ওসমান গনি মিয়ার কাছে টাকা ধার চাওয়ার পর না দিয়ে উল্টো বকাঝকা করায় অপমান আর ক্ষোভে পরিবারের সবাইকে হত্যার পরিকল্পনা করে সাগর।
রোববার (১৯ জুলাই) বিকেলে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার ব্রাহ্মণবাড়ী এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত মূল আসামি সাগর আলীকে (২৭) গ্রেফতার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ১২ এর সদস্যরা।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার সাগর র্যাবের কাছে স্বীকার করে জানায়, নিহত ওসমান গনি মিয়া সুদের ব্যবসা করতো। তার সাথে (সাগরের) পূর্ব থেকেই সুদের লেনদেন ছিলো। লেনদেনের এক পর্যায়ে কয়েকবার সুদের টাকা দিতে ব্যর্থ হয় সাগর। পরে গত মঙ্গলবার গনি মিয়ার কাছে দুইশত টাকা চাইতে গেলে সাগরকে বকাঝকা করে তাড়িয়ে দেয়। এতে অপমান বোধ করে সে। পরে সাগর তার এক সহযোগীকে নিয়ে গনি মিয়া ও তার পরিবারকে হত্যা এবং টাকা পয়সা ও সম্পদ লুণ্ঠনের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, সাগর তার সহযোগীকে নিয়ে বুধবার দিনগত রাত আনুমানিক ১০টার সময় গনির বাসায় যায়। এর আগে সাগরের সহযোগী বাজার থেকে চেতনানাশক ওষুধ কিনে নিয়ে যায়। পরে সাগর তার সহযোগীকে সাথে নিয়ে গনি মিয়ার বাসায় যায়।
সাগর পূর্ব পরিচিত থাকায় বাসায় প্রবেশের অনুমতি পায় সে। পরে আকস্মিকভাবে চেতনা নাশক ব্যবহার করে গনি মিয়াকে অচেতন করে। পরিবারে সবাই ঘুমিয়ে থাকায় অচেতন করতে সহজ হয় তাদের। বাসায় ব্যবহৃত কুড়াল ও তাদের সাথে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে বাসার সবাইকে ঠান্ডা মাথায় কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
জিজ্ঞাসাবাদে সাগর আরও জানায়, বাসা থেকে বের হওয়ার আগে বাসার মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে বাসার বাহির থেকে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যায়। টাঙ্গাইল র্যাব-১২ সিপিসি ৩ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর আবু নাঈম মোহাম্মদ তালাত জানান, সাগরের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, পরবর্তীতে তার বোনের বাড়ি ব্রাক্ষ্মনবাড়ি (মজিদ চালা) থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো চাকু ও লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার করা হয়। অপর সহযোগীকে গ্রেফতার করতে র্যাব-১২ এর অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার সকালে মধুপুর পৌরসভার মাস্টারপাড়া এলাকার নিজ বাড়ি থেকে ব্যবসায়ী ওসমান গনি মিয়া, তার স্ত্রী তাজিরন বেগম, ছেলে কলেজ ছাত্র তাইজুল ও মেয়ে শিশু সাদিয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। শুক্রবার রাতেই গনি মিয়ার বড় মেয়ে সোনিয়া বেগম বাদি হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মধুপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। শনিবার মরদেহ টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়। বিকেলে মরদেহ ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে আব্দুল গনির পৈত্রিক বাড়ি মধুপুরের গোলাবাড়িতে তাদের দাফন করা হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।