ষেপনের পর পর। অথচ এবারেরটিসহ গত দুটি রকেট নিয়ে এল অনন্য সাফল্য।
এবারের যাত্রায় পৌনে তিন মিনিটের মাথায় বুস্টার বিচ্ছিন্ন হয়েছে রকেট থেকে। এরপর তা যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের বোকা চিকা এলাকায় লঞ্চপ্যাডের দিকে ফিরে আসতে থাকে। সুপার হেভি বুস্টারটি পৃথিবীর অ্যাটমোসফিয়ারে আবার ঢোকার সময় যেন বেশি উত্তপ্ত বা ওভারহিট হয়ে বিস্ফোরণ না ঘটে তাই এর গতি কমানো হয়েছে অনেকটা। ৪৮০ ফিট লম্বা ল্যান্ডিং টাওয়ারে ফিরে আসার সময় অনেকটা বাতাসে ভাসছিল এটি।
আর রকেটের মূল অংশটি বুস্টারের থেকে আলাদা হওয়ার পরে নিজস্ব ইঞ্জিনেই চলার কথা। এই টেস্ট রকেটটিও চল্লিশ মিনিট পরে পৃথিবীতে ফিরে এসে ভারত মহাসাগরে নিরাপদে ল্যান্ড করেছে৷ এক ঢিলে দুই পাখি মেরে অর্থাৎ এক রকেটে দুটি বড় অর্জন পেয়ে উচ্ছ্বসিত স্পেস এক্সের সিইও ইলন মাস্ক এক্স এ লিখেছেন, ‘স্পেসশিপ একেবারে লক্ষ্যস্থলেই ফিরে এসেছে৷ দ্বিতীয় লক্ষ্যও অর্জিত’।
আর দারুণ ব্যপার হলো, শুধু যে বুস্টারটি সফলভাবে ফিরে এসেছে তা নয়, স্পেস এক্স বলছে এর হার্ডওয়্যারের অনেক কিছুই রিইউজ বা পুনর্ব্যবহার করা যাবে। ইলন নিজেই টুইট করেছেন এই নিয়ে সবিস্তারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।