প্রাচীন সময়ে নদী এবং সুপেয় পানির উৎস সভ্যতা এবং জনপদ গড়ে তোলার পেছনে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতো। সিন্ধু নদীর অববাহিকায় হরপ্পো সভ্যতা এবং মহেঞ্জোদারো জনপদ ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। আজকে এ বিষয় নিয়ে চমৎকার কিছু তথ্য আপনাদের জন্য তুলে ধরা হবে।
এ সভ্যতা এবং জনপদ আবিষ্কারের পর থেকে তার রহস্য উন্মোচন এর জন্য গবেষণা চললেও তা নানা কারণে বাঁধার সম্মুখীন হয়েছে। ১৯০৪ সালে ব্রিটিশ ভারতের গভর্নর লর্ড কার্জন উদ্যোগ গ্রহণ করলে এ গবেষণা প্রাণ ফিরে পায়।
আপনি অনায়াসে এটিকে বিশ্বের সবথেকে রহস্যময় সভ্যতা হিসেবে অভিহিত করতে পারবেন। কেননা এর অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এখনো অজানা রয়ে গেছে। সিন্ধু নদীর অববাহিকার মাটি ছিল ভীষণ উর্বর। সরস্বতী নদী মহেঞ্জোদারো জনপদ অগ্রগামী হওয়ার পেছনে বেশি ভূমিকা পালন করেছে।
১০ লাখ বর্গ কিলোমিটার পর্যন্ত এর আয়তন বিস্তৃত ছিল। ওই সময়ে এ জনপদ ছিল বেশ আধুনিক এবং সাজানো-গোছানো। ২০০০ বছর ধরে এ জনপদ টিকে ছিল। তাদের যুদ্ধ-বিগ্রহের কোন ইতিহাস নেই এবং বাইরের কেউ তাদের আক্রমণ করেছে বলে মনে হয় না।
জনপদের অধিবাসিরা চলে যাওয়ার পর দীর্ঘ সময় ধরে মানুষের লোক চক্ষুর আড়ালে ছিল এটি। বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে, সরস্বতী নদী শুকিয়ে যাওয়া জলবায়ু পরিবর্তন বা ভূমিকম্পের জন্যই এ জনপদের অধিবাসীরা চলে গিয়েছিল।
আসলে সরস্বতী নদীর উপর এ জনপদের বাসিন্দারা অনেক বেশি নির্ভরশীল ছিল নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ার ফলে তারা নিজেদের জন্মভূমি ফেলে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিল। এ জনপদের কিছু অনন্যা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমন এখানে কোন রাজপ্রাসাদ বা ধর্মীয় উপাসনালয় নেই।
এ জনপদ প্রতিনিধি পরিষদ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতো। কোন রাজা বা রাজ পরিবার দ্বারা নয়। এখানে ধর্মযাজক ছিল না বা ধর্মীয় বৈষম্যের কোন নজির মিলে না। এ জনপদের সমাজ ব্যবস্থা ছিল বেশ আধুনিক এবং সুষম।
জনপদের বাসিন্দারা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার উপর গুরুত্ব দিয়েছিল। তাদের ব্যক্তিগত স্নান কেন্দ্রের আকার ছিল বড়। তাদের বাড়ি ছিল ইটের দেয়ালের তৈরি। আধুনিক শৌচাগার এবং সন্তোষজনক পয়ো:নিষ্কাশন ব্যবস্থা ছিল। সবসময় সুপেয় পানির ব্যবস্থা ছিল।
তাদের নাবিক দক্ষ হওয়ার কারণে আরব সাগর পেরিয়ে ওমান পর্যন্ত ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করতে পারত। এ জনপদের অধিবাসীর সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ ১ লাখ। তারা যতটা দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছিল অন্যান্য সভ্যতায় খুব কম তা দেখা যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।