স্পোর্টস ডেস্ক: ২০২০ সালে বাংলাদেশের হয়ে আবার মাঠে নামার কথা ছাড়া এই মুহূর্তে আর কিছুই ভাবছেন না নিষেধাজ্ঞায় থাকা বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পোষ্টে এমনটাই জানিয়েছেন এই অধিনায়ক। তার এই পোস্টটি এ পর্যন্ত ৮ হাজার বার শেয়ার করা হয়েছে এবং ২১ হাজার কমেন্ট পড়েছে।
সন্দেহভাজন এক ক্রিকেট বুকির সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জের ধরে বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে দু’বছরের জন্য সব ধরণের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করা হয় গত ২৯শে অক্টোবর।
আইসিসিরি দুর্নীতি-বিরোধী নিয়ম বা অ্যান্টি করাপশন কোড লংঘনের তিনটি অভিযোগ সাকিব আল হাসান স্বীকার করে নেয়ার পর এই সিদ্ধান্তের কথা জানায় আইসিসি।
আইসিসির ওয়েবসাইটে জানানো হয়, ম্যাচ ফিক্সিং-এর প্রস্তাব পাওয়ার পর সেটা গোপন করার অভিযোগে তাকে এই সাজা দেওয়া হয়েছে।
সাকিব আল হাসান বলেন, “২০২০ সালে বাংলাদেশের হয়ে আবার মাঠে নামার কথা ছাড়া এই মুহূর্তে আর কিছুই ভাবছিনা আমি।”
তিনি বলেন, “শেষ কয়েকদিনে দেশের হয়ে মাঠে নামার গুরুত্ব আমি আরও ভালোভাবে অনুধাবন করতে পেরেছি৷”
“ততদিন পর্যন্ত আপনাদের দোয়া আর প্রার্থনায় আমাকে রাখবেন বলেই আশা করছি,” মিস্টার হাসান বলেন।
সাকিব আল হাসানের সাজার জেরে গত কয়েক দিনে তার প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমর্থন জানিয়েছেন অসংখ্য সমর্থক, ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা।
নিজের পোস্টে সেই ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি দুঃসময়ে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
“যারা এই কঠিন সময়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে এগিয়ে এসেছেন, সবাইকে ধন্যবাদ।
এই খারাপ সময়ে সকল ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষী যে নিঃস্বার্থ সমর্থন, ভালোবাসা নিয়ে আমার এবং আমার পরিবারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন তাতে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি,” তিনি বলেন।
সাকিবের উপর আরোপিত দুই বছরের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে এক বছর স্থগিত নিষেধাজ্ঞা।
অর্থাৎ, আইসিসি বলছে, আগামী এক বছর তিনি খেলতে পারবেন না, কিন্তু তিনি যদি সাজার সব শর্ত মেনে চলেন তাহলে তিনি ২০২০ সালের ২৯শে অক্টোবর থেকে মাঠে ফিরে আসতে পারবেন।
সাকিব আল হাসানের প্রতি এই শাস্তির বিরুদ্ধে সোশাল মিডিয়াতে তার প্রতি সমর্থনের পাশাপাশি আইসিসি ও বিসিবির প্রতি ক্ষোভও প্রকাশ করেন অনেকে।
এর প্রেক্ষিতে সাকিব আল হাসান তার পোস্টে ক্ষুব্ধ সব ভক্ত এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের ধৈর্য ধরে শান্ত থাকার অনুরোধ করেন।
তিনি বলেন, “আমার ওপর শাস্তি আরোপিত হওয়ায় ক্ষুব্ধ সকল ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের ধৈর্য ধরে শান্ত থাকার অনুরোধ করছি”।
তিনি বলেন, “আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আইসিসি আকসুর পুরো তদন্তটাই ছিলো অত্যন্ত গোপনীয় এবং আমার উপর শাস্তি আরোপিত হওয়ার মাত্র কয়েক দিন আগে বিসিবিকে আমি এ ব্যাপারে জানাই। দেরিতে জানলেও এমন পরিস্থিতিতে বিসিবিই আমাকে সবচেয়ে বেশি সমর্থন দিয়েছে। তাই, বোর্ডের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।”
সাকিবের নেতৃত্বে ক্রিকেট খেলোয়াড়দের ধর্মঘটের কয়েক দিন পর শাস্তির এই ঘোষণা আসার কারণে বিসিবির উপরও ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে। এ বিষয়টিও নিজের পোস্টে পরিষ্কার করেছেন সাকিব আল হাসান।
”যারা এই কঠিন সময়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে এগিয়ে এসেছেন, সবাইকে ধন্যবাদ। মনে রাখতে হবে, পুরো ব্যাপারটিই একটি সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই সম্পন্ন হচ্ছে। যেহেতু ওই সময়ে আমি আমার দায়িত্ব ঠিকঠাক পালন করতে পারিনি তাই আমিও আমার ওপর আরোপিত শাস্তি মাথা পেতে নিয়েছি।”
২০১৮ সালে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের মধ্যে ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজ ও ২০১৮ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে দুর্নীতির প্রস্তাব দেয়া হয় সাকিব আল হাসানকে।
সাকিব সেটা যথাযথ কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ আইসিসির এ্যান্টি করাপশন ইউনিটকে জানায়নি।
সাকিব আল হাসানের এক বছরের নিষেধাজ্ঞা শেষ হবে ২০২০ সালের ২৯শে অক্টোবর। তার পরের এক বছর স্থগিত দণ্ড। ফলে ২০২০ সালেই তিনি খেলায় ফিরতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
এই সময়ের মধ্যে তিনি খেলতে পারবেন না মোট ১৩টি টেস্ট ম্যাচ, ৩টি ওয়ানডে ম্যাচ ও ২০টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ।
অর্থাৎ মোট ৩৬টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। যার সবকটি থেকেই বাদ পড়ছেন সাকিব।
২০২০ সালের অক্টোবরে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ৩ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ আছে এবং একই মাসে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজিত হবে অস্ট্রেলিয়ায়।
অক্টোবর মাসের ১৮ তারিখ শুরু হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সেখানে সাকিব আল হাসান স্কোয়াডে থাকতে পারবেন না, এর কারণ তার নিষেধাজ্ঞা শেষ হবে ২৯শে অক্টোবর।
যদি কোনো ক্রিকেটার কোনো কারণে খেলতে না পারে সেক্ষেত্রে সাকিব আল হাসান দলে ঢুকতে পারেন, কিন্তু কার্যত সেই সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। সূত্র: বিবিসি বাংলা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।