স্পোর্টস ডেস্ক : একসময় ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতেও স্পিন ঘূর্ণিজালে ব্যাটসম্যানদের কুপোকাত করতেন ভারতীয় স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন।
তবে এখন শুধু লাল বলেই ভেলকি দেখান ৩৩ বছর বয়সী এ স্পিনার।
সম্প্রতি নিজের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের গল্প ভারতীয় ক্রিকেটবিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজে জানিয়েছেন অশ্বিন।
সেখানে হতবাক হওয়ার মতো এক গল্প শুনিয়েছেন তিনি।
তিনি জানালেন, যে আঙুলের কারুকার্য দিয়েই ক্রিকেটবিশ্বে নাম লিখিয়েছেন, সেই আঙুলই কেটে নেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছিল তাকে। সেই সময় বেশ ভয় পেয়েছিলেন তিনি।
যদিও তা ছিল ক্রিকেটকে পেশা হিসেবে বেছে নেয়ার আগের কথা।
ভয়ঙ্কর সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা করতে গিয়ে অশ্বিন বলেন, ‘ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার অনেক আগের কথা। তখন আমার বন্ধুরা আমাকে টেনিস বলের টুর্নামেন্টে খেলতে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যেত। বিষয়টি আমার বাবা মোটেও পছন্দ করতেন না। তবে তার চোখ ফাঁকি দিয়েই খেলা চালিয়ে যেতাম।’
এর পর অশ্বিন বলেন, ‘এমনই এক টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলার ডাক পেলাম। চেন্নাইয়ে আমাদের সংস্কৃতি রয়েছে যে, টুর্নামেন্ট জেতাকে অনেক গর্বের মনে করা হয়। এ নিয়ে ব্যাপক উল্লাস-উন্মাদনা চলে। তাই ফাইনালে জিততে ভালো ভালো খেলোয়াড়দের বাছাই করা হয়।’
এর পর ভয়ঙ্কর সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেন অশ্বিন।
তিনি বলেন, ‘আমি সেদিন যেই ফাইনাল খেলতে মাঠের উদ্দেশে রওনা দেব, এমন সময়ে রয়্যাল এনফিল্ড মোটরসাইকেল চালিয়ে চার-পাঁচজন মানুষ আসে বাসায়। তারা সবাই দেখতে অনেক লম্বা ও পেশিবহুল ছিল। তারা এসে আমাকে বলল– ‘চলো তোমাকে নিয়ে যেতে এসেছি।’ আমি জিজ্ঞেস করি, ‘কে আপনারা?’ জবাবে ওরা বলল– ‘তুমি তো ম্যাচটাতে খেলছ, তাই না? আমরা তোমাকে নিতে এসেছি।’
অশ্বিন বলেন, ‘ওদের এমন কথায় আমি খুশি হয়ে যাই। বাহ! ওরা আমাকে নেয়ার জন্য গাড়িও পাঠিয়েছে! বিষয়টি বেশ উপভোগ করছিলাম। এর পর মোটরসাইকেলে চড়িয়ে অন্য একটি মাঠের কোনে নিয়ে এক চা-রুটির দোকানের পাশে থামান তারা।’
অশ্বিন বলেন, ‘ওরা আমাকে বসিয়ে ভাজিপোড়া অর্ডার দিয়ে বলে ‘খাও। ভয় পেও না।’
অশ্বিন বলেন, ‘আমি তখন এমন খাতিরযত্নে খুব খুশি হচ্ছিলাম। মাত্র ১৪-১৫ বছর বয়সী ছেলেদের যেমন বুদ্ধি থাকে। তবে আমার খেলতে যাওয়ার বেশ তাড়া ছিল। আমি দ্রুত ভাজিপোড়া খেয়ে তাদের বললাম ৩টা ৩০ বেজে গেছে। জলদি চলো। তখনই যে জবাব এলো তা আজও কানে বাজে আমার।’
তখন ওরা বলল– ‘কখনই না। আমরা আসলে তোমার প্রতিপক্ষ দলের লোক। তুমি যাতে না খেল, সেটি নিশ্চিত করতেই এসেছি আমরা।’
তাদের এমন কথা শুনে আমি ক্ষেপে গেলে মুহূর্তের মধ্যে পরিবেশ ভিন্নরকম হয়ে যায়। সেই সুঠামদেহীরা রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন।
তারা আমাকে শাসিয়ে বলেন, ‘বেশ আদর-যত্ন করেছি এতক্ষণ। তুমি যদি এখান থেকে মাঠে গিয়ে খেলতে নামো, তবে এটি নিশ্চিত থাকো যে, যেই আঙুল দিয়ে বল ঘোরাও তুমি, তোমার হাতের সেই আঙুলগুলোর একটাও আর থাকবে না।’
প্রসঙ্গত ২০১০ সালে ভারতীয় দলে অভিষেক ঘটে তার। এর পর টানা ৭০টি টেস্ট ও ১১১ ওয়ানডে ও ৪৬টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন তিনি। ওয়েলিংটনে আগামী শুক্রবার থেকে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের দুই টেস্ট সিরিজেও মাঠে নামবেন অশ্বিন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।