আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে আমরা মহাবিশ্বের গভীরে আরও ভালোভাবে চোখ বুলাতে পারি। হাবল টেলিস্কোপ বা স্পিৎজার থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের মতো উন্নত প্রযুক্তি আমাদের মহাবিশ্বের বর্ণিল অতীত দেখার সুযোগ করে দিয়েছে। পাওয়া গেছে অতীতের অনেক গ্যালাক্সি পর্যবেক্ষণের সুযোগ। ফলে মহাবিশ্বের উৎপত্তি ও বিবর্তন সম্পর্কে আরও স্বচ্ছ ধারণা পাচ্ছি আমরা।
মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রগুলো মহাকাশ সম্পর্কে জানাতে, ছবিতে মহাবিশ্বের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে নানা ধরনের ছবি প্রকাশ করে প্রায়ই। সেসব ছবি থেকে বাছাইকৃত ৫টি অনিন্দ্য সুন্দর গ্যালাক্সির তথ্য নিয়ে আজকের এ আয়োজন।
মেসিয়ার ৮২
মেসিয়ার ৮২ বা এম৮২ গ্যালাক্সিতে প্রতিনিয়ত জন্ম নিচ্ছে নতুন শিশু নক্ষত্র। এর আরেক নাম সিগার গ্যালাক্সি। সাধারণের চেয়ে অনেক বেশি হারে নক্ষত্র জন্মাচ্ছে এ গ্যালাক্সিতে। বলা চলে, নক্ষত্রজন্মের বিস্ফোরণ হচ্ছে! বর্তমানে আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির চেয়ে প্রায় দশ গুণ বেশি নক্ষত্র আছে এতে!
১৭৭৪ সালে জার্মান জ্যোতির্বিদ জোহান এলার্ট বোর্ড মেসিয়ার ৮২ গ্যালাক্সি আবিষ্কার করেন। এটি পৃথিবী থেকে প্রায় ১২ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে রয়েছে। আজও নতুন নক্ষত্র জন্মাচ্ছে বলেই গ্যালাক্সিটি এখনো পূর্ণাঙ্গ আকৃতি পায়নি।
এআরপি ২৭৩
সবচেয়ে সুন্দর ছায়াপথগুলোর মধ্যে এএরপি ২৭৩ অন্যতম। এটি পৃথিবী থেকে ৩০০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে রয়েছে। সর্পিলাকার এ গ্যালাক্সি ইউজিসি ১৮১০ নামেও পরিচিত। এখানে আসলে দুটি গ্যালাক্সি রয়েছে। একটা বড়, অন্যটি ছোট। ছোটটির নাম ইউজিসি ১৮১৩। এটির তুলনায় অন্যটি প্রায় পাঁচ গুণ বড়। গ্যালাক্সি দুটি বর্তমানে পরস্পরের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত। ফলে ধুলো, গ্যাস ও নক্ষত্র মিলে তৈরি হয়েছে অনিন্দ্য সুন্দর নকশা।
ট্যাডপোল গ্যালাক্সি
এর আরেক নাম ইউজিসি ১০২১৪। সর্পিলাকার এ গ্যালাক্সির আকৃতি বিকৃত। এ জন্যই এটি দেখতে এত সুন্দর। অন্য একটি গ্যালাক্সির সঙ্গে সংঘর্ষের কারণে এর আকৃতি এমন বিকৃত হয়ে গেছে। পৃথিবী থেকে প্রায় ৪২০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে এর অবস্থান। আকৃতি বিকৃতির ফলে এর মূল অংশে বাহুর পাশাপাশি রয়েছে দীর্ঘ লেজ। গ্যালাক্সির মূল অংশের কেন্দ্রে রয়েছে বিশালাকার একটি কৃষ্ণগহ্বর। আর প্রায় ২ লাখ ৮০ হাজার আলোকবর্ষ জুড়ে ছড়িয়ে থাকা লেজটিতে রয়েছে বিপুল সংখ্যক নক্ষত্র ও গ্যাস।
অ্যান্টেনা গ্যালাক্সি
কয়েক শ মিলিয়ন বছর আগে দুটি গ্যালাক্সির সংঘর্ষ থেকে তৈরি হয় একটি নতুন গ্যালাক্সি। ক্যাটালগের নাম এনজিসি ৪০৩৮-৪০৩৯। গ্যালাক্সিটির ভালো নাম, অ্যান্টেনা গ্যালাক্সি। নাসার হাবল স্পেস টেলিস্কোপের তোলা ছবি থেকে বিজ্ঞানীরা এর ব্যাপারে জানতে পেরেছেন।
ছবিতে এ নক্ষত্র জন্মের সময়কার অঞ্চলগুলো স্পষ্ট দেখা যায়। একে সুপার স্টার ক্লাস্টার বলে। এর দীর্ঘ বাহুর কারণে নাম রাখা হয়েছে অ্যান্টেনা গ্যালাক্সি। টেলিস্কোপের সাহায্যে এই বাহুগুলো পৃথিবী থেকে দেখা যায়।
গ্যালাক্সি এনজিসি ৬৭৫৩
এটিও একটি সর্পিলাকার গ্যালাক্সি। ব্রিটিশ জ্যোতির্বিদ জন হার্শেল ১৮৩৬ সালের ৫ জুলাই এটি আবিষ্কার করেন। মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি থেকে এটি রয়েছে ১৪২ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে। এখন পর্যন্ত নাসার হাবল স্পেস টেলিস্কোপের তোলা শেষ ছবি এটি। এই গ্যালাক্সির সর্পিলাকার বাহুতে অসংখ্য নক্ষত্র রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।