মাইক্রোসফট তার জনপ্রিয় ইলেকট্রনিক পণ্যের উৎপাদন চীন থেকে সরিয়ে নিচ্ছে। মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটি ২০২৬ সালের মধ্যে সারফেস ল্যাপটপ এবং এক্সবক্স কনসোলের উৎপাদন অন্য দেশে স্থানান্তর করার পরিকল্পনা করছে। এই সিদ্ধান্ত বাণিজ্যিক উত্তেজনা ও সরবরাহ শৃঙ্খল নিরাপত্তা জোরদারের প্রয়াস থেকে নেওয়া হয়েছে।
নিকেই এশিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, মাইক্রোসফট ইতিমধ্যে সার্ভার উৎপাদন চীন থেকে সরিয়ে নিয়েছে। কোম্পানিটি এখন তার ফ্ল্যাগশিপ হার্ডওয়্যার পণ্যগুলোর উৎপাদন কার্যক্রম পুনর্বিন্যাস করছে। এই পদক্ষেপ গ্লোবাল টেক জায়ান্টগুলোর মধ্যে একটি বড় ট্রেন্ডকে নির্দেশ করে।
বিশ্বব্যাপী টেক কোম্পানিগুলোর সরবরাহ শৃঙ্খল পুনর্বিন্যাস
মাইক্রোসফটের এই সিদ্ধান্ত একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এর আগে অ্যাপলও ভিয়েতনাম ও ভারতের মতো দেশে তার উৎপাদন কার্যক্রম বাড়িয়েছে। রয়টার্সের তথ্যমতে, মার্কিন-চীন বাণিজ্য সংঘাত কোম্পানিগুলোর জন্য একটি বড় ঝুঁকি তৈরি করেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, কোভিড-১৯ মহামারি সরবরাহ শৃঙ্খলের ঝুঁকি প্রকট করে তুলেছিল। এরপর থেকেই কোম্পানিগুলো তাদের উৎপাদন একাধিক দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার কৌশল নিচ্ছে। এই কৌশলকে ‘চায়না প্লাস ওয়ান’ বলা হয়।
মাইক্রোসফটের সরবরাহ শৃঙ্খলে কী পরিবর্তন আসছে?
মাইক্রোসফটের সারফেস ল্যাপটপ লাইন খুবই জনপ্রিয় একটি প্রিমিয়াম পণ্য। নতুন উৎপাদন স্থান নির্ধারণে গুণগত মান ও খরচ নিয়ন্ত্রণ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে। তবে কোম্পানিটি এ বিষয়ে এখনো কোন আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি।
এক্সবক্স কনসোলের উৎপাদনও স্থানান্তরিত হবে বলে জানা গেছে। গেমিং কনসোলের বাজারে সনি ও নিনটেন্ডোর সাথে প্রতিযোগিতায় মাইক্রোসফটকে কোন প্রভাব ফেলবে কিনা তা নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনেও টেক জায়ান্টদের এই ধরনের পদক্ষেপের কথা উঠে এসেছে।
বাণিজ্যিক উত্তেজনা ও ভবিষ্যত সম্ভাবনা
সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে চীনের উপর আরোপিত উচ্চ শুল্ক নীতির সম্ভাবনা আবারও তৈরি হয়েছে। এই অনিশ্চয়তা কোম্পানিগুলোকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করছে। নতুন উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে ভিয়েতনাম, ভারত ও মেক্সিকোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
মাইক্রোসফটের এই সিদ্ধান্ত বিশ্ব অর্থনীতিতে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। প্রযুক্তি শিল্পের নেতৃত্ব দেওয়া এই কোম্পানিটি সরবরাহ শৃঙ্খল বৈচিত্র্যকরণের মাধ্যমে নিজেদের ভবিষ্যতকে সুরক্ষিত করতে চাইছে। এই পদক্ষেপ গ্লোবাল সাপ্লাই চেইন পুনর্গঠনের একটি বড় উদাহরণ হয়ে থাকবে।
জেনে রাখুন-
Q1: মাইক্রোসফট কেন চীন ছাড়ছে?
বাণিজ্যিক উত্তেজনা, সরবরাহ শৃঙ্খল ঝুঁকি কমানো এবং ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা এড়াতেই মাইক্রোসফট চীন ছাড়ছে।
Q2: মাইক্রোসফটের কোন পণ্যগুলোর উৎপাদন স্থানান্তরিত হবে?
সারফেস ল্যাপটপ, এক্সবক্স কনসোল এবং কিছু সার্ভার পণ্যের উৎপাদন চীন থেকে সরানো হচ্ছে।
Q3: উৎপাদন নতুন কোথায় হবে?
নির্দিষ্ট স্থানের নাম এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি। তবে ভিয়েতনাম বা ভারতের মতো দেশগুলোকে সম্ভাব্য গন্তব্য হিসেবে ভাবা হচ্ছে।
Q4: এই স্থানান্তরের সময়সীমা কত?
রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৬ সালের মধ্যে এই উৎপাদন স্থানান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার লক্ষ্য রয়েছে।
Q5: অ্যাপলও কি একই পথ অনুসরণ করছে?
হ্যাঁ, অ্যাপলও ইতিমধ্যে ভিয়েতনাম ও ভারতে তার উৎপাদন কার্যক্রম বাড়িয়েছে, যা একটি সামগ্রিক Industry Trend-ই নির্দেশ করে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।