জুমবাংলা ডেস্ক : বগুড়ায় দেদারসে বিক্রি হচ্ছে মাছের জন্য ব্যবহার করা বরফে তৈরি নিম্নমানের শরবত। প্রচন্ড দাবদাহে শ্রমজীবী ও পথচারী মানুষেরা তৃষ্ণা মেটাতে নির্বিঘ্নে পান করছে এসব শরবত। এই শরবতে নিম্নমানের বরফ, সেকারিন, ঘনচিনি, রং ও বীট লবন মিশ্রণের কারণে মানুষের দেহে নানা সমস্যার ঝুঁকি বাড়ছে।
জানা গেছে, বগুড়া শহরে যত্রতত্র বরফ ও বীট লবন মিশ্রিত লেবু বা ইনস্ট্যান্ট পাউডার মিশ্রিত শরবত বিক্রি হচ্ছে দেদারসে। তীব্র দাবদাহে এই শরবত সাধারণ পথচারীদের কিছুটা স্বস্তি দিলেও মানুষের শরীরের নানা সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। শহরের সাতমাথা, বড়গোলার মোড়, জজকোর্ট, চারমাথা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, স্টেশনসহ প্রায় ৩০ থেকে ৩৫টি স্থানে প্রতিদিন এসব শরকত বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও পাড়া-মহল্লায় অসংখ্য শরবতের দোকান যার অধিকাংশই ভ্রাম্যমাণ। ছোট ভ্যানের ওপর একটি ফিল্টার, কিছু লেবুসহ নিম্নমানের বরফ এবং বিভিন্ন কোম্পানির ইনস্ট্যান্ট পাউডারের ছোট প্যাকেট দিয়েই সাজানো হয়েছে ভ্রাম্যমাণ এসব দোকান। শরবত তৈরিতে মানা হচ্ছে না কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি।
শরবত বিক্রেতারা যে গ্লাসে শরবত পরিবেশন করছে সেটি একজন পান করার পর ভালোভাবে পরিস্কার না করেই অন্যজনকে দিচ্ছে। আবার কোথাও কোথাও বিক্রি হচ্ছে বেলের শরবত। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে খোলা অবস্থায় ভেঙে রাখা হয়েছে বেলগুলি। ধুলোবালি মাখা এসব বেল দেওয়া হচ্ছে শরবতে।
শরবত বিক্রেতা রমজান আলী জানান, শরবত তৈরিতে বিভিন্ন কোম্পানির ইনস্ট্যান্ট পাউডার ব্যবহার করা হয়। এটা স্বাস্থ্যসম্মত কি না জানা নেই। এই গরমে শরবতের চাহিদা প্রচুর। তিনি আরও জানান, ফতেহ আলী বাজারের বরফকলগুলোতে দুই ধরনের বরফের পাটালী পাওয়া যায়। একটি মাছ সংরক্ষণ ও অপরটি খাবার জন্য। এর মধ্যে মাছ সংরক্ষণের জন্য তৈরি বরফের মূল্য তুলনামূলক অনেক কম।
রিক্সা চালক আব্দুস সাত্তার জানান, তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে শরবত খাচ্ছি। শরবত পান করে তৃষ্ণা এবং তুপ্তি দুটোই পাই। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে কি না তা জানা নেই। ভালো লাগে তাই খাই।
ফতেহ আলী বাজারের বরফকল মিলের কর্মচারী জানান, চেনা অচেনা অনেক মানুষ আমাদের বরফ মিলে এসে বরফ কিনে নিয়ে যায়। কি কাজের জন্য কিনছে তা জানা যায় না। আমাদের বরফ মিলে সাধারণত মাছ সংরক্ষণের জন্য আর খাবারের জন্য দুই ধরনের বরফ তৈরি করে করা হয়। মাছ ব্যবসায়ী পাশাপাশি কিছু অচেনা মানুষ আসে বরফ নিতে। তারা কি কাজে ব্যবহার করে এটা জানা নেই। তবে শুনেছি শহরের মধ্যে লেবু পানি বিক্রি করে এমন অনেকেই বরফ কিনে নিয়ে যাচ্ছে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার বগুড়া জেলা সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান জানান, বগুড়ায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মাছ সংরক্ষণের বরফ ও অনুমোদনহীন ইনস্ট্যান্ট পাউডার মিশিয়ে শরবত বিক্রির বিষয়টি আমাদেরও নজরে এসেছে। আমরা অচিরেই ব্যবস্থা নিবো।
সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ শফিউল আজম জানান, চলমান দাবদাহের সময়ে স্বাভাবিক ও নিরাপদ খাবার পানির বিকল্প নেই। গরমে অতিরিক্ত ঠাণ্ডা, বরফ পানি কিংবা অনিরাপদ পানি পান করলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে য়ায়। স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে বাইরের কৃত্রিম ফ্লেভারযুক্ত শরবত থেকে দূরে থাকায় উচিত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।